1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আবরার হত্যা মামলার রায় কী বার্তা দেবে?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৮ ডিসেম্বর ২০২১

বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলায় বুয়েটেরই ২০ শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ডের রায় শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস কমাতে কি কোনো  ‍ভূমিকা রাখবে?

Bangladesch | Urteil im Prozeß wegen Mord an Student Abrar Fahad
ছবি: Mahmud Zaman Ove/bdnews24.com

এই মামলায় বুয়েটের আরো পাঁচজন শিক্ষার্থীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

বুধবার দেয়া রায়ে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক  আবু জাফর কামরুজ্জামান বলেছেন, শিবির সন্দেহে আবরার ফাহাদ রাব্বির বিরুদ্ধে মিথ্যা , বানোয়াট, ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়, যা বাংলাদেশের মানুষকে ব্যথিত করেছে। বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বির নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনার পনুরাবৃত্তি যাতে না হয়, এমন ঘটনা রোধকল্পে এই ট্রাইব্যুনালে সকল আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। 

আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, "আমি চাই এই রায় যেন উচ্চ আদালতেও বহাল থাকে, তাহলে এটা একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। সেটা হলে শুধু বুয়েট নয়, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিং, মারপিট,দখল- এসব বন্ধ হবে। আর কোনো ছাত্রকে শিক্ষাঙ্গনে প্রাণ দিতে হবে না।”

বরকত উল্লাহ

This browser does not support the audio element.

তিনি বলেন, "যাদের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ হয়েছে, তারা তো অপরাধী। কিন্ত দায় আমাদেরও রয়েছে। আমরা তাদের ঠিকমতো পরিচালিত করতে পারিনি। ঠিকমতো শিক্ষা দিতে পারিনি। সেটা পারলে আমার ছেলেকেও হয়তো জীবন দিতে হতো না। এই ২০ জন ছাত্রেরও ফাঁসি হতো না।”

তার কথা, " রাজনৈতিক দলগুলো শিক্ষাঙ্গনে আধিপত্য বিস্তার করতে চায়, দখলদারিত্ব বজায় রাখতে চায়, যার পরিণতি এটা। আমি এর অবসান চাই। ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করুক।”

বুয়েটের উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার মনে করেন, এই রায় সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই একটি বার্তা দেবে, ছাত্রদের আরো সতর্ক করবে। তিনি বলেন, "এটা আমাদেরও মেসেজ দেবে। ছাত্রদের ঠিকমতো অ্যাডভাইস করতে হবে। তাদের মনিটরিং-এর মধ্যে রাখতে হবে। আমাদের দেশে অ্যাকাডেমিক অ্যাডভাইজিং আছে। কিন্তু ব্যক্তিগত পর্যায়ে অ্যাডভাইজিং নেই। এটা প্রয়োজন। এটা করতে হবে। হল প্রোভোস্ট, হাউস টিউটরদের ছাত্রদের ব্যক্তিগত পর্যায়ে খোঁজ রাখতে হবে। তারা কী করে তা জানতে হবে। তাদের ব্যক্তিগতভাবে পরামর্শ দিতে হবে। ক্যারিয়ার অ্যাডভাইজিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, "জাতীয় স্বার্থে রাজনীতি তো অনেকে করেন। কিন্তু সেটার প্রভাব যেন খারাপ দিকে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।”

সত্য প্রসাদ মজুমদার

This browser does not support the audio element.

এই মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী আবু আব্দুল্লাহ মনে করেন, শুধু শিক্ষাঙ্গন নয় আরো অনেক ক্ষেত্রেই এই মামলার রায়ের ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তিনি বলেন ,"শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনেক হত্যা মামলারই বিচার ঝুলছে। কিন্তু এই মামলায় ৬০ জনের মধ্যে ৪৬ জন সাক্ষী দিয়েছেন। ছয় জন সাফাই সাক্ষী দিয়েছেন।  হলের কর্মচারিও সাক্ষী দিয়েছেন। চিকিৎসক সাক্ষী দিয়েছেন। ফলে ভবিষ্যতে অন্যান্য মামলায়ও সাক্ষীরা সহজেই নির্ভয়ে সাক্ষী দেবেন। আর সঠিক সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারলে যে বিচার পাওয়া যায় তা প্রমাণ হলো।”

আসামিদের আইনজীবীরা যদিও মনে করেন তারা ন্যায় বিচার পাননি, তারা এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন, তারপরও তারা মনে করেন, এই হত্যাকাণ্ডে প্রশাসনিক এবং রাজনৈতি ব্যর্থতা আছে। আসামিদের একজন আইনজীবী আমিনুল গনি টিটু বলেন, " যিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন এবং যে ২০ জনের ফাঁসির আদেশ হয়েছে, তারা সবাই বুয়েটের মেধাবী ছাত্র। ওই ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে কোনো ক্রিমিনাল রেকর্ড নেই। তাহলে বুয়েটে?র হলের প্রভোস্ট, হাউজ টিউটররা কী করেছেন? তারা দায় এড়াবেন কীভাবে? আর যদি কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা ও রাজনীতি দেশে থাকে, তার প্রভাব সবখানে পড়ে। এই বিষয়গুলো নিয়ে এখন ভাবার সময় এসেছে।”

তার মতে, "শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিং-এর নামে, রাজনীতির নামে নানা নির্যাতন, অন্যায় হয়। এর দায় সবাইকে নিতে হবে।”

আর এই রায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বড় ভাইদের "বড়ভাইগিরি” বন্ধ করবে বলে মনে করেন রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ