বুন্ডেসলিগায় এবার ইতিহাস গড়ার সুযোগ পাচ্ছে জার্মানির বাভেরিয়া রাজ্যে অবস্থিত বিখ্যাত ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ৷ কয়েকটি ম্যাচ হাতে রেখেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করতে পারে দলটি৷
বিজ্ঞাপন
শনিবার মাইনৎস-এর বিরুদ্ধে ম্যাচে যদি বায়ার্ন জেতে এবং একই সময়ে বোরুসিয়া ডর্টমুন্ড এবং শাল্কে পয়েন্ট হারায়, তবেই ইতিহাস গড়তে পারে বায়ার্ন৷ গত মৌসুমে ছয়টি ম্যাচ বাকি থাকতেই শিরোপা জেতে দলটি৷ এবার সেই সংখ্যাটা হতে পারে আটটি ম্যাচ হাতে রেখেই৷
বলা যেতে পারে, টানা ৫০টি ম্যাচে অপ্রতিরোধ্য বায়ার্ন এখন বাতাসে ভাসছে৷ মাইনৎস-এর বিরুদ্ধেও গত তিনটি ম্যাচে জয়ী হয়েছে বায়ার্ন৷ আর প্রতিটিতেই জয় ছিল তিন গোলের ব্যবধানে৷ সবশেষ ২০১১ সালের ২৭শে নভেম্বর বায়ার্নের বিপক্ষে জিতেছিল মাইনৎস৷ তবে মাইনৎস-এর কোচ টোমাস টুখেল-এর হিসাবটা আবার ভিন্ন রকম৷ বায়ার্নের বিপক্ষে তাঁর জয়ের রেকর্ডটা ৩৩ শতাংশ৷ বুন্ডেসলিগার সব কোচের চেয়ে তাঁর রেকর্ডই সেরা৷
বুন্ডেসলিগার সাবেক তারকারা
বুন্ডেসলিগার গত ৫০ বছরের তারকারা
ছবি: picture-alliance/Pressefoto UL
উভে জেলার
১৯৬৩ সালে জার্মান ফুটবল লিগ বুন্ডেসলিগার খেলা শুরু হওয়ার আগেই হামবুর্গ দলের ফরোয়ার্ড উভে জেলার খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত ছিলেন৷ তখন তাঁকে সবাই আদর করে ডাকতেন ‘আমাদেরই উভে’ বলে৷ ১৯৫৪ সাল থেকে তিনি জাতীয় দলে খেলতেন৷ বুন্ডেসলিগার ২৩৯ ম্যাচে অংশগ্রহণ করে ১৩৭টি গোল করেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
গ্যার্ড ম্যুলার এবং ফ্রানৎস বেকেনবাওয়ার
গ্যার্ড ম্যুলার (বাঁয়ে) বুন্ডেসলিগার ৪২৭ খেলায় ৪৬৫ গোল করেন৷ তাঁর এই অবিশ্বাস্য গোল করার ক্ষমতার জন্য তাঁকে ‘বোম্বার’ বলা হতো৷ ফ্রানৎস বেকেনবাওয়ার (ডানে) ও গোল জেপ মায়াযের সাথে মিলে ১৯৬৫ থেকে সত্তরের দশকের শেষ পর্যন্ত তিনি বায়ার্ন মিউনিখ দলের হয়ে বহু শিরোপা জেতেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
গ্যুন্টার নেৎসার এবং ভল্ফগাং ওবারাথ
জার্মান জাতীয় দলে ভল্ফগাং ওবারাথ (ডানে) গ্যুন্টার নেৎসারের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন৷ তবে নেৎসার এফসি কোলন দলের ওবারাথের চেয়ে বোরুসিয়া ম্যোয়েনশেনগ্লাডবাখের হয়ে বুন্ডেসলিগায় একটি শিরোপা বেশি জেতেন৷ ১৯৭৩ সালে নেৎসার স্পেনের রেয়াল মাদ্রিদ এবং পরে সুইজারল্যান্ডের ফুটবল লিগে যোগদান করেন৷ কিন্তু ওবাররাথ বুন্ডেসলিগার কোলন দলেই থেকে যান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ক্লাউস ফিশার
শালকে দলের ফরোয়ার্ড ফিশারও গোল করায় পারদর্শী ছিলেন৷ কিন্তু গ্যার্ড ম্যুলারের সময়ে সক্রিয় থাকায় সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় তাঁকে সবসময় দ্বিতীয় স্থানেই থাকতে হয়েছে৷ বুন্ডেসলিগায় তিনি ৫৩৫ খেলায় অংশ নিয়ে ২৬৮টি গোল করেন৷
ছবি: picture-alliance/WEREK
কেভিন কেগেন
ছোটোখাটো মানুষটি ১৯৭৭ সালে হামবুর্গ দলে যোগ দেন এবং খুব তাড়াতাড়িই দর্শকদের নজর কাড়েন৷ ‘মাইটি মাউস’ হিসেবে পরিচিত কেগেন ৯০ খেলায় অংশ নিয়ে ৩২টি গোল করেন৷ সংগীত জগতেও তিনি অবদান রেখেছেন৷ সে সময় তাঁর গাওয়া ‘হেড ওভার হিলস ফর লাভ’ গানটি জার্মানির হিট গানের তালিকায় দশম স্থান অধিকার করেছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/dpaweb
হারাল্ড ‘টনি’ শুমাখার
১৫ বছর ধরে এফসি কোলন দলের গোলরক্ষক ছিলেন শুমাখার৷ এরপর ‘আনফিফ’ বা ‘হুইসেল’ নামে তাঁর একটি বিতর্কিত বই প্রকাশিত হওয়ার পর ১৯৮৭ সালে তাঁকে খেলোয়াড় হিসেবে সাসপেন্ড করা হয়৷ তবে পরে তিনি শালকে, ইস্তাম্বুল, মিউনিখ এবং ডর্টমুন্ডে খেলেন৷ শুমাখার বুন্ডেসলিগার মোট ৪৬৪ টি খেলায় অংশগ্রহণ করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
লোথার মাথিউস
জার্মান জাতীয় দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড মাথিউসের৷ বুন্ডেসলিগায়ও তিনি দীর্ঘ ২১ বছর ধরে খেলেছেন৷ ১৯৭৯ সালে বুন্ডেসলিগায় প্রথম খেলা শুরু করার পর তিনি বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেন৷ বুন্ডেসলিগায় তিনি ৪৬৪ খেলায় অংশ নিয়ে ১২১ গোল করেন৷
ছবি: imago/Uwe Kraft
রুডি ফ্যোলার
১৯৮২ সালে তিনি ভের্ডার ব্রেমেন দলের হয়ে খেলা শুরু করেন৷ অল্পদিনের মধ্যেই তিনি তারকা হয়ে ওঠেন৷ পরে রোম এবং ফ্রান্সের মার্সেই দলেও খেলেছেন তিনি৷ এরপর আবারও বুন্ডেসলিগায় ফিরে বায়ার লিভারকুজেন দলের ক্রীড়া পরিচালক হন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইয়োর্গেন ক্লিসমান
ক্লিসমান জার্মানির স্টুর্টগার্ট, বায়ার্ন মিউনিখ, ইটালির মিলান, মোনাকো, ইংল্যান্ডের টটেনহ্যাম, জেনুয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া দলে খেলেছেন৷ বুন্ডেসলিগায় ২২১টি খেলায় ক্লিসমানের গোল সংখ্যা ১১০টি৷ বর্তমানে তিনি মার্কিন জাতীয় দলের কোচ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অলিভার কান
বায়ার্ন মিউনিখ দলের গোলরক্ষক হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন খেলেছেন৷ জার্মান জাতীয় দলেরও একজন খ্যাতিমান গোলরক্ষক হিসেবে কান পরিচিত ছিলেন৷ বেশ কয়েকবার জার্মান লিগ শিরোপা অর্জন করেন তিনি৷একসময় তিনি জার্মান জাতীয় দলের ক্যাপ্টেনও ছিলেন৷
ছবি: AP
মিশায়েল বালাক
নামি ফুটবল খেলোয়াড় বালাকের ফুটবল জীবন কখনও পূর্ণতা পায়নি৷ তাঁকে গণ্য করা হয় দ্বিতীয় স্থান অধিকারী তারকা হিসেবে৷ কারণ তিনি বিশ্বকাপ শিরোপা বা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশীপ – কোনটাই অর্জন করতে পারেননি৷ তবে বুন্ডেসলিগায় ২৬৭টি খেলায় অংশগ্রহণ করে ৭৭টি গোল করেন৷ মিশায়েল বালাক মোট চারবার লিগ শিরোপা জেতেন৷
ছবি: picture-alliance/Pressefoto UL
11 ছবি1 | 11
এদিকে, বায়ার্ন মিউনিখ ক্লাবের সাবেক ম্যানেজার ও প্রেসিডেন্ট উলি হ্যোনেস খুব শিগগিরই কারাভোগ করবেন৷ হয়ত এই সপ্তাহটাই কেবল মুক্ত থাকছেন তিনি৷ কর ফাঁকি দেওয়ায় তাঁকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল৷ বায়ার্ন টিমের সাফল্যের পেছনে উলি হ্যোনেসের অবদান অনেক৷
অন্যদিকে, ডর্টমুন্ড তাদের গত দুটি ম্যাচ হেরেছে৷ আর দুটিই নিজেদের মাঠে৷ লিগে ডর্টমুন্ডের পয়েন্ট এখন ৪৮, অবস্থান দ্বিতীয়৷ ডর্টমুন্ডের চেয়ে এক পয়েন্ট পিছিয়ে ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে শাল্কে৷