ইউরোপ থেকে বেরিয়ে যেতে আরেক দফা সময় বাড়ানোর আবেদন করবেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে৷ এজন্য চুক্তির বিষয়ে বিরোধী দলের নেতার সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি৷
বিজ্ঞাপন
ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে সৃষ্ট জটিলতার কোনো জট খুলতে পারছেন না ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে৷ ফলে এখন চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট কার্যকরের পথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশটি, যা এড়াতে মে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে আরেক দফা সময় বাড়ানোর আবেদন করবেন৷ মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার সদস্যদের সাথে সাত ঘণ্টার বৈঠক শেষে এমন আভাস দিয়েছেন তিনি৷ নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আগামী ১২ এপ্রিল ব্রেক্সিট কার্যকরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে৷
ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে হাজার কুকুরের প্রতিবাদ
যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ বন্ধের দাবিতে প্রায় এক হাজার কুকুর নিয়ে লন্ডনে পার্লামেন্ট অভিমুখে পদযাত্রা হয়েছে৷ ‘উফেরেনডাম’ নামের এই ক্যাম্পেইনের আয়োজকরা বলছেন, তারা ইইউ ছাড়লে পশুরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷
ছবি: Reuters/H. Nicholls
ইউরোপের নাগরিক
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে নিজেদের সম্পর্কের গভীরতা বোঝাতে ‘ইউরোপের নাগরিক’ লেখা প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে পাশে নিজের কুকুরটাকে ধরে আছেন একজন বিক্ষোভকারী৷
ছবি: Reuters/H. Nicholls
‘ঘেউ ঘেউ’ করছে ব্রেক্সিট
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে বিদ্রুপাত্মক নানা প্ল্যাকার্ড দেখা যায় লন্ডনে কুকুর নিয়ে পদযাত্রায়৷ একটি কুকুরের গলার সঙ্গে বেঁধে রাখা প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘ব্রেক্সিট ঘেউ ঘেউ করছে’৷
ছবি: Reuters/H. Nicholls
‘ভুগবে’ গৃহপালিত পশু
যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেলে পশু চিকিৎসক ও গৃহপালিত পশুর খাবারের সংকট দেখা দেবে– এই যুক্তি দেখিয়ে তার বিরোধিতা করেন বিক্ষোভকারীরা৷
ছবি: Reuters/H. Nicholls
‘উন্মাদ’
ব্রেক্সিটে নিজেদের ক্ষতির বিষয়গুলো তুলে ধরে এর পক্ষের তৎপরতাকে উন্মাদের কার্যকলাপ আখ্যায়িত করা হয় এই কর্মসূচিতে৷
ছবি: Reuters/H. Nicholls
মূত্রখানা
যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত নিতে ২০১৬ সালে গণভোটের প্রচারে ব্রেক্সিটের পক্ষে অবস্থান নেওয়া রাজনীতিকসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ধিক্কার জানানো হয় এই পদযাত্রায়৷ যাত্রাপথে বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ী ‘পি স্টেশন’ বানানো হয় ব্রেক্সিট সমর্থকদের ছবি রেখে, সেখানে কুকুরগুলোকে মূত্র ত্যাগে উৎসাহিত করা হয়৷
ছবি: Imago/Pacific Press Agency/L. Wateridge
ধিক্কার ফারাজে-বরিসকে
গণভোট সামনে রেখে ব্রেক্সিটের পক্ষের শিবিরে সবচেয়ে আলোচিত ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন এবং ইউকে ইন্ডিপেনডেন্স পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজে৷ এই দুজনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক্সিট সমর্থকের ছবি উপর কুকুরগুলোকে প্রস্রাব করিয়ে ধিক্কার জানানো হয় তাঁদের৷
ছবি: Imago/Pacific Press Agency/L. Wateridge
‘বন্ধ কর’ ব্রেক্সিট
ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া বন্ধ করতে দ্বিতীয় গণভোটের দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড লাগানো হয় কুকুরের শরীরে৷
ছবি: Reuters/H. Nicholls
অস্তিত্বে ইইউ
সমগ্র অস্তিত্বজুড়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন-এই বার্তা দিতেই নিজের ও প্রিয় কুকুরের শরীরজুড়ে জড়ানো হয়েছে ইইউ’র পতাকা৷
ছবি: Reuters/H. Nicholls
এক কাতারে নানা শ্রেণি-পেশা
লন্ডনে ব্রেক্সিটবিরোধী এই বিক্ষোভে সাধারণ মানুষের সঙ্গে রাস্তায় নামেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা৷ কর্মসূচির মধ্যে কুকুর কোলে অ্যালেস্টার ক্যাম্পবেল, যিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের কমিউনিকেশনস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি বিভাগের পরিচালক ছিলেন৷
টেলিভিশনে দেয়া বক্তৃতায় টেরেসা মে বলেন, ‘‘আর্টিকেল ফিফটি কার্যকরে আমাদের আরেক দফা সময় বাড়ানোর আবেদনের প্রয়োজন হবে৷ এটি হবে স্বল্প সময়ের জন্য এবং এটি শেষ হবে চুক্তি পাসের মাধ্যমে৷''
তবে কোনো পরিষ্কার পরিকল্পনা ছাড়া সময় বাড়ানোর ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এই সময়সীমা কেন বৃদ্ধি করা হবে, সে বিষয়ে আমাদের পরিষ্কার হতে হবে, যাতে আমরা নির্দিষ্ট সময় এবং একটি নিয়মের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারি৷''
এদিকে, ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে আপাতত তিনটি সম্ভাবনা খোলা রয়েছে ব্রিটেনের জন্য৷ সেক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে কোনো চুক্তি ছাড়াই ১২ এপ্রিল ব্রিটেন বের হয়ে আসবে৷ কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিরা প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র উপর সেই পথ বেছে নিতে চাপ দিচ্ছেন৷ প্রধানমন্ত্রী চতুর্থবারের মতো সংসদে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদনের চেষ্টা চালাতে পারেন৷ তবে তার জন্য স্পিকারের সম্মতি ও প্রয়োজনীয় ঐকমত্য অর্জন করা প্রয়োজন৷ সেই প্রচেষ্টায় আবার ব্যর্থ হলে মে ইইউ-র কাছে দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে ব্রেক্সিট মূলতুবি রাখার আবেদন জানাতে পারেন৷ সে ক্ষেত্রে ব্রিটেনকে আসন্ন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে হবে৷
সব মিলিয়ে কীভাবে ব্রেক্সিট কার্যকর করা হবে তা নিয়ে বিরোধী দলের সাথে যেমন মতৈক্য নেই, তেমনি নিজ দলের ভেতরেও মে প্রয়োজনীয় সমর্থন পাচ্ছেন না৷ এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তিনি কাটাতে চান বলে ঘোষণা দিয়েছেন৷ বলেন, ‘‘আমি এই অচলাবস্থা ভাঙার উদ্যোগ নিচ্ছি৷ বিরোধী দলের নেতার সাথে আমি বসতে চাই৷ একটি পরিকল্পনা বিষয়ে একমত হতে চাই, যা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করবে৷'' চুক্তির মধ্য দিয়েই ব্রেক্সিট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে তিনি তাঁর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন৷ ‘‘ইইউর সাথে আমাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক কী হবে, সে বিষয়ে আমাদের নজর দিতে হবে৷''
মে বলেন, তিনি বিরোধী দলীয় নেতার সাথে আলোচনার মাধ্যমে একটি চুক্তি সংসদে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করতে চান৷ প্রয়োজনে আবারো একাধিক প্রস্তাব নিয়ে সংসদে যাওয়ার কথা বলেন তিনি৷
ব্রেক্সিটের পর ইউরোপ-প্রেম বাড়ছে
ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোটের এক বছর পর ইইউ সম্পর্কে ব্রিটেন তথা ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির মানুষের মনোভাব অনেক ইতিবাচক হয়ে উঠেছে৷ ‘দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বোঝা যায় না’ – এই প্রবাদ ফলে যাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Schreiber
শীর্ষে জার্মানি ও ফ্রান্স
ইউরোপীয় ইউনিয়নের চালিকা শক্তি বলে পরিচিত দেশ জার্মানি (৬৮ শতাংশ) ও ফ্রান্সের মানুষ (৫৬ শতাংশ) কিছু সমালোচনা ও সংশয় সত্ত্বেও বরাবর ইইউ সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন৷ ব্রেক্সিট গণভোটের পর সেই সমর্থন আরও ১৮ শতাংশ বেড়ে গেছে৷ পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে৷
ছবি: Reuters/H.Hanschke
ব্রিটেনের ভোলবদল
গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করার রায় দেওয়ার পর ব্রিটেনের অনেক মানুষের টনক নড়েছে৷ এখন ৫৪ শতাংশ মানুষ ইইউ সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছেন৷ অর্থাৎ এক ধাক্কায় সমর্থন ১০ শতাংশ বেড়ে গেছে৷ তবে তার ফলে ইইউ থেকে বিচ্ছেদের প্রক্রিয়ায় নড়চড় হবার সম্ভাবনা কম৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Tallis
পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরি
কট্টর জাতীয়তাবাদী ও ইইউ-বিরোধী সরকার ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও পোল্যান্ড (৭৪ শতাংশ) ও হাঙ্গেরির মানুষ (৬৭ শতাংশ) কিন্তু সমীক্ষায় ইইউ সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন৷ বাকি অনেক দেশের তুলনায় তাঁরা বরং এ ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Schreiber
অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুফল
মন্দার ধাক্কা সামলে ইউরোপের অনেক দেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে৷ যেমন নেদারল্যান্ডসের ৮৭ শতাংশ মানুষ এর ফলে সন্তুষ্ট৷ জর্জরিত অর্থনীতি আবার চাঙ্গা হয়ে ওঠায় স্পেনের মানুষের মধ্যেও ইইউ সম্পর্কে উৎসাহ অনেক বেড়ে গেছে৷
ছবি: Getty Images/T. Lohnes
গ্রিস ও ইটালিতে হতাশা
অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত দেশ গ্রিসের মানুষ এখনো ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশায় ভুগছেন৷ তাই ইউরোপ সম্পর্কে মাত্র ৩৩ শতাংশ মানুষ তাঁদের উৎসাহ প্রকাশ করেছেন৷ ইটালির অর্থনীতির অবস্থাও ভালো নয়৷ তবে তা সত্ত্বেও সেখানে ৫৬ শতাংশ মানুষ ইইউ-বান্ধব বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/L. Gouliamaki
শরণার্থী সংকট
তুরস্কের সঙ্গে ইইউ-র চুক্তির কারণে শরণার্থীর ঢল কমে যাওয়ায় ইউরোপের অনেক মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন৷ তাঁদের অনিশ্চয়তার সুযোগ নিয়ে বেশ কিছু ‘পপুলিস্ট’ দল ইউরোপবিরোধী আবেগ সৃষ্টি করার চেষ্টা চালিয়ে এসেছে৷ পরিস্থিতির উন্নতির ফলে তাদের প্রতি সমর্থন অনেক কমে গেছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/L. Pitarakis
6 ছবি1 | 6
স্বাগত জানিয়েছেন কর্বিন
মের আলোচনার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা জেরেমি কর্বিন৷ তিনি আগ্রহ নিয়েই মের সাথে আলোচনা করবেন বলে উল্লেখ করেন৷ যদিও সমালোচনা করে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত মে সমঝোতার তেমন কোনো লক্ষণ দেখাননি৷ ইউরোপের সাথে বিচ্ছেদ পরবর্তী সম্পর্ক নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও একটি চুক্তির মধ্য দিয়ে ব্রেক্সিট কার্যকরের বিষয়ে তিনি মে'র সাথে একমত৷
লেবার পার্টি প্রধান বলেন, ইইউ'র সাথে অবশ্যই চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে হবে যাতে ব্রিটেনের জনগণ বিপর্যয়ে না পড়ে৷ লেবার পার্টির পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব তুলে ধরার কথাও বলেছেন কর্বিন, যাতে পরিবেশ সংরক্ষণ ও শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার মাধ্যমে ইইউর সাথে ব্রিটেনে আন্তরিক সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে জোর দেয়া হবে৷
ইইউর প্রতিক্রিয়া
ব্রেক্সিটকে ঘিরে ব্রিটেনের চলমান অচলাবস্থায় হতাশ ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ তবে মে'র নতুন উদ্যোগের ঘোষণা ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক, যা বিবেচনায় নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি ধৈর্য্য ধরার আহবান জানান৷ ডাউনিং স্ট্রিটে মে বক্তৃতা দেয়ার পরই একটি টুইট বার্তায় এই অভিমত প্রকাশ করেন তিনি৷ যার মাধ্যমে মের কাছ থেকে একটি পরিষ্কার পরিকল্পনা শুনতে ইইউর অপেক্ষার বিষয়টির ইঙ্গিত মিলছে৷ ‘‘এমনকি আজকের পরও আমরা জানি না চূড়ান্ত ফলাফল কী হবে, আসুন আমরা সবাই ধৈর্য্য ধরি,'' বলেছেন টুস্ক৷ ইউরোপের দেশগুলো বরাবরই চুক্তির মাধ্যমে বিচ্ছেদ কার্যকরের উপর জোর দিয়ে আসছে৷
জার্মানির অর্থমন্ত্রী পেটার আল্টমায়ার বলেন, ‘‘ইইউ এবং ব্রিটেন শেষ মুহূর্তেও একটি চুক্তির মাধ্যমে বিপর্যয় এড়াতে পারে৷ কেননা এর সাথে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের বিষয় জড়িত৷'' দেশটির দৈনিক সংবাদপত্র দ্যা বিল্ডকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ব্রিটেনকে বিচ্ছেদ কার্যকরে প্রয়োজনে দীর্ঘ সময় দেয়ার পক্ষে নিজের মত তুলে ধরেন তিনি৷ তবে শেষ পর্যন্ত ব্রিটেন চুক্তি ছাড়া বিচ্ছেদ ঘটালে তার ধাক্কা সামাল দিতে জার্মান সরকার বিশদ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলেও জানান তিনি৷