ঈদ শেষ হতেই শুরু সংঘর্ষ। আফগানিস্তানে সেনা ও তালেবানের মধ্যে। সেনার দাবি, ২১ জন তালেবানের মৃত্যু হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ঈদের জন্য তিনদিনের যুদ্ধবিরতি ছিল। সময়সীমা শেষ হতেই রোববার থেকে দক্ষিণ আফগানিস্তানের হেলমন্দ প্রদেশে আবার শুরু হয়েছে সেনা ও তালেবানের লড়াই। হেলমন্দের সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তালেবানই যুদ্ধবিরতি ভেঙে সেনাকে আক্রমণ করেছে।
কিন্তু তালেবানের মুখপাত্র জাবিবুল্লাহ মুজাহিদ এএফপি-কে বলেছেন, ''তালেবানকে কেউ যেন দোষ না দেয়। সেনাই প্রথমে অপারেশন শুরু করেছে।''
সেনার দাবি, এখনো পর্যন্ত ২১ জন তালেবান মারা গেছেন।
ঈদের জন্য তিনদিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল। শনিবার সেই সময়সীমা শেষ হয়। তারপর রোববার থেকেই আবার সংঘর্ষ শুরু হয়েছে।
তবে ঈদের দিনেও আফগানিস্তানে সহিংসতা হয়েছে। কাবুলের ঠিক উত্তরে একটি মসজিদে বোমা বিস্ফোরণ হয়। ১২ জন মারা যান। ইসলামিক স্টেট বা আইএস এর দায় স্বীকার করেছে। তারা কাবুলে বেশ কিছু ইলেকট্রিক সাব স্টেশনও ধ্বংস করেছে বলে জানিয়েছে।
কাবুলে মেয়েদের স্কুলে বিস্ফোরণ, নিহত অন্তত ৬৮ জন
কাবুলে শনিবার মেয়েদের স্কুলের সামনে একের পর এক বিস্ফোরণ হয়েছে। মৃত বহু ছাত্রী। শোকের ছায়া কাবুলে।
ছবি: REUTERS
স্কুলের বাইরে বিস্ফোরণ
পশ্চিম কাবুলে একটি মেয়েদের স্কুলের সামনে একের পর এক বিস্ফোরণ। তার ফলে মারা গেছেন অন্ততপক্ষে ৬৮ জন। তার মধ্যে অনেকেই স্কুলের ছাত্রী। আহত অন্ততপক্ষে একশ। নিখোঁজ বহু।
ছবি: Haroon Sabawoon/AA/picture alliance
ভয়ংকর ঘটনা
গত এক বছরের মধ্যে এমন ভয়ংকর আক্রমণ হয়নি। তাও একটি স্কুলের সামনে। এই ঘটনার দায় এখনো পর্যন্ত কেউ স্বীকার করেনি।
ছবি: Haroon Sabawoon/AA/picture alliance
তালেবানের অস্বীকার
তালেবান জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে এই ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের দাবি, ২০২০-র ফেব্রুয়ারিতে অ্যামেরিকার সঙ্গে চুক্তির পর তারা কাবুলে কোনো সহিংসতা করেনি। ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অ্যামেরিকা ও ন্যাটোর বাহিনী আফগানিস্তান ছাড়বে। তার আগে এই ঘটনা যথেষ্ট চিন্তার।
ছবি: Rahmat Gul/AP Photo/picture alliance
পাহাড়ের উপর শহিদ কবরস্থানে
রোববার সকাল থেকে কবর দেওয়ার কাজ শুরু হয়। পাহাড়ের উপর কবরস্থানে নিয়ে আসা হয় একের পর এক দেহ। এই কবরস্থানের নাম হলো 'শহিদ কবরস্থান'। এর আগে হাজারা সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ হয়েছিল। তখন মৃতদের এখানেই কবর দেয়া হয়।
ছবি: REUTERS
খোঁজ চলছে
একদিকে যখন মরদেহগুলি কবরস্থ করা হচ্ছে, অন্যদিকে নিখোঁজদের খোঁজ করছেন আত্মীয়রা। মোহাম্মদ তাকি বিস্ফোরণের পরই ঘটনাস্থলে যান। সংবাদসংস্থা এএফপি-কে তিনি বলেছেন, চারপাশে তালগোল পাকানো দেহ। সে এক ভয়ংকর দৃশ্য।
ছবি: Mohammad Ismail/REUTERS
প্রতিবাদ-বিক্ষোভ
এই স্কুলের ছাত্রীরা শিক্ষক ও পরিকাঠামোর অভাবের জন্য কয়েকদিন আগে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দা মির্জা হুসেন জানিয়েছেন, সেখানেই একের পর এক বিস্ফোরণ হলো।
ছবি: Mohammad Ismail/REUTERS
আগেও আক্রান্ত হাজারা সম্প্রদায়
হাজারা সম্প্রদায় হলো আফগানিস্তানে শিয়া জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। এর আগে ২০১৮ ও ২০২০ সালে তারা আক্রান্ত হয়েছিল। দায় স্বীকার করেছিল আইএসের সহযোগী সংস্থা। তখন স্কুল, ক্লাব ও হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ আক্রান্ত হয়েছিল।
ছবি: REUTERS
7 ছবি1 | 7
কাতারে আলোচনা
সরকার ও তালেবানের মধ্যে আলোচনাও আবার শুরু হয়েছে। দোহায় সপ্তাহান্তে আলোচনা হয়েছে। তালেবান টুইট করে জানিয়েছে, দুই পক্ষই আলোচনা চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছে।
অ্যামেরিকা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই তাদের বাকি সেনা আফগানিস্তান থেকে দেশে ফিরবে। সেই সঙ্গে ন্যাটোর দেশগুলির সেনাও আফগানিস্তান ছাড়বে। শুক্রবারই কান্দাহারে একটি বিমানঘাঁটি আফগান সেনার হাতে তুলে দিয়েছে অ্যামেরিকার সেনা। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট অবশ্য দাবি করেছেন, দেশরক্ষার ক্ষমতা সেনার আছে।
চীনের উদ্বেগ
চীন শনিবার জানিয়েছে, আফগানিস্তান থেকে অ্যামেরিকা তাড়াহুড়ো করে সেনা সরিয়ে নিচ্ছে। তারা জাতিসংঘকে আরো বড় দায়িত্ব নেয়ার আবেদন জানিয়েছে। চীনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীকে বলেছেন, তাড়াহুড়ো করে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের প্রভাব এই অঞ্চলে পড়বে। এর ফলে আঞ্চলিক স্থিতাবস্থা নষ্ট হতে পারে।