নাইজেরিয়া, ক্যামেরুন ও চাদে শিশু আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী ১১ গুণ বেড়েছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ৷ জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক এই সংস্থার মতে, ইসলামি জঙ্গি সংগঠনগুলো ভুল বুঝিয়ে আত্মহনন ও ধ্বংসের পথে টেনে নিচ্ছে শিশুদের৷
বিজ্ঞাপন
ইউনিসেফ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আফ্রিকার ঐ তিন দেশে ২০১৪ সালে যেখানে মাত্র চারজন শিশু আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী ছিল, ২০১৫ সালে সেই সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ৪৪৷ ইউনিসেফ-এর পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকা অঞ্চলের পরিচালক মানুয়েল ফন্টেইন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, শিশুদের ভুল বুঝিয়ে অথবা জোর করে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী বানানো হচ্ছে৷
ইউনিসেফ-এর প্রতিবেদন বলছে, ২০১৫ সালে যে ৪৪ জন শিশু আত্মঘাতী বোমা হামলায় অংশ নিয়েছে তাদের মধ্যে ২১ জন নাইজেরিয়ার, ২১ জন ক্যামেরুনের এবং বাকি ২ জন চাদের৷ মোট ৪০টি হামলায় অংশ নিয়েছে এই ৪৪ জন শিশু৷ আত্মঘাতী বোমা হামলায় অংশ নেয়া শিশুদের শতকরা ৭৫ ভাগ মেয়ে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়৷
বৈরুতেও বোমা হামলার ক্ষত
প্যারিসে হামলার আগের দিন মানুষ হত্যার আরেকটি মিশনে নেমেছিল আইএস৷ বৈরুতের সেই বর্বরতার নির্মম শিকারও অনেক৷ হামলাকারীরা লক্ষ্যস্থলে আঘাত হানতে পারলে ক্ষয়ক্ষতি অবশ্য আরো ভয়াবহ হতো৷ দেখুন ছবিঘরে...৷
ছবি: Reuters/H. Shaaban
আত্মঘাতী বোমা
শুক্রবার থেকে সবার নজর প্যারিসের দিকে৷ কিন্তু আগের দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই আরেক হামলায় বৈরুতের বুরুজ আল-বারাজনেহ ও তার পাশের একটি অ্যাপার্টমেন্ট মিলিয়ে মোট ৪৪ জন মারা যায়৷ দুই আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী সফল হলেও আরেকজনের শরীরের সঙ্গে বাঁধা বিস্ফোরক বিস্ফোরিত হয়নি৷ তৃতীয়জন সফল হলে ক্ষয়ক্ষতি নিঃসন্দেহে অনেক বেশি হতো৷
ছবি: picture-alliance/dpa/N. Mounzer
কেন এই হামলা?
হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস৷ বুরুজ আল-বারাজনেহ অঞ্চলটি হিজবুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত৷ হিজবুল্লাহ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে সমর্থন দিচ্ছে৷ সে কারণেই হিজবুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত ওই এলাকায় হামলা চালায় আইএস৷ ছবিতে বোমা হামলায় আহত এক নারীকে ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য৷
ছবি: picture-alliance/dpa/N. Mounzer
গ্রেপ্তার
হামলায় জড়িত সন্দেহে এ পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সাতজন সিরীয় এবং দু’জন লেবাননের নাগরিক বলে জানা গেছে৷ ছবিতে সন্দেহভাজন একজনের আটক হওয়ার মুহূর্ত৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/B. Hussein
আরো ভয়ংকর পরিকল্পনা ছিল
লেবাননের স্বরাষ্টমন্ত্রী নূহাদ মাশনুক ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করায় পুলিশের প্রশংসা করেছেন৷ তিনি জানান, হামলাকারীদের একটি হাসপাতালে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু হাসপাতালে কড়া নিরাপত্তা থাকায় বুরুজ আল-বারাজনেহ ও তার পাশের একটি অ্যাপার্টমেন্টকে বেছে নেয়া হয়৷ ছবিতে ফরেনসিক বিভাগের কর্মীদের হামলাস্থল পর্যবেক্ষণের দৃশ্য৷
ছবি: Getty Images/AFP
আরো হামলা?
বৈরুতে আবারও হামলা চালাতে পারে আইএস৷ নূহাদ মাশনুক এমন আশঙ্কাই করছেন৷ সংবাদমাধ্যমকে লেবাননের স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘ওরা কিন্তু এক জায়গায় পাঁচজন আত্মঘাতী হামলাকারী পাঠিয়েছে, সুতরাং বুঝতে হবে এটাই শেষ নয়...৷’’
ছবি: Getty Images/AFP
5 ছবি1 | 5
এমনিতে নাইজেরিয়া, ক্যামেরুন এবং চাদে সন্ত্রাসী হামলা ব্যাপক হারে বেড়েছে৷ ২০১৪ সালে এই তিন দেশে মোট ৩২টি হামলা হয়েছিল, সেখানে ২০১৫ সালে হয়েছে ১৫১টি৷
নাইজেরিয়া, ক্যামেরুন এবং চাদে বোকো হারাম খুব শক্তিশালী৷ ইসলামি জঙ্গি সংগঠনটি সে অঞ্চলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে৷ ইউনিসেফ অবশ্য এ জন্য সরকারগুলোর জঙ্গিবাদবিরোধী তৎপরতার অভাবকেও দায়ী করেছে৷
দু'বছর আগে নাইজেরিয়ার এক স্কুল থেকে ২০০ অমুসলিম কিশোরীকে অপহরণ করে বোকো হারাম৷ তাদের উদ্ধারে এখনো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়ার জন্য নাইজেরিয়া সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছে ইউনিসেফ৷