আফগানিস্তানে পুননির্বাচিত হলেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি
২২ ডিসেম্বর ২০১৯
সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি৷ তাঁর জয় নিয়ে তালেবানদের কোনো প্রতিক্রিয়া এখনও জানা যায়নি৷
বিজ্ঞাপন
কয়েক দফা পেছানোর পর ২৮ সেপ্টেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করেছে আফগানিস্তানের নির্বাচন কমিশন৷ ৫০ দশমিক ছয় ভাগ মোট পেয়েছেন গনি৷ আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ পেয়েছেন ৩৯ দশমিক পাঁচ-দুই ভাগ ভোট৷ স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের প্রধান হাওয়া আলম নুরিস্তানি সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান৷
নির্বাচনের পরই জাতীয় ঐক্যের সরকারের প্রধান নির্বাহী আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ কারচুপি ও কারিগরি ত্রুটির অভিযোগ এনেছিলেন৷ এখন নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখ্যানের করে বিবৃতি দিয়েছে তার কার্যালয়৷ এর ফলে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশে আরও কয়েক সপ্তাহ বিলম্ব হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷
যদি এই ফলাফলই শেষ পর্যন্ত বজায় রাখা হয় তাহলে দ্বিতীয়বারের দেশটির প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন গনি৷ এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনের পরও দেশটিতে একই সংকট দেখা দেয়৷ সেবার শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের কোনো ফলই ঘোষণা করা হয়নি৷ যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় তখন ক্ষমতা ভাগাভাগিতে সম্মত হন দুই প্রতিদ্বন্দ্বী গনি এবং আব্দুল্লাহ৷
এফএস/জেডএ (এএফপি, এপি, ডিপিএ, রয়টার্স)
গত ৩০ সেপ্টেম্বরের ছবিঘরটি দেখুন...
আঙুল কেটেও থামানো যায়নি তাঁকে
২০১৪ সালে ভোট দেয়ায় শফিউল্লাহ শফির একটি আঙুল কেটে নিয়েছিল তালেবান৷ তারপরও গত শনিবার আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন তিনি৷
ছবি: Reuters/S. Safi
‘ওটা তো শুধু একটা আঙুল ছিল’
২০১৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেয়ায় শফিউল্লাহ শফির ডান হাতের একটি আঙুল কেটে নিয়েছিল তালেবান৷ তাই তাঁর পরিবার এবার তাঁকে ভোট দিতে যেতে নিষেধ করেছিল৷ কিন্তু তারপরও ভোট দিয়েছেন শফি৷ কারণ হিসেবে রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, ‘‘ওটা তো শুধু একটা আঙুল ছিল৷ আমার সন্তান ও দেশের ভবিষ্যতের প্রশ্নে পুরো হাত কেটে নিলেও আমি বসে থাকবো না৷’’
ছবি: Reuters/S. Safi
সবাই শফির মতো নয়
তবে শফির মতো সবাই নন৷ তাই তো শনিবার অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এর আগের যে-কোনো বারের তুলনায় কম ভোট পড়েছে৷ নির্বাচন কমিশনের ধারনা, এবার মাত্র ২৫ শতাংশ ভোট পড়ে থাকতে পারে৷ এর দুটি কারণের কথা বলছেন বিশ্লেষকরা৷ একটি, তালেবানের হুমকি, অন্যটি কম প্রচারণা৷
ছবি: Getty Images/AFP/H. Hashimi
তালেবানের হুমকি
গত ৭ সেপ্টেম্বর তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি আলোচনা ভেঙে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প৷ ফলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিল তালেবান৷ ভোটারদের ভয়ভীতিও দেখানো হয়েছিল৷ ২০১৪ সালের নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য অন্তত ছয়জনের আঙুল কেটে নিয়েছিল তালেবান৷
ছবি: picture-alliance/Xinhua/E. Waak
কয়টি হামলা?
তালেবান বলছে তারা নির্বাচনের দিন ৫৩১টি হামলা করেছে৷ তবে সরকার বলছে হামলার সংখ্যা ছিল ৬৮৷ আর ‘আফগানিস্তান অ্যানালিস্টস নেটওয়ার্ক’ বলছে, নির্বাচনের দিন চারশ’র বেশি হামলা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Wali Sarhadi
হতাহতের সংখ্যা
সরকারি হিসেবে নিরাপত্তা বাহিনীর পাঁচ সদস্যের নিহত হওয়ার কথা জানানো হয়েছে৷ তবে অতীতে দেখা গেছে, ভোটের দিন হতাহতের তথ্য প্রথমে কমিয়ে দেখাতে চায় কর্তৃপক্ষ৷ পরে প্রকৃত তথ্য জানানো হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Hussain
প্রচারণা কম
দু দু’বার নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে শনিবার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি আলোচনা চলায় এবারও ২৮ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল৷ ৭ সেপ্টেম্বর সেই আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পরই কেবল প্রার্থীরা শনিবার ভোটগ্রহণের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পেরেছিলেন৷ ফলে প্রচারণার সময় কম পেয়েছেন তাঁরা৷ ভোটগ্রহণের দিন কম ভোটার উপস্থিতির একটি কারণ হিসেবে এটিকেও সামনে নিয়ে আসছেন বিশ্লেষকরা৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Hussain
কবে ফল?
১৯ অক্টোবরের আগে ফল আশা করা হচ্ছে না৷ বিজয়ী হতে হলে কোনো প্রার্থীকে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হবে৷ তা না হলে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে নভেম্বের মাসে আবারও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷
ছবি: Reuters/O. Sobhani
যাঁদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা
স্থানীয় গণমাধ্যগুলো বর্তমান রাষ্ট্রপতি আশরাফ গনি এবং তাঁর প্রধান নির্বাহী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দিয়েছে৷ এই দুজন তথাকথিত জাতীয় ঐক্যমত্যের সরকারের অংশ হিসেবে গত পাঁচ বছর ধরে দেশ পরিচালনা করছেন৷