আফগানিস্তানে ভারতীয় কনস্যুলেটে সন্ত্রাসী হামলার জেরে দু'জন নিহত এবং ছয়জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে৷ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিরাপত্তাকর্মীদের গোলাগুলি এখনো চলছে৷ তবে কনস্যুলেটের সবাই অক্ষত আছেন৷
বিজ্ঞাপন
রোববার রাতে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ বলখের মাজার-ই শরিফ শহরে ভারতীয় কন্যুলেটে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়৷ কনস্যুলেটের ভেতরে সবাই তখন সাফ ফুটবল ফাইনালের ভারত-আফগানিস্তান ম্যাচ দেখছিল৷ রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা৷ তখনই অতর্কিত হামলা চালিয়ে কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালায় সন্ত্রাসীরা৷ ফাইনালে ভারত আফগানিস্তানকে হারালেও কনস্যুলেটের সবাই সে জয় উদযাপনের সুযোগ পাননি৷
নিরাপত্তা কর্মীদের বাধার মুখে সন্ত্রাসীরা কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি৷ পরে আফগান পুলিশ এবং বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও সেখানে পৌঁছায়৷
ধারণা করা হচ্ছে, হামলার প্রস্তুতি নিয়ে কনস্যুলেট ভবনের পাশের এক বাড়িতে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল সন্ত্রাসীরা৷ আঁধার নামার সঙ্গে সঙ্গেই তারা সেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে হামলা শুরু করে৷
শেষ খবর অনুযায়ী, দূতাবাসের সবাই এখনো নিরাপদেই আছেন, তবে গোলাগুলি চলছে৷
ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, হামলায় এ পর্যন্ত এক সাধারণ নাগরিক ও পাঁচ নিরাপত্তা কর্মীসহ মোট পাঁচজন আহত হয়েছে৷ কোনো কোনো সংবাদমাধ্যমের খবরে এ পর্যন্ত দু'জন হামলাকারীর নিহত হওয়ার খবরও এসেছে৷
পাঞ্জাবের পাঠানকোটের বিমান ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার পরপরই আফগানিস্তানে ভারতীয় কনস্যুলেটে হামলা চালানো হলো৷ কোনো জঙ্গি সংগঠন এখনো হামলার দায়িত্বস্বীকার করেনি৷
এসিবি/ডিজি (রয়টার্স)
আফগানিস্তানে জীবন ও যুদ্ধ
দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তানের ছবি তুলছেন ইরানের ফটোগ্রাফার মাজিদ সাঈদি৷ ছবিগুলো অনেক আন্তর্জাতিক পুরস্কারও এনে দিয়েছে তাঁকে৷ চলুন তাঁর ক্যামেরার চোখে দেখা যাক আফগানিস্তানকে৷
ছবি: Majid Saeedi
খেলনা!
কাবুলে যু্দ্ধাহতদের জন্য তৈরি একটা নকল হাত নিয়ে খেলছে দুই কিশোরী৷ এমন কিছু ছবিই তেহরানের মাজিদ সাঈদিকে এনে দিয়েছে বেশ কিছু পুরস্কার৷
ছবি: Majid Saeedi
ছবিই বলে হাজার কথা
১৬ বছর বয়স থেকে ছবি তুলছেন মাজিদ৷ মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের কারণে মানবিক বিপর্যয়ের দিকেই তাঁর সমস্ত মনযোগ৷ জার্মানির ডেয়ার স্পিগেল, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমসের মতো ম্যাগাজিন এবং আন্তর্জাতিক পত্রিকায় ছাপা হয় তাঁর তোলা ছবি৷
ছবি: Majid Saeedi
আফগানিস্তানের শিশুরা
ডিডাব্লিউকে সরবরাহ করা মাজিদের ছবির অনেকগুলোতেই ফুটে উঠেছে আফগান শিশুদের জীবনে যুদ্ধের প্রভাব৷ এ ছবিটি যুদ্ধের কারণে হাত হারানো এক আফগান শিশুর৷
ছবি: Majid Saeedi
মাদকের অভিশাপ
আফগানিস্তানের খুব বড় এক সমস্যা মাদক৷ বলা হয়ে থাকে বিশ্বের শতকরা ৯০ ভাগ মাদকদ্রব্যই নাকি উৎপন্ন হয় আফগানিস্তানে৷ বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আফিম হয় দেশটিতে৷ দেশের অনেক নাগরিক আফিমসেবী৷ জাতিসংঘের দেয়া তথ্য অনুযায়ী আফগানিস্তানের অন্তত তিন লক্ষ শিশু নিয়মিত আফিম সেবন করে৷
ছবি: Majid Saeedi
রোল কল
কাবুলের এক অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ শুরুর আগে ক্যাডেটদের রোল কল চলছে৷ জার্মান সেনাবাহিনী ‘বুন্ডেসভেয়ার’ আফগান নিরাপত্তাকর্মীদের অনেক আগে থেকেই প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছিল৷ প্রশিক্ষণের লক্ষ্য, আফগান সেনাবাহিনী এবং পুলিশকে দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় আত্মনির্ভরশীল করে তোলা৷ ২০১৪ সালের শেষেই অবশ্য আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সেনা সদস্যদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে জার্মানি৷
ছবি: Majid Saeedi
ভয়ংকর শৈশব
স্কুলে লেখাপড়া করতে যাওয়ার সুযোগ শিশুদের কমই মেলে৷ স্কুলে গেলে নগণ্য কারণেও হতে হয় শিক্ষকের কঠোর শাসনের শিকার৷ তা সহ্য করেও পুরো সময় থাকা হয়না, পরিবারের জন্য টাকা রোজগার করতে আগেভাগেই স্কুল থেকে বেরিয়ে পড়তে হয় তাদের৷ আফগানিস্তানে শিক্ষার হার খুবই কম৷ ২০১১ সালে জার্মান সরকারের উদ্যোগে একটি তথ্যবিবরণী প্রকাশ করা হয়েছিল৷ তখন আফগানিস্তানের শতকরা ৭২ ভাগ পুরুষ আর ৯৩ ভাগ নারীই ছিল নিরক্ষর৷
ছবি: Majid Saeedi
বোরখা এবং পুতুল
আফগান নারীরা পুতুল বানাতে শেখার ক্লাসে৷ মালয়েশিয়ার একটি বেসরকারি সংস্থার অর্থায়নে এখানে পুতুল বানাতে শেখানো হয় তাঁদের৷ আফগান নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্যই এ উদ্যোগ৷
ছবি: Majid Saeedi
তালেবানের প্রতিশোধ
২০১১ সালে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করার পরই আফগানিস্তানে হামলা চালায় তালেবান৷ প্রতিশোধমূলক সে হামলায় প্রাণ যায় চারজনের, আহত হয়েছিলেন ৩৬ জন৷ ছবিতে দু’জন আহতকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Majid Saeedi
খেলাধুলা
হাড়ভাঙা খাটুনি শেষে একটু বিশ্রাম৷ আফগানিস্তানে শরীর চর্চা খুব জনপ্রিয়৷
ছবি: Majid Saeedi
যুদ্ধের আবাদ
গত ৩০টি বছর ভীষণ প্রভাব ফেলেছে আফগানদের জীবনে৷ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা যায় যুদ্ধের প্রভাব৷
ছবি: Majid Saeedi
মাদ্রাসা
কান্দাহারের মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত শিশুরা৷
ছবি: Majid Saeedi
হত্যার প্রশিক্ষণ
কুকুরের লড়াইও আফগানিস্তানে খুব জনপ্রিয়৷ কুকুরদের এমনভাবে লড়াই করতে শেখানো হয় যাতে তারা প্রতিপক্ষকে একেবারে মেরে ফেলে৷ কুকুরের জীবনেও যুদ্ধের প্রভাব!