আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যায় মৃত ২০০-এর বেশি: জাতিসংঘ
১১ মে ২০২৪জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, শুধুমাত্র বাঘলানেই ২০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মোহাম্মদ ফাহিম সাফি, আইওএম-এর জরুরি প্রতিক্রিয়ার নেতৃত্বদানকারী জাতীয় প্রোগ্রাম অফিসার, সরকারি পরিসংখ্যান উল্লেখ করে শনিবার বলেন, ''বাঘলানি জাদিদ জেলায় দেড় হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা ধ্বংস হয়েছে এবং "১০০ জনেরও বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছে।"
শনিবার অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আফগানিস্তানের উত্তরে অবস্থিত বাঘলান প্রদেশে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে তৈরি হওয়া ফ্লাশ ফাডে পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়েছে। এক তালেবান কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, এর ফলে একাধিক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।
বাঘলানের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রাদেশিক পরিচালক হেদায়াতুল্লাহ হামদর্দ বলেছেন, মৃতের সংখ্যা প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছে। এখনো "অনেক লোক নিখোঁজ হওয়ায় এই সংখ্যা বাড়তে পারে" বলে জানা গিয়েছে।
বার্তাসংস্থা এএফপিকে হামদর্দ বলেছিলেন, মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২। মৃতদের মধ্যে মূলত নারী এবং শিশুরা রয়েছে। তার কথায়, মৃতের সংখ্যা "সম্ভবত বাড়বে।"
তিনি বলেন, বন্যার কারণে কিছু জেলায় সম্পত্তি ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সার্বিক পরিস্থিতি কেমন
রাজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক তালেবানের মুখপাত্র আবদুল্লাহ জনান সাইকের মতে, রাজধানী কাবুল ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি।
খাদ্য, তাঁবু, কম্বল এবং অন্যান্য সাহায্যে নিয়ে উদ্ধারকারী দলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় রওনা দিয়েছে।
হামদর্দ সাংবাদিকদের বলেন, জরুরি পরিষেবার কর্মীরা "কাদামাটি এবং ধ্বংসস্তূপের তলায় থাকা ব্যক্তিদের খোঁজে জাতীয় সেনাবাহিনী এবং পুলিশের নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় কাজ করছে।"
তালেবান সরকারের আরেক মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ আশ্বাস দেন, কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেবে।
শনিবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ পোস্ট করেছেন, "শতশত মানুষ এই বিপর্যয়ে প্রাণ হারিয়েছে। একাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।''
এক্স প্ল্যাটফর্মে তিনি লেখেন, "মৃত ও আতদের পরিবারের প্রতি গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করেছে সরকার। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষকে উদ্ধারকাজে কোনো ঘাটতি না থাকার না নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।"
সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, রাস্তায় ঘোলা জলের বিশাল স্রোত বইছে। কালো এবং সাদা কাপড়ে ঢাকা মৃতদেহের ছবিও দেখা গিয়েছে।
বন্যার কারণে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে আফগানিস্তানে একাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কর্তৃপক্ষের মতে, প্রায় কোনো অঞ্চলই বন্যার হাত থেকে সম্পূর্ণভাবে রেহাই পায়নি।
বন্যার কারণে হাজার হাজার আফগান নাগরিকের এখনো মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।
আরকেসি/এআই (এপি, এফপি)