আফ্রিকার বিরিয়ানি জলোফ রাইস নিয়ে রেষারেষি
২ আগস্ট ২০২৪আফ্রিকায় কে সবচেয়ে ভালো জলোফ তৈরি করতে পারে? নাইজেরিয়ার মানুষের মনে সে বিষয়ে কোনো দ্বন্দ্ব নেই৷ নিজেদের রন্ধনশৈলি নিয়ে তারা বেশ সন্তুষ্ট৷ বিশেষ করে ‘স্মোকি' প্রভাব তাদের খুব পছন্দের৷
পশ্চিম আফ্রিকার সব মানুষের মধ্যে সেরা জলোফ ভাত রান্না নিয়ে রেষারেষি রয়েছে৷ নাইজেরিয়ার মানুষ নিজেদের জলোফ ভাতকে সেরা মনে করেন৷
‘জাস্ট জলোফ’ রেস্তোরাঁ জলোফ রাইসে হাত পাকিয়েছে৷ কাঠের আগুনেও সেটি রান্না করা যায়৷ সেটাকে ‘ফায়ারউড জলোফ’ বলা হয়৷ সেই ভাতের মধ্যে স্মোকি ফ্লেভার পাওয়া যায়৷ রেস্তোঁরার কর্ণধার শেফ আদেদালাপো করিম বলেন, ‘‘আমার কাছে বড় হওয়ার সময়ে জলোফ রাইস মূলত উৎসবের সময়ে খাওয়া হতো৷ আজকাল আমাদের সমাজে অনেক ভাত ছাড়া কোনো পার্টি সম্ভব হয় না৷’’
সেই রান্নার মূল উপকরণ অবশ্যই চাল৷ ঘানার মানুষের মতো নাইজেরীয়রা লম্বা বাসমতি চাল পছন্দ করেন না৷ তাঁরা ছোট দানার চাল খান৷ রান্নার জন্য লাগে পানি, টমেটো পেস্ট, আদা, রসুন, থাইম পাতা, নানা ধরনের মরিচ, মাংসের স্টেক, ক্রেফিশ মাছ, শুটকি মাছ বা চিংড়ি, যা কিছু বাড়তি স্বাদ যোগ করে৷ করিম বলেন, ‘‘প্রথমত, বিশেষ পাত্রে রান্না হয়৷ সেটা আয়রন কাস্ট পট৷ ইয়োরুবা ভাষায় এটিকে আপেরিন বলা হয়৷ জ্বালানি কাঠ বা লাকড়ি প্রস্তুত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূ্র্ণ৷ কারণ সেই আগুন ভীষণ গরম৷ তাই এমন হাঁড়ি চাই, যা দুই-তিন ঘণ্টা ধরে সেই উত্তাপ সহ্য করতে পারে৷ খাঁটি ওয়াম্বে জলোফ তৈরি করতে হলে ভাত কিছুটা পুড়তে দিতে হবে৷ এখন আমি মাখন যোগ করবো, যা আসলে মার্জারিন৷ ফ্লেভারের জন্য কাটা পিঁয়াজ দেতে হয়৷ অতিরিক্ত পিঁয়াজ বলে কিছু নেই, অনেক পরিমাণ দেওয়া যায়৷ তারপর টমেটো পেস্ট যোগ করতে হয়৷ আমি অর্ধেক টিন ব্যবহার করি৷ একই পরিমাণ মরিচের মিশ্রণ দিয়ে ভালো করে কষাবো৷’’
জলোফ রাইসের এত বৈচিত্র্যের পেছনে পশ্চিম আফ্রিকা জুড়ে ওলোফ জনগোষ্ঠীর মানুষের আনাগোনা অন্যতম কারণ৷ সেই অঞ্চলের অনেক দেশের নিজস্ব রন্ধন প্রক্রিয়া রয়েছে৷ অনেকে নানা রকম মশলা ব্যবহার করেন৷ কিন্তু মরিচের ব্যবহারই স্বাদের মূল রহস্যের কারণ৷
নাইজেরিয়া ও ঘানার মধ্যে সেরা জলোফ রাইস নিয়ে যে বিবাদ চলছে, তার হয়তো কখনোই নিষ্পত্তি হবে না৷ সেটা জলোফ ওয়ার নামে পরিচিত৷
ডানিয়েলা শুলৎস/এসবি