আফগানিস্তানের তালেবান গোষ্ঠীর সঙ্গে বরাবরই ভালো সম্পর্ক বজায় রেখে এসেছে পাকিস্তান৷ কিন্তু গত কয়েক মাসে সে সম্পর্কে চিড় ধরেছে৷ এর পেছনে কারণগুলো কী?
বিজ্ঞাপন
রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার এক মাস পর, সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে তোরখাম সীমান্তে পাকিস্তানের একটি ট্রাক থামায় তালেবান যোদ্ধারা৷ ট্রাকটি থেকে পাকিস্তানের পতাকাও সরিয়ে নেয় তারা৷ এই ঘটনা পাকিস্তান ভালোভাবে নেয়নি৷ কিন্তু তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ নতুন আফগান শাসক এবং পাকিস্তানের মধ্যকার দূরত্ব সৃষ্টির তথ্য নাকচ করে দেন৷
কিন্তু তারপরও তালেবান ও পাকিস্তানের মধ্যে কিছু তিক্ততা স্পষ্ট৷
পাকিস্তানের পশতুন সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা এবং আফগানিস্তানের মধ্যকার ডুরান্ড লাইনকে আন্তর্জাতিক সীমানা হিসাবে মেনে নিতে তালেবানের অস্বীকৃতি পাকিস্তানকে অস্বস্তিতে ফেলেছে৷ অধিকাংশ পশতুনই দুই দেশের মধ্যকার ২,৬৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুরান্ড লাইনকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত হিসাবে মানতে চান না৷ এদিকে অধিকাংশ তালেবান যোদ্ধাও পশতুন জাতিসত্তার সদস্য৷
১৮৯৩ সালে ব্রিটিশরা এই ডুরান্ড লাইন প্রতিষ্ঠা করে৷ ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এই লাইনটি দুই দেশের সম্পর্কে গলার কাঁটা হয়ে রয়েছে৷
বৈধতা চায় তালেবান
২০২০ সালে মার্কিন-তালেবান চুক্তিকে সহজ করে তুলতে পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল৷ ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানে ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার পর থেকে দেশটি তালেবান শাসনকেও সমর্থন করেছিল৷
কিন্তু পাকিস্তান এখনো তালেবানদের আফগানিস্তানের বৈধ শাসক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি৷ কেউ কেউ বলছেন, এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ থাকতে পারে৷ ইসলামাবাদ এবং তালেবানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিদ্বেষও একটি কারণ হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা৷
বুধবার মস্কোতে এক শীর্ষ সম্মেলনে আফগানিস্তানের বর্তমান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তালেবান৷ তবে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পক্ষ তাদের এই অনুরোধে সাড়া দেবে এমন কোনও নিশ্চয়তা এখনও মেলেনি৷
ইসলামাবাদও তালেবান শাসনকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে৷ কিন্তু দেশটির বিভিন্ন জাতিসত্তাকে অন্তর্ভুক্ত না করেই সরকার গঠন করায় পাকিস্তানের এই প্রচেষ্টা বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে৷
বিক্ষোভকারীদের উপর দমন-পীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ফলে পাকিস্তানও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে জোরালো অবস্থান নিতে পারছে না৷ অন্যদিকে তালেবান মনে করে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রাজি করানোর জন্য পাকিস্তানের আরো অনেককিছুই করার ছিল৷
তালেবানের এই আফগানিস্তান
আফগানিস্তানে এখন আর বিদেশি সৈন্য নেই৷ সব জায়গায় শুধুই সশস্ত্র তালেবান যোদ্ধার উপস্থিতি৷ আরো অনেক পরিবর্তন চোখে পড়ছে দেশ জুড়ে৷ দেখুন ছবিঘরে..
ছবি: WANA NEWS AGENCY/REUTERS
যেন পুরুষের দেশ
তালেবান দখল নেয়ার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবন ফিরছে আফগানিস্তানে ৷দোকান, অফিস-আদালত খুলছে৷ তবে কোনো জায়গাতেই নারীদের তেমন দেখা যায় না৷ ছবির এই রেস্তোরাঁতেও খেতে আসা সবাই পুরুষ৷
ছবি: WANA NEWS AGENCY/REUTERS
লিঙ্গবৈষম্য
কাবুলের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো আফগানিস্তানের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এখন ছেলে আর মেয়েদের বসতে হয় আলাদা৷ মাঝে পর্দা অথবা কার্ডবোর্ডের দেয়াল দিয়ে আলাদা করা হয় তাদের৷ প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারী-পুরুষের বৈষম্য এভাবে তুলে ধরতে চায় তালেবান৷ এর কারণ জানাতে গিয়ে তালেবান নেতা আব্দুল বাগি হাক্কানি বলেন, ‘‘সহশিক্ষা ইসলামের মূল নীতিমালা এবং আমাদের জাতীয় মূল্যবোধ, রীতিনীতি এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক৷’’
ছবি: AAMIR QURESHI AFP via Getty Images
নারীর নিয়ন্ত্রিত অধিকার
হেরাতের মসজিদে এভাবেই এখন নামাজ আদায় করতে যান নারীরা৷ নারীদের শুধু নিজের পছন্দের পোশাক পরার অধিকারই কেড়ে নেয়া হয়নি, তালেবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের প্রধান আব্দুল্লাহ ওয়াসিক জানিয়েছেন, এখন থেকে খেলাধুলাতেও সীমিত পরিসরে অংশ নিতে পারবেন মেয়েরা৷
ছবি: WANA NEWS AGENCY/REUTERS
অলি-গলিতেও সশস্ত্র তালেবান
ছবির এই রাস্তার মতো আফগানিস্তানের সব শহরের সব রাস্তায়ই থাকে তালেবান পাহারা৷ সশস্ত্র তালেবান যোদ্ধারা কেউ পশ্চিমা পোশাক পরেছেন কিনা, তালেবানবিরোধী কিছু করছেন কিনা এসব দিকে কড়া নজর রাখেন৷
ছবি: Haroon Sabawoon/AA/picture alliance
বেকারত্ব বাড়ছে
কাবুলের রাস্তার পাশে বসে কোনো কাজের সুযোগের অপেক্ষায় কয়েকজন দিনমজুর৷ আফগানিস্তানে বেকারত্ব দ্রুত বাড়ছে৷ জাতি সংঘের আশঙ্কা, বিদেশি সহায়তা না পেলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ বেকারত্ব ভয়াবহ পর্যায়ে চলে যেতে পারে, দারিদ্র্যের হারও সর্বশেষ সমীক্ষার ৭২ শতাংশ থেকে বেড়ে শতকরা ৯৮ ভাগ হয়ে যেতে পারে৷
ছবি: Bernat Armangue/dpa/picture alliance
তালেবানকে চ্যালেঞ্জ
প্রতিবাদ, বিক্ষোভ রোধে লাঠি, বেত, এমনকি আগ্নেয়াস্ত্রও চালায় তালেবান৷ এ বিষয়ে তালেবানকে সতর্কও করেছে জাতিসংঘ৷ তালেবানের হামলায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে চারজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অনেক৷ তা সত্ত্বেও নিজেদের অধিকার আদায়ের দাবিতে সোচ্চার নারীরা৷ ওপরের ছবিতে এক নারী বিক্ষোভকারীর হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা আমাদের (নারীর) ক্ষমতার ফলাফল৷’’
ছবি: REUTERS
তালেবানের নারী সমর্থক
তালেবান দখল নেয়ার পর আফগানিস্তানে তালেবান সমর্থক নারীদেরও দেখা যাচ্ছে৷ ওপরের ছবিতে তালেবান সমর্থক নারীদের বিক্ষোভের এক প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘‘মুজাহিদিনের দৃষ্টিভঙ্গি ও ব্যবহারে আমরা সন্তুষ্ট৷ ’’
ছবি: AAMIR QURESHI/AFP/Getty Images
তালেবানের পক্ষপাত
তালেবানবিরোধীদের সমাবেশে হামলা হয়েছে, সেই খবর প্রকাশ করতে যাওয়া সাংবাদিকদেরও ধরে নিয়ে পিটিয়েছে তালেবান৷ অন্যদিকে তালেবান সমর্থকদের সমাবেশ কাভার করতে আহ্বান জানানো হয় সাংবাদিকদের৷
ছবি: AAMIR QURESHI/AFP/Getty Images
8 ছবি1 | 8
হাক্কানিদের সমর্থন করছে পাকিস্তান
আন্তর্জাতিক সংকট ছাড়াও কিছু অভ্যন্তরীণ বিষয়ও তালেবান এবং পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কে ফাটল ধরাচ্ছে৷
পেশোয়ার-ভিত্তিক আফগান ও পশতুন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আলম মেহসুদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘১৯৯০-এর দশকে (সোভিয়েত বাহিনী আফগানিস্তান ত্যাগ করার পর) আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পাকিস্তান গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ারকে সমর্থন করেছিল৷ এখন, হাক্কানিদের সমর্থন করছে ইসলামাবাদ, যাদের অন্তর্বর্তী সরকারে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়েছে৷''
তবে এই সমর্থন কিছু তালেবানকে ক্ষুব্ধ করেছে বলে মনে করেন তিনি৷
একজন সাবেক আফগান কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডয়চে ভেলেকে বলেন, সিনিয়র তালেবান কমান্ডার মোল্লা আব্দুল সালেম জাইফ, ভারপ্রাপ্ত আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা ইয়াকুব এবং অন্যান্য অনেক তালেবান নেতা হাক্কানি নেটওয়ার্কের সদস্যদের প্রতি পাকিস্তানের সমর্থনে সন্তুষ্ট নন৷
আফগানিস্তানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের সময় তালেবানের মধ্যে টানাপোড়েনের খবর প্রথম জানা যায়৷ পূর্ণ সরকার গঠনের বদলে ক্রান্তিকালীন সরকার গঠন করা এই বার্তাই দেয় যে আফগানিস্তানের নতুন শাসকরা ঐক্য সৃষ্টিতে সক্ষম হয়নি৷
মোল্লা হাসান আখুন্দকে ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী এবং সিরাজুদ্দিন হাক্কানিকে ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করা হয়৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে হাক্কানিকে একটি জ্যেষ্ঠ পদ দেয়ার সিদ্ধান্তটি এটাই প্রমাণ করে যে শক্তিশালী হাক্কানি নেটওয়ার্ককে তালেবান দূরে সরাতে চায়নি৷ হাক্কানি নেটওয়ার্ক তালেবানের অধীনস্থ একটি উপ-সংগঠন হয়ে উঠেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক আমজাদ শোয়েব ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় হাক্কানিরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে৷ তারা (১৯৮০-এর দশকে) আফগান জিহাদের সময় থেকেই পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ ছিল৷''
পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে জেনারেল হিসেবে অবসর নেওয়া শোয়েব মনে করেন অন্যান্য তালিবান গোষ্ঠীর সঙ্গেও ইসলামাবাদের সুসম্পর্ক রয়েছে৷
আফগান জনগণের চাপ
তালেবানের সাথে ইসলামাবাদের ঐতিহাসিক সুসম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও অনেক আফগান পাকিস্তানকে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপকারী দেশ হিসেবে দেখে৷
আফগানদের গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে এই ধারণা পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ, কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু পদক্ষেপে আফগান জনগণ বেশ বিরক্ত৷ পেশোয়ার-ভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক লতিফ আফ্রিদি ডয়চে ভেলেকে বলেন, আফগান-পাকিস্তান সীমান্তে বাণিজ্য রুটগুলি ঘন ঘন বন্ধ হওয়ার ফলে অনেক আফগানদের সমস্যা হচ্ছে৷
আফ্রিদি বলেন, ‘‘পাকিস্তান আফগানিস্তানের কৃষিপণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার৷ সীমান্ত বন্ধের ফলে আফগানদের শাকসবজি ও ফল পঁচে গেছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘এই একতরফা পদক্ষেপগুলো এরইমধ্যে বিপর্যস্ত আফগান অর্থনীতিতে আঘাত করেছে এবং এমনকি ঐতিহাসিকভাবে পাকিস্তানপন্থি হিসাবে পরিচিত আফগান কর্মকর্তাদেরও ক্ষুব্ধ করেছে৷''
বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স- পিআইএ আফগানিস্তানের সংকটের সুযোগ নিয়ে আশরাফ গানির সরকারের পতনের পর আফগান যাত্রীদের কাছে অতি উচ্চ মূল্যে টিকিট বিক্রি করেছে৷ তালেবান কর্মকর্তাদের সমস্যাযুক্ত আচরণের কথা বলে সম্প্রতি পিআইএ কাবুল থেকে তাদের ফ্লাইট স্থগিত করেছে৷ বিশ্লেষকরা বলছেন যে তালেবানরাও বুঝতে পেরেছে যে অনেক আফগান পাকিস্তানের প্রতি অসন্তুষ্ট৷
কাদের হাতে আফগান মন্ত্রিসভা
কেউ ছিলেন মোস্ট ওয়ান্টেড। জাতিসংঘের তালিকায় এখনো কেউ কেউ 'জঙ্গি'। এক নজরে তালেবান সরকার।
ছবি: Gulabuddin Amiri/AP/picture alliance
হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা
তালেবানের সুপ্রিম নেতা আখুন্দাজা। ২০১৬ সাল থেকে তালেবানের ধর্ম, রাজনীতি সহ সমস্ত বিষয়ে তিনি সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী। তার নেতৃত্বেই সরকার গঠন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সহ সমস্ত মন্ত্রী তার কাছে জবাবদিহি করবেন। তালেবান আফগানিস্তান দখল করার পরে এখনো পর্যন্ত আখুন্দজাদা ক্যামেরার সামনে আসেননি। তবে সরকার গঠনের কথা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন তিনি।
ছবি: Imago/Xinhua
প্রধানমন্ত্রী মোল্লাহ হাসান আখুন্দ
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন মোল্লাহ হাসান আখুন্দ। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান সরকারে আখুন্দ ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। তালেবানের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের অন্যতম তিনি। তবে এখনো জাতিসংঘের সন্ত্রাসী তালিকায় তার নাম আছে।
ছবি: SAEED KHAN/AFP
ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী মোল্লাহ আব্দুল গনি বারাদার
ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছেন বারাদার। অনেকে মনে করেছিলেন বারাদারকেই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হবে। কোনো কোনো সূত্রের দাবি, মন্ত্রিসভার গঠন নিয়ে তালেবানের ভিতরে যথেষ্ট বিতর্ক হয়েছে। সেখানে পাকিস্তানের আইএসআই-য়েরও হাত ছিল। হাসান আখুন্দকে সে জন্যই প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছে। পিছিয়ে পড়েছেন বারাদার।
ছবি: Alexander Zemlianichenko/REUTERS
ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী মৌলভি আদুল সালাম হানাফি
হানাফিও ডেপুটি প্রধানমন্ত্রীর পদ পেয়েছেন। তালেবানের গুরুত্বপূর্ণ নেতা তিনি। কাতারে তালেবানের রাজনৈতিক সদর দফতরে বিশেষ পদে ছিলেন হানাফি। অ্যামেরিকা এবং আফগান সরকারের সঙ্গে আলোচনার দায়িত্বেও ছিলেন। তবে তিনি ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী হবেন, এমনটা আশা করেননি অনেকেই। (ছবিতে ডানদিক থেকে দ্বিতীয়)
ছবি: AFP/Getty Images/K. Jaafar
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দীন হাক্কানি
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান সিরাজুদ্দীন হাক্কানি। এফবিআইয়ের জঙ্গি তালিকায় তার নাম আছে। ২০১৭ সালে কাবুলে ট্রাক বোমা বিস্ফোরণে তিনিই মূল চক্রী বলে মনে করা হয়। যেখানে ১৫০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। হাক্কানি নেটওয়ার্কের সঙ্গে আল কায়দারও যোগাযোগ আছে বলে মার্কিন গোয়েন্দা দফতর মনে করে। অ্যামেরিকার তালিকায় হাক্কানি নেটওয়ার্ক নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী।
ছবি: FBI/REUTERS
প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লাহ মোহাম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ইয়াকুব মুজাহিদ। তালেবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে তিনি। তালেবান সরকারে তিনি গুরুত্বপূর্ণ পদ পাবেন বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেছিলেন। ইয়াকুবের নামও জাতিসংঘের কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
ছবি: IRNA
গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামলাবেন মৌলভি আমির খান মুতাক্কি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে মোল্লাহ হিদায়েত বাদরি। বিচারবিভাগ দেখবেন আব্দুল হাকিম ইশাকজাই। তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকবেন খইরুল্লাহ সায়িদ ওয়ালি খায়েরখা।
ছবি: REUTERS
কথা রাখেনি
বিশেষজ্ঞদের দাবি, তালেবান একটি বিষয় বুঝিয়ে দিয়েছে, তারা তাদের মূল নীতি থেকে সরছে না। তারা জানিয়েছে, শরিয়ত আইনেই ইসলামিক আমিরাত আফগানিস্তান শাসিত হবে। তারা কোনো নারীকে মন্ত্রিসভায় রাখেনি। আফগানিস্তান দখলের পরে তালেবানের কথা শুনে অনেকে মনে করেছিলেন, এবারের সরকার মধ্যপন্থা নিয়ে চলবে। তালেবান ছাড়াও অন্য গোষ্ঠীর নেতাদের সরকারে নেয়া হবে। কিন্তু মন্ত্রিসভা দেখে অনেকেই বলছেন, তালেবান কথা রাখেনি।