জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হোর্স্ট সেহোফার তুরস্ককে সহায়তা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন যে নতুবা আবারো শরণার্থী সংকট দেখা দিতে পারে যা ২০১৫ সালের তুলনায় বড় হবে৷
বিজ্ঞাপন
ইউরোপ ২০১৫ সালের চেয়েও বড় শরণার্থী সংকটের মুখোমুখি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হোর্স্ট সেহোফার৷ গ্রিসে সরকারি সফরকালে এই মন্তব্য করেছেন তিনি৷ ইউরোপীয় কমিশনের আগামী প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েনের সঙ্গে দেশটি সফর করেছেন সেহোফার৷ তিনি মনে করেন যে ইইউর উচিত তুরস্ককে আরো সহায়তা করা যাতে শরণার্থীরা বিপজ্জনক পথ পাড়ি দিয়ে গ্রিসে যাওয়ার চেষ্টা না করে৷
‘‘আমাদের উচিত ইইউর বাহ্যিক সীমান্তগুলো পাহারা দিতে ইউরোপীয় সঙ্গীদেরকে আরো সহায়তা করা৷ আমরা অনেক দিন ধরে তাদেরকে দূরে সরিয়ে রেখেছি,'' বিল্ড আম স্যোনটাগ পত্রিকাকে বলেন জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷
কোন কোন দেশের শরণার্থী বেশি?
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর তথ্য অনুযায়ী সারা বিশ্বে এখন ২ কোটি ৫৯ লাখ শরণার্থী রয়েছে৷ এর মধ্যে
কোন দশটি দেশের শরণার্থী সবচেয়ে বেশি? দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: picture-alliance/AP Photo/P. Karadjias
১০. বুরুন্ডি
ইউএনএইচসিআর বলছে, ২০১৮ সালে সারা বিশ্বের অন্তত সাত কোটি ৮০ লাখ মানুষ সংঘাত, সহিংসতা বা নির্যাতনের কারণে ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে৷ আফ্রিকার দেশ বুরুন্ডির অনেক মানুষই এখন দেশছাড়া৷ ২০১৭ সালে এমন মানুষের সংখ্যা ছিল তিন লাখ ৮৭ হাজার ৯০০৷২০১৮ সালে তা বেড়ে হয়েছে চার লাখ ৩৯ হাজার ৩০০৷
ছবি: DW/Prosper Kwigize
৯. ইরিত্রিয়া
উত্তর আফ্রিকার দেশ ইরিত্রিয়ার চার লাখ ৮৬ হাজার ২০০ মানুষ শরণার্থীর জীবন মেনে নিয়েছিল ২০১৭ সালে৷ ২০১৮ সালে সংখ্যাটি পাঁচ লাখ সাত হাজার ৩০০ হয়েছে৷
ছবি: DW/M. Haileselassie
৮. সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক
সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের শরণার্থী সংখ্যা ২০১৭ সালের পাঁচ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ থেকে বেড়ে ২০১৮ সালে পাঁচ লাখ ৯০ হাজার ৯০০ হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/D. Belluz
৭. ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো
২০১৮ সালে সেন্ট্রাল আফ্রিকার এই দেশের শরণার্থীও বেড়েছে৷ সংখ্যাটি এখন সাত লাখ ২০ হাজার ৩০০৷
ছবি: Imago Images/Xinhua/A. Uyakani
৬. সুদান
সুদানের শরণার্থীর সংখ্যাও বেড়ে চলেছে৷ ২০১৭-র ছয় লাখ ৯৪ হাজার ৬০০ ২০১৮ সালে বেড়ে সাত লাখ ২৪ হাজার ৮০০ হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/B. Curtis
৫. সোমালিয়া
আফ্রিকার আরেক দেশ সোমালিয়ারও একই অবস্থা৷ ২০১৭ সালে সেই দেশের শরণার্থী ছিল নয় লাখ ৪৯ হাজার ৭০০ জন, এক বছর পর তা বেড়ে নয় লাখ ৮৬ হাজার ৪০০-তে ঠেকেছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/F. Abdi Warsameh
৪. মিয়ানমার
ইউএনএইচসিআর-এর তথ্য অনুযায়ী এ মুহূর্তে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে অন্য দেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ১১ লাখ৷ বলা বাহুল্য, এর বেশিরভাগ এখন বাংলাদেশে৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Sarkar
৩. সাউথ সুদান
সাউথ সুদানের শরণার্থী সংখ্যা কিছুটা কমেছে৷ ২০১৭ সালে সে দেশের মোট শরণার্থী ছিল ২৪ লাখ, ২০১৮ সালে কমে ২৩ লাখ হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/D. Kitwood
২. আফগানিস্তান
সার্বিক পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো মনে হলেও আফগান শরণার্থী কিন্তু বেড়েছে৷ ২০১৭ সালে ছিল ২৬ লাখ, ২০১৮-তে হয়েছে ২৭ লাখ৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Qureshi
১. সিরিয়া
ইউএনএইচসিআর-এর হিসেব অনুযায়ী সিরিয়ার শরণার্থীই সবচেয়ে বেশি৷ ২০১৭ সালে সেই দেশের শরণার্থীর সংখ্যা ছিল ৬৩ লাখ, ২০১৮ সালে তা বেড়ে ৬৭ লাখ হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/Xinhua/M. Abu Ghosh
10 ছবি1 | 10
সেহোফার মনে করেন ইউরোপকে এমন একটি সংকট এড়াতে হবে যেটির জন্য অঞ্চলটি প্রস্তুত নয়৷ এক্ষেত্রে ২০১৫ সালে হঠাৎ বেশ কয়েক লাখ শরণার্থীর ইউরোপের প্রবেশের কথা মনে করিয়ে দেন তিনি৷ সেসময় জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল দশলাখের বেশি সিরীয় শরণার্থীর জন্য জার্মানির সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন৷ চ্যান্সেলরের এই সিদ্ধান্তের ঘোর বিরোধী ছিলেন সেহোফার৷ এমনকি প্রকাশ্যেও তিনি ম্যার্কেলের এই নীতির কড়া সমালোচনা করেছেন৷
জার্মানির বাভারিয়া রাজ্যের এই রক্ষণশীল রাজনীতিবিদ মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া এবং আফ্রিকা থেকে ইউরোপমুখী শরণার্থীদের তুরস্কে আশ্রয় দেয়ার পক্ষপাতি৷ এজন্য ইউরোপের তুরস্ককে আরো সহায়তা করা উচিত বলে জানিয়েছেন তিনি৷
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে সিরীয় শরণার্থীদের সহায়তার উদ্দেশ্যে তুরস্ককে এক চুক্তির আওতায় ছয় বিলিয়ন ইউরো দিতে সম্মত হয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ তবে, তখন থেকেই এই অভিযোগও রয়েছে যে আঙ্কারা চুক্তির শর্ত অনুযায়ী রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত নেয়নি৷