1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আবারো সন্ত্রাসী হামলা, ফুঁসছে ভারত

৯ সেপ্টেম্বর ২০১১

একদিকে সরকারি স্তরে দুর্নীতি, অন্যদিকে মুদ্রাস্ফীতি – এই দুটি বিষয়ই ভারতীয়দের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টিতে যথেষ্ট৷ সঙ্গে আবার যোগ হচ্ছে একের পর এক সন্ত্রাসী হামলা৷ সেদেশের রাজনীতিবিদদের করুণ দশাও ক্রমশ ফুটে উঠছে জনগণের সামনে৷

দিল্লি হামলায় আহত একজনছবি: dapd

বুধবার ভারতের নতুন দিল্লিতে হাইকোর্টে বোমা হামলার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১২৷ আহত অন্তত ১০০৷ ২০০৮ সালের নভেম্বরে মুম্বইয়ে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে ভারত যেন শান্ত হতে পারছে না৷ সে হামলায় প্রাণ হারিয়েছিল ১৬৬ ব্যক্তি৷ এরপর ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পুনে শহরে বোমা হামলা, নিহত ১৭৷ পরবর্তীতে বেনারস এবং নতুন দিল্লিতে বিস্ফোরণ এবং গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে৷ চলতি বছরের জুলাইয়ের মুম্বইয়ের আবারো সিরিজ বোমা হামলা, নিহত ২৬৷

বিশেষজ্ঞদের মতই সাধারণ ভারতীয়রাও এখন মনে করছে, বুধবার হাইকোর্টে বোমা হামলা কার্যত নিরাপত্তা ব্যবস্থার দৈন্যদশাকেই ফুটিয়ে তুলছে৷ রাজধানীর কেন্দ্রে অত্যন্ত সুরক্ষিত হাইকোর্ট এলাকায় এমন হামলা যে ঘটতে পারে, সেটা অনেকের কাছেই অবিশ্বাস্য ছিল৷ বোমা হামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অবশ্য সেখানকার পরিস্থিতি আবারো স্বাভাবিক হয়ে গেছে৷ কোর্টের কার্যক্রমও চলছে৷ আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থী, আইনজীবীদের ভীড় চোখের পড়ার মতো৷ তাদের পাশাপাশি কোর্ট চত্বরে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন বোমা হামলার তদন্তকারী এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা৷

ছবি: AP

গত মে মাসে হাইকোর্টের আরেকটি গেটের কাছে গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ ঘটে৷ তখন ক্ষতি অবশ্য খুব একটা হয়নি, তবে সেটা এক সতর্কবার্তা ছিল৷ আইনজীবীদের অভিযোগ, পুলিশ সেই হামলাকে গুরুত্ব সহকারে নেয়নি৷ বাড়তি সতর্কতা হিসেবে ক্লোজ সার্কিট টিভি ক্যামেরা বসানো হয়নি৷ গেটে বসানো মেটাল ডিটেকটর এবং স্ক্যানারগুলো ঠিকভাবে কাজ করছে না বলেই অভিযোগ৷

এক আইনজীবী বলেন, নিরাপত্তা বাড়ালে এই বিয়োগান্তক ঘটনা এড়ানো যেত৷ অথচ বরাবরের মতো, সরকারের এই বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা নেই৷ শুধু আশ্বাস বাণী শুনিয়েই ক্ষান্ত সরকার৷

তিনি বলেন, এই আশ্বাস যথেষ্ট নয়৷ সন্ত্রাসবাদের কারণে সাধারণ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে৷

ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং অবশ্য সরল মনেই স্বীকার করেছেন, সন্ত্রাসীরা নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বল দিকগুলো খুঁজে বের করে সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি. চিদাম্বরম স্বীকার করেছেন, দিল্লিতে উচ্চ সতর্কতার মাঝেই সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে৷

সন্ত্রাসী হামলার আহতদের দেখতে হাসপাতালে গিয়ে জনগণের রোষের মুখে পড়েন সিং এবং রাহুল গান্ধী৷ আহতদের পরিবারবর্গ এবং হাসপাতালে অবস্থানরতদের প্রশ্নবানের মাঝ থেকে নীরবে বেরিয়ে আসেন সিং৷

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতির সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসীরা ভবিষ্যতে আবারো মাথাচাড়া দিতে পারে৷ এই অবস্থার পরিবর্তনে সরকারের আরো জোর পদক্ষেপ প্রয়োজন৷

বলাই বাহুল্য, ভারতের ১.২ বিলিয়ন মানুষের সুরক্ষায় মাত্র পাঁচ হাজার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা কাজ করছেন৷ নতুন দিল্লি ভিত্তিক ইন্সটিটিউট অফ কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্ট এর পরিচালক অজয় সানি জানান, গোয়েন্দারা একইসঙ্গে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন৷ তাদেরকে রাজনৈতিক বিষয়ে গোয়েন্দাগিরি করতে হচ্ছে, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গতিবিধির দিকে নজর রাখতে হচ্ছে আবার সামাজিক উদ্বেগের দিকেও চোখ রাখছে তারা৷

সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ভারতকে তাই আরো বড়, সুগঠিত, একনিষ্ঠ গোয়েন্দা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে বলে মনে করেন অজয়৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ