আফগানিস্তান নিয়ে ফের মুখ খুললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বললেন, আফগানদেরই নিজেদের লড়াই করতে হবে। অ্যামেরিকা বাইরে থেকে সাহায্য করবে।
বিজ্ঞাপন
সমালোচনা হচ্ছে। বিশ্বের অনেক দেশই সরাসরি অথবা ঘুরিয়ে আফগানিস্তান পরিস্থিতির জন্য অ্যামেরিকাকে দায়ী করছে। যে ভাবে অ্যামেরিকা সেখান থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা অনেক। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মনে করেন, তার সিদ্ধান্তে কোনো ভুল নেই। অ্যামেরিকা ঠিক সময়েই আফগানিস্তান থেকে সেনা সরিয়ে নিয়েছে। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে বাইডেন জানিয়েছেন, আফগানদেরলড়াই তাদেরই লড়তে হবে। অ্যামেরিকা শর্ত মেনে তাদের সাহায্য করবে।
'আফগানিস্তানে পরাজিত অ্যামেরিকা'
পরাজয় স্বীকার করছেন আফগানিস্তানে লড়াই করা মার্কিন সেনা অফিসাররাই। তুলনা টানছেন ভিয়েতনামের।
ছবি: Goran Tomasevic/REUTERS
বিশ বছরের যুদ্ধ
৯/১১ হামলার পরে আফগানিস্তানে প্রথম সেনা পাঠান তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ। জানিয়েছিলেন, এ হলো সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই।
ছবি: picture-alliance/dpa
লাদেন কোথায়
আল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে বার করতেই বহু বছর সময় লেগে গেছে মার্কিন সেনার। শেষপর্যন্ত পাকিস্তানে তাকে হত্যা করা হয়। আফগানিস্তানে বহু তালেবান নেতার মৃত্যু হয়েছে মার্কিন সেনার হাতে।
ছবি: picture-alliance/dpa/Ausaf
মৃত্যুমিছিল সর্বত্র
গত প্রায় বিশ বছরে শুধু আফগানিস্তানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ন্যাটো বাহিনীর মৃত্যু হয়েছে। যার অধিকাংশই মার্কিন। ৪৭ হাজার আফগান নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। ৬৬ হাজার আফগান সেনা মারা গেছেন। লাখ লাখ আফগান দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
ছবি: Getty Images/AFP//N. Noorullha
বর্তমান পরিস্থিতি
কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে আফগানিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকা। যুদ্ধের চিহ্ন সর্বত্র। আর্থ-সামাজিক দিক থেকেও দেশটির অবস্থা ভয়াবহ।
ছবি: picture-alliance/dpa
বাইডেনের বক্তব্য
এতদিন যুদ্ধের পর বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, আর যুদ্ধ নয়, অগাস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সমস্ত সেনা ফেরত আনা হবে। আফগানিস্তানের দায়িত্ব অ্যামেরিকা আর নিতে পারবে না।
ছবি: picture-alliance/dpa
কঠিন বাস্তব
মার্কিন সেনা ফিরতে শুরু করার পরেই ফের আফগানিস্তানের দখল নিতে শুরু করেছে তালেবান। আফগানিস্তান কার্যত গৃহযুদ্ধের মুখোমুখি।
ছবি: Ashaq Akramy/DW
অ্যামেরিকার হার
আফগানিস্তানে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করা মার্কিন সেনাদের একাংশ বলছেন, এটা আসলে অ্যামেরিকার হার। বিশ বছরেও যুদ্ধ জয় করতে পারেনি অ্যামেরিকা।
ছবি: Ashaq Akramy/DW
ভিয়েতনামের সঙ্গে তুলনা
কেউ কেউ এই হারকে ভিয়েতনামের সঙ্গে তুলনা করছেন। তাদের দাবি, ভিয়েতনাম থেকেও শেষ পর্যন্ত মার্কিন সেনাকে ফিরে আসতে হয়েছিল। আফগানিস্তানেও তাই হলো।
ছবি: Ashaq Akramy/DW
লক্ষ্য ছিল না
তাদের দাবি, ভিয়েতনামের মতোই আফগানিস্তানে অ্যামেরিকার কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল না। কিছু নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু সার্বিক পরিবর্তন ঘটানো যায়নি।
ছবি: John Moore/Getty Images
9 ছবি1 | 9
আফগানিস্তানকে অ্যামেরিকা জানিয়েছিল, যুদ্ধাস্ত্র, পোশাক, খাবার, সেনার বেতন এবং বিমান হামলায় সাহায্য করবে। সেনা সরিয়ে নেওয়ার পরেও অ্যামেরিকা আফগানিস্তানকে সেই সাহায্য করছে। কিন্তু এর চেয়ে বেশি সাহায্য তাদের পক্ষে করা সম্ভব নয় বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এদিকে মঙ্গলবারও দুইটি আঞ্চলিক রাজধানী দখল করেছে তালেবান। এই নিয়ে গত এক সপ্তাহে তালেবান আফগানিস্তানের আটটি প্রাদেশিক রাজধানী দখল করল। মঙ্গলবার তাদের হাতে এসেছে ফারাহ শহর এবং পুল-ই-খুমরি। পুল-ই-খুমরি বাগলানের রাজধানী। সেখান থেকে কাবুলের দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার। ফারাহ অবশ্য পশ্চিম আফগানিস্তানে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, তালেবানরা ক্রমশ কাবুলের দিকে এগোচ্ছে। কাবুলের আশপাশের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলি আগে তারা হাতে নিয়ে নিতে চাইছে।
সংবাদসংস্থা এএফপি-কে পুল-ই-খুমরি শহরের এক নারী জানিয়েছেন, রাস্তায় মৃতদেহ ছড়িয়ে আছে। জেলগুলির বাইরে মৃতদেহের স্তূপ। ভয়ে কেউ বাড়ি থেকে বেরচ্ছেন না। প্রচুর শিশুও আক্রান্ত হচ্ছে। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ সম্প্রতি একটি রিপোর্টে জানিয়েছে, আফগানিস্তানে বহু শিশু আক্রান্ত। কিন্তু সকলের কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে না। গত এক সপ্তাহে সব মিলিয়ে প্রায় এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলেও তারা জানিয়েছে।