এক আফগান অভিবাসীকে জোর করে দেশে ফেরত পাঠানো ঠেকাতে চেয়েছিলেন এলিন এরসন নামের এক সুইডিশ তরুণী৷ তাই বিমান ছাড়ার আগে নিজের আসনে বসতে রাজি হচ্ছিলেন না তিনি৷
বিজ্ঞাপন
ফলে বিমানের উড্ডয়ন দেরি হয়ে যায়৷ পুরো ঘটনাটি ফেসবুকে লাইভ করেন এরসন৷ অনেকে তাঁর সাহসের প্রশংসা করলেও এজন্য তাঁকে সাজা পেতে হতে পারে বলে জানা গেছে৷
সব যাত্রী নিজ নিজ আসনে বসে সিট বেল্ট না বাঁধলে বিমান টেক অফ করতে পারে না৷ ২৩ জুলাই সে নিয়মটাই কাজে লাগালেন এলিন এরসন৷
সুইডিশ এই তরুণী ইস্তানবুলগামী ৫২ বছর বয়সি এক আফগান নাগরিকের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ার প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন৷ ইস্তানবুল থেকে তাঁকে অন্য প্লেনে আফগানিস্তান পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল৷
এক পর্যায়ে নিজের মোবাইল ফোন থেকে ফেসবুকে লাইভ শুরু করেন এলিন৷ ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্ট এবং এক পর্যায়ে কিছু যাত্রীও রেগে গিয়ে তাঁকে আসনে বসার অনুরোধ জানান৷
কিন্তু গোঁ ধরেন এলিন৷ অন্যায় কিছুই করছেন না বলে জানান তিনি৷ আফগান নাগরিককে প্লেন থেকে নামিয়ে দিলেই তিনিও আসনে বসবেন বলে জানান৷
তাঁর আচরণে অনেকে বিরক্ত হলেও কিছুক্ষণ পরেই অনেক যাত্রী তাঁর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে প্রতিবাদে যোগ দেন৷
এক পর্যায়ে ফ্লাইটে ঘোষণা দেয়া হয়, সেই আফগান নাগরিককে প্লেন থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে, তবে পাশাপাশি নামতে হবে এলিনকেও৷
ফেসবুকে অনেকেই তাঁকে স্বাগত জানালেও সুইডেশ পুলিশ বিষয়টাকে এতো সহজভাবে দেখছে না৷ তাঁরা বলছে, প্লেনে পাইলটের নির্দেশ অমান্য করার শাস্তি হিসেবে এলিনকে জরিমানা দিতে হতে পারে, এমনকি হতে পারে ৬ মাসের জেলও৷
অন্যদিকে সেই আফগান নাগরিককে শিগগিরই তাঁর দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷
বিমান যাত্রায় যে ১০টি কাজ করবেন না
বিমানে চড়া আজকাল আর খুব বড় কোনো ব্যাপার নয়৷ কাজের প্রয়োজনে, বেড়াতে কিংবা চিকিৎসার প্রয়োজনে অনেকেই যাচ্ছেন অন্য দেশে, বিমানে৷ আর এই যাত্রায় যে দশটি জিনিস করা উচিত নয়, তা থাকছে এখানে৷
ছবি: Fotolia/Andres Rodriguez
বিমানে উঠতে তাড়াহুড়া নয়
একটি বিমানে একসঙ্গে কয়েকশত যাত্রী আরোহণ করেন৷ যাত্রীদের ঠিকভাবে তুলতে তাই বিমান সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন গ্রুপ নম্বরে যাত্রীদের ভাগ করে ফেলেন৷ এরপর সেই নম্বর অনুযায়ী যাত্রীদের বিমানে উঠতে বলা হয়৷ সমস্যা হয়, যখন নম্বরের তোয়াক্কা না করেই অনেকে বিমানে উঠতে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন৷ এটা খুবই বিরক্তিকর ব্যাপার৷ অনেক সময় শুধুমাত্র এ জন্য বিমান ছাড়তে দেরি হয়৷
ছবি: Fotolia/Andres Rodriguez
বিমানে ওঠার আগে শেষ টান
বিমানের মধ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ৷ অনেকে তাই বিমানে ওঠার আগ মুহূর্তে সিগারেটে দু’টো টান দিয়ে নেন৷ সমস্যা হচ্ছে, বিমানের ভেতরটা আবদ্ধ৷ তাই সেখানে আপনার সিগারেটের গন্ধ অন্য আরোহীকে বিরক্ত করতে পারে৷ তাই সম্ভব হলে বিমান ওঠার আগ মুহূর্তে ধূমপান পরিহার করুন৷ আর বিমানে ধুমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সামনের সিটে ধাক্কা বা লাথি নয়
বিমানের সিটগুলো হয় হালকা ধরনের৷ মূলত তেল খরচ বাঁচাতেই এই ব্যবস্থা৷ তাই এসব সিটে পেছন দিক দিয়ে ধাক্কা দিলে, তা সিটে বসা আরোহীকে আঘাত করতে পারে৷ সুতরাং কোনো অবস্থাতেই সামনের সিটে ধাক্কা বা লাথি দেবেন না৷
ছবি: dapd
হাতল দখলের লড়াই
বিমানের সিটগুলোতে খুব বেশি জায়গা থাকে না৷ একটি সিটের সঙ্গে আরেকটি সিট লাগানো থাকে এবং হাতল থাকে একটা৷ কেউ কেউ তাই কনুই দিয়ে অপর যাত্রীকে গুতা দিয়ে কিংবা হাত শক্ত করে হাতলে রেখে সেটা দখলে রাখার চেষ্টা করে৷ এমনটা করা মোটেই উচিত নয়৷
ছবি: dapd
নগ্ন পায়ে ঘোরা নয়
অনেকেই বিমানে উঠে জুতা, এমনকি মোজাও খুলে ফেলেন৷ এটা অনেকের জন্যই বিরক্তিকর৷ আর খালি পায়ে বিমানের টয়লেট ব্যবহার করলে রোগজীবাণু আক্রান্তের আশঙ্কা বেড়ে যায়৷ সুতরাং বিমানে জুতা পরেই থাকুন৷
ছবি: Fotolia/Zeit4men
শব্দ বন্ধ না করেই গেম খেলা
আজকাল স্মার্টফোন, ট্যাবলেটে সহজেই ভিডিও গেম খেলা যায়৷ এতে অবশ্য খারাপ কিছু নেই৷ কিন্তু বিমানে বসে শব্দ বন্ধ না করে গেম খেললে তা অন্য আরোহীদের বিরক্ত করতে পারে৷ তাই শব্দ বন্ধ করে গেম খেলা ভদ্র ব্যাপার৷
ছবি: imago/Westend61
পেছনের লোকের আগে নামার লড়াই
বিমান ল্যান্ড করার পর তার দরজা খোলার আগেই অনেকে নামার জন্য তাড়াহুড়া শুরু করে৷ পারলে সামনের যাত্রীকে ডিঙিয়ে যাওয়ার চেষ্টা৷ এটা খুবই অশোভন আচরণ৷ বিমান যখন অবতরণ করেছে, তখন সব যাত্রীকেই নামাবে৷ তাই নিশ্চিন্তে বসে অপেক্ষা করুন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘হ্যালো, রানওয়েতে আছি’
বিমান অবতরণের সঙ্গে সঙ্গেই অনেকে ফোন করতে শুরু করেন৷ এমনকি নেটওয়ার্ক না পাওয়া গেলে চলে নিরন্তন চিৎকার: হ্যালো, এইমাত্র ল্যান্ড করলাম, শুনতে পাচ্ছো? আসলে এভাবে তাড়াহুড়া করা ভালো নয়৷ বিমানবন্দরে অপেক্ষারতরা বিভিন্ন ডিসপ্লে ঘোষণার মাধ্যমে এমনিতেই বিমান অবতরণের খবর জানতে পারেন৷ তাই প্রিয়জনকে সেটা জানাতে তাড়াহুড়া না করলেও সমস্যা নেই৷
ছবি: picture alliance / Arco Images GmbH
ভ্রমণ করছেন, কিন্তু নড়ছেন না
বড় বিমানবন্দরগুলোতে বিশেষ ধরনের ‘মুভিং ওয়াকওয়ে’ থাকে৷ এটা অনবরত সামনের দিকে যেতে থাকে৷ ফলে কেউ ‘মুভিং ওয়াকওয়েতে’ দাঁড়ালে এমনিতেই সামনের দিকে যেতে পারবেন৷ তাই অনেকে এতে দাঁড়িয়ে থাকেন৷ এটা আসলে ঠিক নয়৷ বরং মুভিং ওয়াকওয়েতে আপনি স্বাভাবিকভাবে হাঁটলে অন্য যাত্রীদের সুবিধা হবে৷
ছবি: Reuters
লাগেজ নেয়ার তাড়া
বিশ্বের সব বিমানবন্দরেই লাগেজ নেয়ার জন্য বিশেষ জায়গা আছে৷ সেখানে বেল্টের উপরে লাগেজগুলো একের পর এক দেয়া হয়৷ সেই বেল্ট অনবরত ঘুরতে থাকে৷ অনেক সময় বিমান থেকে নেমেই মানুষ সেই বেল্ট ঘিরে বড় জটলা তৈরি করে ফেলেন৷ এটা অনর্থক৷ বরং একটু দূরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলে আপনার লাগেজ দেখা সহজ হবে৷ এরপর সময়মত সেটি বেল্ট থেকে সরিয়ে নিলেই হলো৷