আত্মঘাতী হামলায় সাত সেনার মৃত্যু হয়েছিল। তারপর আফগানিস্তানে পাক বিমান হামলায় আটজন মৃত বলে তালেবান জানিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তালেবান সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানের বিমান হামলায় তিনজন বাচ্চা ও পাঁচ নারীর মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সময় ভোর তিনটের সময় পাকিস্তান সীমান্তের কাছে দুইটি জায়গায় বিমান হামলা হয়।
ইসলামাবাদে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিমান হামলার কথা স্বীকার করেছে। তারা বলেছে, পাকিস্তানি তালেবানের গোষ্ঠীগুলিকে টার্গেট করা হয়েছিল। তাদের কাছে গোয়েন্দারা নির্দিষ্ট তথ্য দিয়েছিল। তার ভিত্তিতে এই আক্রমণ করা হয়।
গুলিবিনিময়
পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা এপি-কে জানিয়েছেন, পাকিস্তানি তালেবানের সঙ্গে আফগানিস্তানের তালেবানের সম্পর্ক আছে।
তালেবান সরকারের মুখপাত্র এই বিমান হামলার নিন্দা করে বলেছেন, এটা আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত। তিনি বলেছেন, এর প্রতিক্রিয়া ভালো হবে না।
একটি পৃথক বিবৃতিতে আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই বিমান হামলার প্রতিক্রিয়ায় সীমান্তে পাকিস্তানের সেনাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে।
পাকিস্তানে চলছে আফগানদের দেশে ফেরানো
আফগানিস্তানে এখন আর কোনো যুদ্ধ নেই সেখানে৷ তাই অনেক বছর বসবাসের ফলে প্রায় স্থায়ী হয়ে যাওয়া আফগানদেরও ফেরত পাঠাচ্ছে পাকিস্তান সরকার৷ ছবিঘরে দেখুন অনিচ্ছুক আফগানদের স্বদেশে ফেরা...
ছবি: Akhtar Soomro/REUTERS
যাদের ছাড়তে হচ্ছে পাকিস্তান
পুলিশ বলছে, তার পরিবারেরও পাকিস্তানে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় বৈধ কাগজ-পত্র নেই, তাই ১০ বছর বয়সি মাদ্রাসাছাত্রী তুরিয়াকেও ফিরতে হচ্ছে স্বদেশে৷ বাবা-মায়ের সঙ্গে তাকেও ধরে এনে আটক করে রেখেছিল করাচি পুলিশ৷ আটকাবস্থা থেকে তুরিয়া এখন মুক্ত, তবে পাকিস্তানের চেনা পরিবেশে থাকার স্বাধীনতা তার নেই, ‘অচেনা’ স্বদেশে ফেরার জন্য বাসে উঠে বসেছে সে৷
ছবি: Akhtar Soomro/REUTERS
হালিমার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন
নওশেরা জেলার আযাখেল শহরে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর কার্যালয়ের সামনে সাত মাস বয়সি বোনকে কোলে নিয়ে হালিমার অপেক্ষা৷ এই দুই শিশুকেও ছাড়তে হবে পাকিস্তান, যেতে হবে আফগানিস্তান৷
ছবি: Fayaz Aziz/REUTERS
কিছুই যায় না ফেলা
পাকিস্তানে বসবাসের জন্য বৈধ কাগজ-পত্র না থাকায় তাদের ফিরে যেতে হবে- এ কথা জানার পর থেকে দীর্ঘদিন ধরে তিল তিল করে জমানো সব জিনিস গুছিয়ে রেখেছিলেন বোরকা পরা এই নারী৷ সব নিয়ে ট্রাকে উঠে বসেছেন তিনি৷ গত ৩ নভেম্বরের ছবি৷
ছবি: Fayaz Aziz/REUTERS
বিদায়ের আগে এক পলক
নওশেরা জেলার আযাখেল শহরে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর কার্যালয়ের সামনে থেকে আফগানিস্তানে যাচ্ছে গাড়ি৷ সেই গাড়িতে চড়ে আফগানিস্তান যাওয়ার আগে জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্য একবার দেখে নিচ্ছে এক শিশু৷
ছবি: Fayaz Aziz/REUTERS
সামনে তার অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ
গত ৩ নভেম্বর তোলা এ ছবিটিও নওশেরা জেলার আযাখেল শহরের ইউএনএইচসিআর কার্যালয়ের সামনের৷ আফগানিস্তানগামী এক ট্রাক থেকে নামছে এক কিশোর৷
ছবি: Fayaz Aziz/REUTERS
আফগানদের ক্ষোভ
পাকিস্তান সরকারের সিদ্ধান্তে আফগানরা অসন্তুষ্ট, ক্ষুব্ধ৷ করাচি থেকে আফগানিস্তানে ফেরার আগে বাসের জানালা থেকে সংবাদ মাধ্যমকে সেসব ক্ষোভের কথাই জানাচ্ছেন কয়েকজন৷
ছবি: Akhtar Soomro/REUTERS
বেরহাম খানের সর্বনাশ
৭২ বছর বয়সি বেরহাম খানের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে, এই বয়সে চার সন্তানকে নিয়ে আফগানিস্তানে গিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করবেন কীভাবে ভেবেই পাচ্ছেন না তিনি!
ছবি: Akhtar Soomro/REUTERS
7 ছবি1 | 7
এপি পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, আফগান তালেবানের গুলিতে চারজন গ্রামবাসী আহত হয়েছেন। বাকি গ্রামবাসীকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আর সীমান্তে যে গুলি চলেছে, পাকিস্তান তার জবাবও দিয়েছে।
পাক প্রেসিডেন্টের বক্তব্য
গত শনিবার পাকিস্তান সেনার উপর আত্মঘাতী হামলা হয়। তাতে সাতজন সেনা মারা যান। তাদের শেষকৃত্যে যোগ দিয়ে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি বলেছেন, এই আক্রমণের উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে। শহিদ সেনার রক্ত ব্যর্থ হবে না।
শনিবারের আত্মঘাতী হামলার দাবি করেছে জৈশ-ই-মুহাম্মদ গোষ্ঠী। কিন্তু পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের দাবি, এটা মূলত নিষিদ্ধ তেহরিক ই তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপি-র শাখা সংগঠন।