1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কয়েদিদের কুমারীত্ব পরীক্ষা

মাসুদ সাইফুল্লাহ/এসি১৩ মার্চ ২০১৬

তথাকথিত নৈতিক অপরাধের অভিযোগে আটক মহিলা ও কিশোরীদের নাকি বাধ্যতামূলকভাবে কুমারীত্ব পরীক্ষা করে থাকেন সরকারি ডাক্তাররা৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আবার এই কুমারীত্ব পরীক্ষা করা হয় পুরুষ প্রহরীদের উপস্থিতিতে৷

Frauen Afghanistan Gefängnis
ছবি: AFP/Getty Images

আফগান ইন্ডিপেন্ডেন্ট হিউম্যান রাইটস কমিশন তাদের একটি সাম্প্রতিক রিপোর্টে এই তথ্য প্রকাশ করেছে৷ এআইএইচআরসি এ জন্য দেশের ১২টি প্রদেশে ১৩ থেকে ৪৫ বছর বয়সের ৫৩ জন মেয়ে কয়েদির সাক্ষাৎকার নেয়৷ তাদের সকলের বিরুদ্ধে ব্যভিচার গোত্রীয় নৈতিক অপরাধের অভিযোগ ছিল৷ ৫৩ জনের মধ্যে ৪৮ জনের ‘‘ইনভেসিভ'' কুমারীত্ব পরীক্ষা করা হয়েছে – ‘‘ইনভেসিভ'', অর্থাৎ শরীরের অভ্যন্তরে, যেমন যোনি বা মলনালি ধরে পরীক্ষা৷ সেই পরীক্ষাও আবার তাদের আপত্তি সত্ত্বেও৷ পরীক্ষা চালিয়েছেন সরকারি ডাক্তাররা৷

পেশেন্টের অনুমতি ব্যতিরেকে এ ধরনের স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত পরীক্ষাকে ‘‘যৌন হয়রানি ও মানবাধিকার ভঙ্গের'' পর্যায়ে ফেলা চলে – বলেছে এআইএইচআরসি৷ এছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জেলের পুরুষ প্রহরীদের উপস্থিতিতে এই সব পরীক্ষা চালানো হয়েছে, বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে৷ যার ফলে মহিলাদের ‘‘মানসিক কষ্ট ও অবমাননা'' আরো বেড়েছে৷ সংশ্লিষ্ট মহিলাদের হুমকি ও অপমানও সহ্য করতে হয়েছে৷

আফগানিস্তানের একমাত্র মহিলা সরকারি কৌঁসুলি মারিয়া বাশির বলেছেন যে, তিনি নিজে বহু মহিলাকে চেনেন, যাদের জোর করে কুমারীত্ব পরীক্ষা করা হয়েছে৷ পুলিশ নাকি নৈতিক অপরাধে অভিযুক্ত মহিলাদের ‘ফরেনসিক মেডিসিন' বিভাগে পাঠায়, যেখানে তাদের ‘গায়নেকলজিক্যাল টেস্ট' করা হয়৷ বাশির স্বয়ং ডয়চে ভেলের সাক্ষাৎকারে এ ধরনের ‘ভার্জিনিটি টেস্ট'-এর তীব্র বিরোধিতা করেছেন৷ এআইএইচআরসি-র রিপোর্টে অবশ্যই উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোনো নারীর ‘হাইমেন' বা সতীচ্ছদ আছে কিনা, তার সঙ্গে কুমারীত্বের কোনো সম্পর্কই নেই৷ অর্থাৎ কুমারীত্ব পরীক্ষার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তিই নেই৷ আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে যোগ করা দরকার যে, বস্তুত পুলিশ বা অপরাপর আইন-শৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষের মহিলা ও কিশোরীদের জোর করে কুমারীত্ব পরীক্ষা করার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই৷

আফগানিস্তানের সমাজ চরম রক্ষণশীল৷ এখানে কিশোরীদের কুমারীত্বের উপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়৷ বিয়ের আগে কুমারীই ছিল, এটা প্রমাণ করতে না পারলে হতভাগ্য বধুকে তার বাপের বাড়ি ফেরত পাঠানো হতে পারে – কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিবরের সম্মান বাঁচানোর নামে হত্যাও করা হতে পারে৷ এমন পরিস্থিতিতে কোনো প্রাদেশিক জেল হাজতে অপর্যাপ্ত আয়োজনে কুমারীত্ব পরীক্ষার ফলাফল একটি নারী বা কিশোরীর জীবন নষ্ট করে দিতে পারে – বলেছেন আফগান সংসদের নারী, মানবাধিকার ও সুশীল সমাজ সংক্রান্ত কমিশনের সদস্য সাংসদ মরিয়ম কোফি৷ ‘‘শুধু কুমারীত্ব পরীক্ষা হওয়াটাই একজন মহিলার ভবিষ্যতের পক্ষে সমস্যাকর হয়ে উঠতে পারে'', বলেছেন কোফি৷ কোনো কোনো ক্ষেত্রে যে সব সরকারি কর্মকর্তা ও অপরাপর কর্মচারী কুমারীত্ব পরীক্ষা করেন, তারাই নাকি মহিলাদের ভয় দেখিয়ে পরে তাদের যৌন অপব্যবহার করার চেষ্টা করেন৷

কয়েদিদের বাধ্যতামূলকভাবে কুমারীত্ব পরীক্ষা কি নারীর চরম অবমাননা নয়? জানান আপনার মন্তব্য৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ