আবার কখন বাজবে সেই ঘণ্টা!
২৩ আগস্ট ২০২১করোনা মহামারির শুরু থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা সংক্রমণ ও নিহতের সংখ্যা প্রকাশ করছে জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনাভাইরাস রিসোর্চ সেন্টার৷ তাদের হিসেবে (https://coronavirus.jhu.edu/map.html) গত ২৮ দিনে যুক্তরাষ্ট্রে ৩২ লাখ ৬৫ হাজার ৯৮৯ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন৷ এই সময়ে দেশটিতে মারা গেছেন ১৭ হাজার ৭০৯ জন৷ শেষ ২৮ দিনে আর কোনো দেশে এত বেশি করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি৷
তালিকায় ক্রমান্বয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরের দেশগুলো হচ্ছে ভারত (সংক্রমিতের সংখ্যা ১০ লাখ ১২ হাজার ৯৭২), ইরান, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, তুরস্ক, রাশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, স্পেন, মেক্সিকো, জাপান, সাউথ আফ্রিকা ও বাংলাদেশ৷
বাংলাদেশে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে৷ এরপর কয়েক দফা চেষ্টা করেও পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি না হওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা যায়নি, বরং দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়েছে৷ তবে ইউনেস্কোর হিসেবে (https://en.unesco.org/covid19/educationresponse#schoolclosures) দেখা যাচ্ছে, জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বাংলাদেশের আগে যে ১৫টি দেশ আছে সেগুলোর কোনোটিতেই টানা স্কুল বন্ধ থাকেনি৷ পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেশগুলোতে বিভিন্ন সময়ে আংশিক বা পুরো স্কুল খোলা হয়েছে৷ আবার পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে কিছুদিনের জন্য স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে৷
ইউনিসেফ ও ইউনেস্কো গত ১২ জুলাই এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর মূল চালকগুলোর মধ্যে যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থীরা নেই, সেটা স্পষ্ট প্রমাণিত হয়েছে৷ সুতরাং স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় করোনা সংক্রমণ ‘শূন্য' হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা যেতে পারেনা৷ অনেক দেশে বার ও রেস্টুরেন্ট খুলে দিলেও স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়৷ অথচ সংক্রমণ ঠেকাতে কোনো কিছু বন্ধ করতে হলে সবার শেষে স্কুল বন্ধ করা উচিত আর সংক্রমণ কমার পর সবার আগে স্কুল খোলা উচিত৷ স্কুল বন্ধ থাকার কারণে শিশুদের যা ক্ষতি হচ্ছে তা হয়ত কখনই পূরণ নাও হতে পারে বলে বিবৃতিতে মন্তব্য করা হয়েছে৷
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বুধবার এক সভায় করোনা সংক্রমণ কমে ‘সুবিধাজনক পরিস্থিতি' হলে এবং টিকা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ৷ কারণ বাচ্চারা ঘরে থাকতে থাকতে তাদেরও যথেষ্ট কষ্ট হচ্ছে৷ আর সেদিকে আমাদের আরো নজর দেওয়া দরকার৷''
এর আগে গত সোমবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘যদি সংক্রমণের হার একবারেই কমে যায়, সেক্ষেত্রে হয়তো সব ধরণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে৷'' আর যদি সংক্রমণ একটা পর্যায়ে চলতে থাকে সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আগে খুলে দেওয়া হতে পারে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী৷
জেডএইচ/কেএম (জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনেস্কো, ইউনিসেফ, বিডিনিউজ)