আফগানদের সম্ভাব্য ঢল নিয়ে জার্মান রাজনীতিবিদরা উদ্বিগ্ন
১৮ আগস্ট ২০২১
আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর জার্মানিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ তার আগে তালেবানের আফগানিস্তান দখলের কারণে জার্মানিতে আফগান শরণার্থীর ঢল নামতে পারে বলে আশংকায় আছেন জার্মান রাজনীতিবিদরা৷
বিজ্ঞাপন
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের দল সিডিইউ থেকে আগামী নির্বাচনে চ্যান্সেলর প্রার্থী হচ্ছেন আরমিন লাশেট৷ সম্প্রতি তিনি এক টুইটে বলেছেন, ‘‘সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ নিয়ে যে ভুল করা হয়েছিল তা অবশ্যই আর করা যাবে না৷ ২০১৫ সালের পুনরাবৃত্তি উচিত হবে না৷''
কাবুল বিমানবন্দরের ভয়াবহ ছবি
রোববারই কাবুল দখল করেছে তালেবান। শহর ঘিরে রেখেছে তারা। বিমানবন্দরে পালাতে চাওয়া মানুষের ভিড়। বিমানের মাথায় মানুষ। ভিড়ের চাপে মৃত সাত।
ছবি: Wakil Kohsar/AFP/Getty Images
বিমান না বাস
উপমহাদেশে বাসের মাথায় অনেকসময় মানুষ চড়েন, ট্রেনের মাথাতেও মাঝেমধ্যে দেখা যায় তাদের। কিন্তু তাই বলে বিমানের মাথায় মানুষ! সেই দৃশ্যও দেখা গেল কাবুল বিমানবন্দরে। কাবুল ছাড়ার জন্য কিছু মানুষ এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
ছবি: Wakil Kohsar/AFP/Getty Images
প্রবল ভিড়
যেদিকে দেখা যায়, সেদিকেই মানুষের মাথা। পিলপিল করছে মানুষ। বিমানবন্দরের ভিতরের ছবি।
ছবি: AFP
কোথায় যাবেন
কোথায় যাবেন জানা নেই। তাদের কাছে টিকিট নেই, ভিসা নেই, আছে শুধু অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ভয় এবং পালানোর মরিয়া প্রয়াস।
ছবি: AP Photo/picture alliance
পাঁচিল ও কাঁটাতারের বেড়া টপকে
বিমানবন্দরে উঁচু পাঁচিল, তার উপরে কাঁটাতারের বেড়া। সে সব টপকে মানুষ ঢুকেছেন বিমানবন্দরে। ছবিতে একটি মেয়েকে পাঁচিলে টেনে তুলছেন এক পুরুষ।
ছবি: REUTERS
যে কোনো ভাবে ঢোকার চেষ্টা
বিমানে যে কোনো ভাবে ঢোকার চেষ্টা করেছেন মানুষ। একমাত্র বিমানেই কাবুল তথা আফগানিস্তানের বাইরে যাওয়া যাবে। তাই মরিয়া হয়ে উঠেছে মানুষ।
ছবি: AP Photo/picture alliance
বাইরে গাড়ি রেখে
মানুষ এতটাই বেপরোয়া, যে বিমানবন্দরের বাইরে গাড়ি রেখে পরিবারের সকলকে নিয়ে তারা ছুটছেন ভিতরে ঢোকার জন্য।
ছবি: REUTERS
নারী ও শিশুরাও
শুধু পুরুষরা নয়। নারী ও শিশুদেরও দেখা গেছে বিমানবন্দরে ঢুকে প্লেন ধরার মরিয়া চেষ্টা করতে।
ছবি: REUTERS
বাইরে তালেবান প্রহরা
বিমানবন্দরের বাইরে সতর্ক পাহারায় তালেবান। বন্দুক হাতে তারা প্রহরারত।
ছবি: REUTERS
ভিড়ের চাপে
প্রবল ভিড় এবং বিশৃঙ্খলার শিকার হলেন অন্ততপক্ষে সাতজন। পালাতে চেয়েছিলেন তারা। পারলেন না। চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
ছবি: AFP/Getty Images
মার্কিন বিমানবাহিনীর বিমান
কাবুল বিমানবন্দরের উপরে মার্কিন বিমানবাহিনীর বিমান। এই বিমানবন্দর এখনো অ্যামেরিকার দখলে।
ছবি: ASVAKA NEWS via REUTERS
বিমান ঘিরে সেনা
পরিস্থিতি দেখে মার্কিন সেনা বিমানগুলি ঘিরে ধরে। আফগান জনতা দূর থেকে দেখছেন। তারা তখনো আশায় যে, বিমানে করে চলে যেতে পারবেন।
ছবি: Wakil Kohsar/AFP/Getty Images
নামতে পারল না
বিমানবন্দরের এমন অবস্থা ছিল যে, সোমবার জার্মান সেনাবাহিনীর বিমান সেখানে নামতে পর্যন্ত পারেনি।
সকলকে বিমানবন্দরের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য বন্ধ রাখা হয় এয়ারপোর্ট। বেশ কয়েকঘণ্টা পরে তা খোলে।
ছবি: Maxar Technologies/REUTERS
13 ছবি1 | 13
তার এমন মন্তব্যের কারণ, ২০১৫ সালে জার্মানিতে দশ লাখের বেশি শরণার্থী এসেছিল৷ তাদের বেশিরভাগই সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে পালানো শরণার্থী ছিলেন৷
এত শরণার্থীকে জার্মানিতে ঢুকতে দেয়ার ঘটনা জার্মান রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলেছিল৷ ভোটারদের মধ্য অভিবাসনবিরোধী মনোভাব বেড়েছিল৷ সে কারণে ২০১৭ সালের নির্বাচনের পর জার্মান সংসদের সবচেয়ে বড় বিরোধী দল হয়ে ওঠে শরণার্থীবিরোধী উগ্র ডানপন্থি দল এএফডি৷
চ্যান্সেলর প্রার্থী আরমিন লাশেটের মতোই মন্তব্য করেছেন তার দলের আরেকজন রাজনীতিবিদ৷ এমনকি এএফডি দলের সংসদীয় নেতা আলিস ভাইডেলও একই লাইনে কথা বলেছেন৷ টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘২০১৫-র পুনরাবৃত্তি হতে দেয়া যাবে না৷'' তিনি বলেন, সম্ভব হলে প্রকৃত শরণার্থীদের তাদের দেশের আশেপাশের দেশগুলোতে রেখে সহায়তা করতে হবে৷
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলোকে সহায়তার পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন৷ সরকারের ম্যার্কেলের ডেপুটি ও আগামী নির্বাচনে এসপিডি দলের চ্যান্সেলর প্রার্থী ওলাফ শলৎস সোমবার বলেন, আফগান শরণার্থীদের তুরস্ক, পাকিস্তান, ইরান ও ইরাকে রাখা যেতে পারে৷
২০১৫ সালে আরও বেশি সংখ্যক শরণার্থীর ইউরোপ আসা ঠেকাতে তুরস্কের সঙ্গে চুক্তি করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ শরণার্থীদের যেন তুরস্কেই রাখা হয় সেজন্য তুরস্ককে প্রয়োজনীয় অর্থ দেয়া হয়েছে৷ একইভাবে আফ্রিকা থেকে ইউরোপে শরণার্থী আসা বন্ধ করতে লিবিয়া ও উত্তর আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে অর্থ সহায়তা দেয়া হচ্ছে৷
আফগানিস্তান যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের বক্তব্য
01:53
এদিকে, জার্মান রাজনীতিবিদদের এমন সব মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন শরণার্থী বিষয়ক সংগঠন প্রো অ্যাসাইলের লিগ্যাল পলিসি অ্যাডভাইজার ভিবকে ইয়ুডিথ৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘এটা খুবই দু:খজনক যে, আফগানদের এমন অবস্থা দেখার পর প্রথম প্রতিক্রিয়া হচ্ছে, ওরা যেন আমাদের কাছে না আসে৷''
আগামী নির্বাচনের ফলাফল এখনো স্পষ্ট নয়৷ মে মাসে প্রকাশিত এক জরিপ বলছে, অভিবাসন এখনো ভোটারদের কাছে একটি বড় ইস্যু৷ এই অবস্থায় নির্বাচনের আগে আফগানিস্তান পরিস্থিতি আরো বড় ইস্যুতে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা আছে৷