যে আফগান নাগরিকদের জার্মানিতে থাকার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, তাঁদের দেশে পাঠিয়ে দেয়ার কর্মসূচি আবারও শুরু করতে যাচ্ছে জার্মান কর্তৃপক্ষ৷ চলতি মাসের শুরুতে এই প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছিল৷
বিজ্ঞাপন
আফগানিস্তানের কাবুলে জার্মান দূতাবাসের কাছে আত্মঘাতী বোমা হামলার পর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল৷ সেই সময় বলা হয়েছিল, জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরবর্তীতে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেখবে৷ তাদের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে, বিতাড়ন প্রক্রিয়া আবারও শুরু হবে৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছিলেন, এই প্রক্রিয়া জুলাই পর্যন্ত স্থগিত থাকতে পারে৷
তবে জার্মানির সরকারি প্রচারমাধ্যম এনডিআর এবং ম্যাগাজিন ডের স্পিগেল বলছে, আগামী সপ্তাহের বুধবার লাইপশিস থেকে আফগানদের নিয়ে একটি ফ্লাইট কাবুলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিতে পারে৷
অবশ্য সরকারিভাবে এই তথ্য এখনও নিশ্চিত করা যায়নি৷
No future for Afghan deportees
02:45
জার্মানির অনেক রাজনীতিবিদ অবশ্য আফগানদের তাঁদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত সমর্থন করছেন না৷ সেই দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে তাঁরা এমন অবস্থান নিয়েছেন৷
এদিকে, চলতি মাসে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গাব্রিয়েল তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনার আহ্বান জানান৷ এই জঙ্গি গোষ্ঠীটি এখনও আফগানিস্তানের প্রায় ৪০ শতাংশ অংশ নিয়ন্ত্রণ করে বলে ধারণা করা হয়৷
পরিসংখ্যান
জার্মান পুলিশের বরাত দিয়ে ‘ডি ভেল্ট আম জন্টাগ' জানিয়েছে, চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়া ৮,৬২০ জন আশ্রয়প্রার্থীকে তাঁদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে৷ গত বছর ২৫ হাজারেরও বেশি জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল৷
এছাড়া এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ১১,১৯৫ জন আশ্রয়প্রার্থী স্বেচ্ছায় তাঁদের দেশে ফেরত গেছেন৷ গত বছর সংখ্যাটি ছিল ৫৪ হাজার ছয় জন৷ যাঁরা এভাবে দেশে চলে যেতে আগ্রহী হন, তাঁদের দেশে ফিরে যাওয়ার ভাড়াসহ অন্যান্য কিছু খরচের অর্থ দেয়া হয়৷
জীবন বাজি রেখে ইউরোপের পথে
অভিবাসনের আশায় বিভিন্ন দেশ থেকে অনেকেই ইউরোপে আসছেন৷ ইটালির ‘পাসো ডেলা মর্তে’ হয়ে ইউরোপের আরো উত্তরের দেশগুলোতে আসতে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন অনেকে৷ ফটোসাংবাদিক ফেডেরিকো স্কপা ছিলেন তেমন শরণার্থীদের সঙ্গে....
ছবি: DW/F.Scoppa
গহীন জঙ্গল, দুর্গম পথ
জঙ্গলের ভেতর দিয়ে সভয়ে এগিয়ে চলেছে আফগান কিশোরদের একটি দল৷ সব সময় ভয় – পুলিশ যদি দেখে ফেলে! এই ভয় নিয়ে, দুর্গম পাহাড়ি পথ ধরেই পেরোতে হবে ‘ডেথ পাস টু ফ্রান্স’৷ যাত্রা শেষ হতে এখনো ১২ কিলোমিটার বাকি৷
ছবি: DW/F.Scoppa
পদে পদে বিপদ
ইটালির ভেনটিমিগলিয়া শহর আর ফ্রান্সের মেতোঁর মাঝখান দিয়ে এক সময় হাইওয়ের টানেলের ভেতর দিয়ে, কখনো রেলপথ ধরে, কখনো বা গিরিপথ ধরে হেঁটে হেঁটে এগিয়ে যেতে হয়৷ যে কোনো মু্হূর্তেই ঘটে যেতে পারে সমূহ বিপদ৷
ছবি: DW/F.Scoppa
তীব্র গতি, দৃষ্টি ক্ষীণ
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের্ অনেকেই প্রাণ হাতে নিয়ে এই হাইওয়ে টানেল ধরে ধরে হেঁটে পৌঁছাতে চান ফ্রান্স৷ জীবনের ঝুঁকি তাদের প্রায় প্রতি পদক্ষেপে৷
ছবি: DW/F.Scoppa
প্রকৃতির আশ্রয়ে, প্রকৃতির ভরসায়
কীভাবে যেতে হবে তা না জেনে, সঙ্গে কোনো খাবার না নিয়েও ‘ডেথ পাস’ দিয়ে যাত্রা শুরু করেন অনেকে৷ প্রকৃতির উদারতাই তাদের একমাত্র ভরসা৷
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভারতীয় অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুখতে ফরাসি সরকার তৈরি করেছিল এই প্রাচীর৷ শান্তির পতাকাও ওড়ানো হয় তখন৷ ইটালি ও ফ্রান্স সীমান্তের এই এলাকটি অভিবাসন প্রত্যাশীদের খুব পরিচিত রুট৷
ছবি: DW/F.Scoppa
ওই দেখা যায়..
৩০০ মিটার দূরেই ‘ডেথ পাস’-এর শীর্ষ বিন্দু৷ সেদিকেই তাকিয়ে আছে সদ্য কৈশোর উত্তীর্ন তিন অভিবাসন প্রত্যাশী৷ এখানে অনেকেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে৷ পুলিশ ধরলেই ফিরিয়ে দেয় ইটালিতে৷