গাজায় ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর অভিযানের ফলে নতুন করে গৃহহীন হয়েছে লাখ লাখ বাসিন্দা। রাফাকে নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে শহরটির দখল নিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।
ইসরায়েলের বাহিনী অভিযান শুরু করায় রাফা ছাড়তে আবারো বাধ্য হচ্ছেন বাসিন্দারা।ছবি: EYAD BABA/AFP/Getty Images
বিজ্ঞাপন
গাজার দক্ষিণ প্রান্তে মিশর সীমান্তের যুদ্ধবিধ্বস্ত শহর রাফায় যুদ্ধবিরতির পর গত মাসেই কেবল ফিরতে পেরেছিলেন বাসিন্দারা। তবে দুই মাসের মধ্যেই ইসরায়েলের বাহিনী আবার অভিযান শুরু করায় রাফা ছাড়তে আবারো বাধ্য হচ্ছেন বাসিন্দারা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে রাফায় ইসরায়েলি অভিযানে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৯৭ জন মারা গেছেন। রাফা থেকে খান ইউনিস-এ আশ্রয় নেয়া একজন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, "রাফায় শেষ হয়ে গেছে। সেখানে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই।"
তিনি আরও বলেন, "অবশিষ্ট যেসব ঘরবাড়ি রয়েছিল, সেগুলোও তারা এখন গুড়িয়ে দিচ্ছে।"
যুদ্ধের ১৫ মাস: গাজার বর্তমান চিত্র
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প৷ এদিকে, ফিলিস্তিনীরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে গাজা ছাড়ছেন৷ যুদ্ধ শুরুর ১৫ মাস পর গাজার চিত্র তুলে ধরা হলো ছবিঘরে৷
ছবি: Khalil Ramzi/REUTERS
রাফায় ধ্বংসস্তূপে ফিলিস্তিনীরা
রাফায় ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধবিরতির পর বিধ্বস্ত ভবন বা বাড়ি-ঘরের সামনে হেঁটে যাচ্ছেন শহরটির বেঁচে থাকা কয়েকজন বাসিন্দা।
ছবি: Hatem Khaled/REUTERS
খান ইউনিসেও একই চিত্র
খান ইউনিসে সর্বত্র ইসরায়েলের হামলার চিহ্ন৷ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ঘর-বাড়ি৷ বিধ্বস্ত প্রায় সব ভবন৷
ছবি: Omar Ashtawy/apaimages/SIPA/picture alliance
জাবালিয়া এখন ধ্বংসস্তূপ
গাজা উপত্যকার জাবালিয়ায় এখন শুধু বাড়ি আর বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসস্তূপ চোখে পড়বে৷ এ মুহূর্তে ইসরায়েল আর হামাসের মধ্যকার যুদ্ধে বিরতি চলছে ৷
ছবি: Khalil Ramzi/REUTERS
নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে
গাজার উত্তরাঞ্চলে যুদ্ধ শুরুর ১৫ মাস পর নিজেদের ঘর-বাড়ি হারিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে হেঁটে চলেছেন ফিলিস্তিনীরা৷
ছবি: Mohammed Salem/REUTERS
মুক্ত জিম্মিদের দেখতে ভীড়
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধ শুরুর পর অনেক ফিলিস্তিনী ইসরায়েলের হাতে বন্দি ছিলেন৷ যুদ্ধবিরতি শুরুর পর তাদের অনেকেই মুক্তি পান৷ গাজার দক্ষিণাঞ্চলে মুক্ত বন্দিদের দেখতে বিধ্বস্ত একটি ভবনের উপর জড়ো হয়েছেন অনেকেই।
খান ইউনিসেও এক হামলায় কয়েকজন মারা যাওয়ার পর আদেল আবু ফাখের তার তাঁবুতে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করছিলেন। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, "এখানে কোন কিছু কি অবশিষ্ট আছে? আমাদের জন্য কিছুই নেই। ঘুমিয়ে থাকা অবস্থাতেই আমাদের মেরে ফেলা হচ্ছে।"
যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর গাজার বাসিন্দারা ঘরে ফিরতে শুরু করেছিলেন। তবে নতুন করে ইসরায়েলের অভিযানের মুখে গাজার বাসিন্দারা স্থায়ীভাবে বাস্তুচ্যুতির আশঙ্কা করছেন।
হাজারো গাজাবাসীর ধ্বংসস্তূপে ফেরা
02:45
This browser does not support the video element.
যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম সময়সীমা মার্চের শুরুতে শেষ হয়ে গেলেও তা বাড়ানোর জন্য কোন চুক্তি হয়নি। এরই মাঝে ইসরায়েল গাজার বসবাসরত ২৩ লাখ বাসিন্দার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ত্রাণ সরবরাহ সবদিক থেকেই বন্ধ করে দিয়েছে। যে কারণে যুদ্ধবিরতিতে পরিস্থিতির সাময়িক উন্নতি হলেও এখন আবার গাজার মানবিক বিপর্যয় চলছে।