আবহাওয়ার পূর্বাভাষ
১৪ জুন ২০১২কর্নাটক রাজ্যের শুখা অঞ্চলে হড়কা বানে মারা যায় ৩৬ জন, নিখোঁজ হয় ৮৬ জন, ডুবে যায় ১১টি জেলা, বরবাদ হয়ে যায় কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল৷ গত বছর লাদাকেও হড়কা বানে মারা যায় বহু লোক, ধ্বংস হয় বহু ঘরবাড়ি৷
এল নিনো এবং লা নিনা খরা ও বন্যার সঙ্গে যুক্ত৷ এর অভিঘাত ইন্দোনেশিয়াও উত্তর অস্ট্রেলিয়ায় বেশি এবং ভারতে তুলনামূলকভাবে কম৷ আবার শ্রীলঙ্কায় ঠিক তার উল্টো৷ ভারতে বন্য হলে শ্রীলঙ্কায় হয় খরা৷ এর নির্ভুল পূর্বাভাষ দেয়া সম্ভব নয়৷ তাই ওড়িষায় ৯৯ সালের সুপার-সাইক্লোনের পূর্বাভাষ দেয়া যায়নি৷ আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার প্রভাব পড়ে দেশের কৃষি, বাণিজ্য, শিল্পোৎপাদন, পর্যটন, মৎসচাষ, এক কথায় সার্বিক অর্থনীতির ওপর৷
এই প্রসঙ্গে কলকাতার আবহাওয়া বিভাগের প্রধান বি দেবনাথ ডয়চে ভেলেকে বৃষ্টিপাতের তারতম্য সম্পর্কে বললেন, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কখনো বাড়ছে, কখনো কমছে৷ নির্দিষ্ট কোনো প্রবণতা কাজ করেনা৷ প্রতি বছরেই ওঠানামা আছে৷ কারণ গ্রীষ্মপ্রধান দেশে যে ধরণের বৃষ্টি হয় তার অন্তর্নিহিত কারণ, বায়ুমন্ডলের ‘ট্রপিক্যাল নেচার'৷
এবছর গোটা দেশে তাপপ্রবাহ অব্যাহত৷ এ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে তাপপ্রবাহে মারা গেছে প্রায় ১০০ জন৷ বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও ওড়িশায় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৬-৭ ডিগ্রি বেশি৷ তাপজনিত রোগে মারা গেছে কয়েকশো৷ এল নিনো'র সঙ্গে এর যোগসূত্র আছে বলে মনে করেন না আবহাওয়াবিদ দেবনাথ৷ সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা যদি হঠাৎ বেড়ে যায়, তাহলে অনেক সময় এশিয়া অঞ্চলে বৃষ্টির ওপর তার প্রভাব পড়ে৷ তারমানে এই নয় যে, এল নিনো হলেই এশিয়ার ‘মনসুন' খারাপ হবে৷ দেখা গেছে, এল নিনো হওয়া সত্ত্বেও ভারতে ভালো বৃষ্টি হয়েছে৷
বিশ্বের আবহাওয়াবিদদের মতে, খরা ও বন্যাজনিত বিপর্যয়ের প্রতিকার হল, জৈব বৈচিত্র্য যাতে ধ্বংস না হয় তার দিকে লক্ষ্য রাখা, ভূমিক্ষয় নিবারণ করা, নদীর পাড় মজবুত করা, নদীর নাব্যতা বজায় রাখা, বনভূমি সংরক্ষণ করা, দুর্নীতি মুক্ত প্রশাসন, বিভিন্ন এজেন্সির মধ্যে ঘনিষ্ট সমন্বয় এবং বৃষ্টিপাতের প্যাটার্নের ডেটা-বেস গড়ে তোলা এবং তা বিশ্লেষণ করা৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ