1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আবারো আসছে বন্যা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৯ জুলাই ২০২০

করোনা মহামারির মধ্যে দ্বিতীয় দফা বন্যার আশঙ্কার করছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। প্রথম দফার বন্যার পানি কিছুটা কমে এলেও আবার বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহ এটা অব্যাহত থাকবে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।

Hochwasser in Rangamati, Bangladesh
ফাইল ছবিছবি: DW/H. Chakma

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী জনিয়েছেন, "এবারে বন্যা চার সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে। পুরনো জেলা গুলোর সাথে আরো নতুন জেলা বন্যা প্লাবিত হওয়া আশঙ্কা আছে।”

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বৃহস্পতিবার জানিয়েছে,  ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকলেও আগামী ২৪ ঘন্টায় তা বাড়তে শুরু করবে। মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি কমতে থাকলে আগামী ২৪ ঘন্টায় তা আবার বাড়তে শুরু করবে। পদ্মা এবং গঙ্গা নদীর পানি আগামী ২৪ ঘন্টা স্থিতিশীল থাকার পর বাড়তে পারে। দেশের প্রধান চারটি নদীর পানি এখনো বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের  নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান ভু্ইঁয়া জানান,‘‘ গত মাসের বন্যা প্রায় স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে এসেছিলো। কিন্তু দেশের উজানে আবার নদ নদীর পানি বাড়ছে। তাই আমরা আসছে সপ্তাহেই আরো একটি বড় বন্যার আশঙ্কা করছি।”

মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান ভু্ইঁয়া

This browser does not support the audio element.

বৃষ্টিপাতের কারণেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকেই  সারাদেশে বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে গেছে।  সেই কারণেই দুই-একদিনের মধ্যেই নদীর পানি বাড়বে। দেশের প্রধান প্রধান নদী ব্রহ্মপুত্র , যমুনা, পদ্মা, গঙ্গা, সুরমা, কুশিয়ারা, তিস্তা, ধরলা এইসব নদীর পানি সামনের সপ্তাহ থেকেই বাড়বে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের উত্তর , উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলের কমপক্ষে ২৭ টি জেলায় প্রবল বন্যা দেখা দিতে পারে।

 আরিফুজ্জামান বলেন,” আগের বন্যার পানি এখনো পুরোপুরি নামেনি । এই পরিস্থিতিতে দ্বিতীয়বার বন্যা ওই অঞ্চলের মানুষকে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে ফেলবে।”

বৃহস্পতিবার থেকেই সারাদেশে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আবাহাওয়া অফিস জানায়, এই বৃষ্টিপাত সপ্তাহ ধরে অব্যাহত থাকবে। আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম জানান," রংপুর ময়মনসিংহ এবং চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ এলকায় ভারী বৃষ্টি হবে আগামী ২৪ ঘন্টায়। খুলনা ও বরিশাল বিভাগের জন্যও একই পূর্বাভাস। আর বরিশালের কিছু কিছু জায়গায় ভারী বৃষ্টি হবে।”

গত মাসে শুরু হওয়া বন্যায় ১৫ টি জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জেলাগুলো হলো: কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর ও মাদারীপুর। কিন্তু এবার ওইসব জেলাসহ আরো বেশি এলাকা প্লাবিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নদ-নদীর পানি আরো বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত হবে।

ডা. এনামুর রহমান

This browser does not support the audio element.

ওই সব এলাকার মানুষ  পানিবন্দি অবস্থা থেকে উদ্ধার পেয়ে কেউ কেউ বাড়িতে ফিরলেও নতুন বন্যার আশঙ্কায় তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। উত্তরের গাইবান্ধা, ও কুড়িগ্রামসহ কয়েক জেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারা বাঁধ এবং আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যার সময় আশ্রয় নেয়ায় নানা রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত হয়েছেন। বিশেষ করে করোনার মধ্যে তারা সামাজিক দূরত্ব  বজায় রাখতে পারেন না। সরকারি ত্রাণ তৎপরতা থাকলেও খাদ্য ও চিকিৎসার সংকট দেখা দিয়েছে । আর পানীয়জল ও স্যানিটেশনের তীব্র সংকট চলছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান জানান, "১১ জুলাই থেকে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। এবার ২৭টি জেলা বন্যা কবলিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বন্যা মোট চার সপ্তাহ থাকতে পারে। দুই সপ্তাহ পানি বাড়বে এবং নেমে যেতে আরো দুই সপ্তাহ লাগবে।” তাই বৃহস্পতিবার আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে প্রচলিত সহায়তার পাশাপাশি ২৩ জেলায় অতিরিক্ত সহায়তা পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসকদের চিঠি পাঠানো হয়েছে।  ২৩ জেলায় চার হাজার ৬০০ মেট্রিক টন চাল, নগদ টাকা ৬৯ লাখ টাকা, শিশু খাদ্যের জন্য ৪৬ লাখ টাকা ও গো খাদ্যের জন্য ৪৬ লাখ টাকা এবং ৪৬ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ করা হয়েছে।

ছবিঘরে দেখুন ২০১৯ সালের বড় বড় সব দুর্যোগ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ