কাশ্মীরে কারফিউ
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩![](https://static.dw.com/image/16588207_800.webp)
২০০১ সালে সংসদ ভবনের ওপর হামলার প্রধান আসামি আফজল গুরুর ফাঁসি কার্যকর করার প্রতিক্রিয়ায় কাশ্মীর উপত্যকায় যাতে অশান্তি ছড়িয়ে না পড়ে, তার জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে গত শনিবার থেকে সেখানে লাগাতার কারফিউ বলবৎ রয়েছে৷ মোবাইল, ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত৷ স্থানীয় সংবাদপত্র প্রকাশ বন্ধ৷ কার্যত যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্ল্যাক আউট৷ গত চারদিনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনজন নিহত এবং ২৩ জন নিরাপত্তা কর্মীসহ ৫০জন আহত হয়৷ আজ পরিস্থিতি ছিল শান্তিপূর্ণ৷
মঙ্গলবার চতুর্থ দিনে আফজলের পারলৌকিক ক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য সোপোর শহরে আফজলের বাসভবনের দিকে মিছিল করে যাবার ডাক দেয় কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী৷ ঐ জমায়েতে উত্তেজনার আশঙ্কায় পুলিশ সোপোর যাবার সব রাস্তা সিল করে দেয়৷ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে কড়া নিরাপত্তা ৷ বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি শুক্রবার পর্যন্ত হরতাল পালনের পর ঐ দিন ইদগা ময়দানে মিছিল করে যাবার ডাক দেন৷
আফজল গুরুর ফাঁসিতে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ দাবি তুলেছেন, এবার যদি রাজীব গান্ধীর হত্যাকারীকে ফাঁসি দেয়া না হয়, তাহলে কাশ্মীরে এই বার্তাই যাবে, যে বেছে বেছে আফজলকেই ফাঁসি দেয়া হলো৷ এর ফলে কাশ্মীরের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে ফের বিচ্ছিন্নতাবাদ মাথা চাড়া দিতে পারে৷ যেমনটা হয়েছিল ১৯৮৪ সালে মকবুল ভাটের ফাঁসির পর৷
এই বেছে বেছে ফাঁসি দেবার পেছনে কোন রাজনৈতিক অভিসন্ধি কাজ করছে কিনা – এই অভিযোগ অস্বীকার করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাজীব গান্ধী এবং পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী বিয়ন্ত সিং-এর হত্যাকারীদের বিচার প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি৷ মামলা রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে৷ ফাঁসি মার্জনার আবেদন খারিজ হবার পর আসামিরা পুনর্বিবেচনার জন্য মাদ্রাজ হাইকোর্টে এবং সুপ্রিম কোর্টে ফের আর্জি জানায়৷ আফজলের মামলা আলাদা৷ তবে এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়৷
অন্যদিকে আফজলের ফাঁসির প্রতিবাদে ইসলামাবাদে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী জেকেএলএফ গোষ্ঠীর নেতা ইয়াসিন মালিকের অনশন মঞ্চে দেখা যায় ২৬/১১-এর মুম্বই হামলার মূল চক্রী হাফিজ সৈয়দকে ভারত বিরোধী ভাষণ দিতে৷ আফজলের ফাঁসিকে ‘‘ আইনি সন্ত্রাস ‘‘ আখ্যা দেয় সে৷ দিল্লিতে এই নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক৷ ইয়াসিনের ভারতীয় পাসপোর্ট বাতিল করার দাবি ওঠে৷
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে৷ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজেপি সভাপতি৷ গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টির দিকে অবিলম্বে নজর দেয়া দরকার, বলেছেন তিনি৷ কূটনৈতিক পথে পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলা উচিত, যাতে ভিসা মঞ্জুর করার সময় আরো সতর্কতা অবলম্বন করা হয়৷