1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আবার ছাত্রলীগের হামলা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৫ জুলাই ২০১৮

কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর আবারো হামলা হয়েছে৷ হামলা থেকে চারজন শিক্ষকও রেহাই পাননি৷ হামলার শিকার একজন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন৷

ফাইল ফটোছবি: bdnews24.com

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রবিবার সকাল ১১টায়  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ ছিল৷ আর এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ৷ তারা মাইক লাগিয়ে পাল্টা কর্মসূচি পালন শুরু করে৷ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে ওই প্রতিবাদে অংশ নেয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. তানজিম উদ্দিন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ছাত্রলীগের ছেলেরা মাইকে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে৷ এমনকি আমার দিকে টাকা ছুড়ে মেরে আমাকে বলে আমি নাকি জামায়াতের টাকা খেয়ে আন্দোলন করি৷ এই পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের একজন ছাত্রকে তারা ব্যাপক মারপিট করে৷ আমরা এর প্রতিবাদ জানাতে উপচার্যের অফিসের দিকে রওয়ানা হলে আমাদের ঘেরাও করে হামলা চালানো হয়৷ আমরা মোট চারজন শিক্ষক ছিলাম৷ আর ছাত্ররা ছিল৷ হামলাকারীদের মধ্যেই আমাদের যারা পরিচিত ছাত্র ছিল, তারা আমাদের রক্ষা করে৷ ১০-১৫ জন ছাত্র আহত হয়৷'' 

DR Tabzim Uddin - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘আমার মনে হয়েছে হামলাটি পূর্ব পরিকিল্পিত৷ কারণ, যখন আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিলো, তখন ভিসি ও প্রক্টর দু'জনকেই ফোন করি৷ কিন্তু তাঁদের মেবাইল ফোন বন্ধ ছিল৷ কিন্তু হামলা শেষ হওয়ার পর আমি প্রক্টরকে ফোনে পাই৷ তখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার জন্য উল্টো আমাদেরই দায়ী করেন৷ তাঁর এই কথা আমাকে মানসিক পীড়ণের মধ্যে ফেলে দিয়েছে৷''

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক বলেন, ‘‘মানববন্ধনের শেষ পর্যায়ে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আমাদের ঘিরে ফেলে৷ পরে আমরা রাজু ভাস্কর্যের দিকে যাওয়ার পথে শিববাড়ি মোড়ে শেখ রাসেল টাওয়ারের সামনে গেলে তারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় এবং আমাদের লাঞ্ছিত করে৷''

Professor AKM Golam Rabbani - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

শিক্ষার্থী রাফিয়া তামান্না বলেন, ‘‘তারা প্রথম থেকে আমাদের মানববন্ধনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে৷ তারা আমাদের শিক্ষকদের জামায়াত-শিবির বলে অপমান করেছে৷ আমরা মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় হামলা চালায়৷ সাংবাদিকরা এগিয়ে এলে তাঁদের ওপরও হামলা করে৷ এসএম হলের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সায়েম সাংবাদিকদের ক্যামেরা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে৷ এবং কয়েকটি মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলে৷'' 

হামলার শিকার চাটার্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্র এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা তুহিন ফারাবি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ছাত্রলীগের  চিহ্নিত নতা-কর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই হামলা চালায়৷ আমাকে প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালে পাশে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করা হয়৷  আমাকে ছাত্রলীগ আগেই টার্গেট করে৷ কারণ, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতারা গ্রেপ্তার ও হামলার শিকার হওয়ার পর আমি প্রকাশ্যে আন্দোলন সংগঠিত করার চেষ্টা করছিলাম৷''

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানি ডয়চে ভেলের কাছে দাবি করেন, ‘‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার শহীদ মিনারে কর্মসূচি পালন করতে কেউ আমাদের পূর্বানুমতি নেয়নি৷ ফলে একটি উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়৷ আমরা প্রক্টরিয়াল বডি'র চারজন সদস্যকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে তথ্য নিয়েছি৷ তাতে আমাদের মনে হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়কে অশান্ত করার এক ধরনের ইন্ধন আছে৷''

Tuhin Farabi - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

ড. তানজিম উদ্দিনের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছে৷ একজন সহকর্মী হিসেবে তাঁকে আমি যথেষ্ট সম্মান দিয়ে কথা বলেছি৷ তবে তিনি আমাকে কোনো সহযোগিতা করেননি৷ পরিস্থিতি শান্ত করতে আমি তাঁদের সহযোগিতা পাইনি৷'' 

প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীরা এখন আর মাঠে নামতে পারছেন না৷ তাঁদের ওপর দফায় দফায় হামলার পর এখন  প্রতিবাদ সমাবেশেও হামলা হচ্ছে৷

কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্তত ১৩ জন নেতা এখন কারাগারে আছেন৷ তাঁদের রিমান্ডেও নেয়া হয়েছে৷ আহতরা কোনো হাসপাতালে চিকিৎসাও পচ্ছেন না৷ আর যাতে তাঁরা রাস্তায় নামতে না পারেন, তার জন্য হুমকি অব্যাহত আছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ