ইরাক ও সিরিয়ায় কোণঠাসা হয়ে পড়ে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট এবার আঘাত হানলো মিশরে৷ দুই গির্জার উপর হামলা চালিয়ে তারা নিজেদের শক্তির প্রমাণ দেবার চেষ্টা করলো৷ দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
আলেক্সান্ড্রিয়া ও টান্টা শহরে কপটিক খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের দুই গির্জার উপর আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস৷ পবিত্র ‘পাম সান্ডে' উপলক্ষ্যে সেই দুই গির্জায় বিশেষ প্রার্থনাসভা চলছিল৷ বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৪৬ জন নিহত ও অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছে৷ আলেক্সান্ড্রিয়ার সেন্ট মার্ক্স ক্যাথিড্রালে হামলার সময়ে কপটিক সম্প্রদায়ের পোপ প্রার্থনাসভা পরিচালনা করছিলেন৷ তাঁর অবশ্য কোনো ক্ষতি হয়নি৷ ভবিষ্যতেও এমন হামলার হুমকি দিয়েছে আইএস৷
উল্লেখ্য, মিশরে সংখ্যালঘুদের উপর আইএস এর আগেও হামলা চালিয়েছে৷ গত বছরের ২৮শে ডিসেম্বর কায়রো শহরের একটি গির্জায় আত্মঘাতী হামলায় ২৮ জন নিহত হয়েছিল৷ সিনাই উপদ্বিপে আইএস ক্রমশ তাদের শক্তি বাড়িয়ে চলেছে৷ লাগাতার হামলার জের ধরে খ্রিষ্টানরা সেখান থেকে পালিয়ে যাচ্ছে৷
মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাতাহ আল-সিসি সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলার স্বার্থে ৩ মাসের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বলেছেন, এই সংগ্রাম দীর্ঘ ও বেদনাদায়ক হতে চলেছে৷
পোপ ফ্রান্সিস এই হামলার নিন্দা করেছেন৷ আগামী ২৮ ও ২৯শে এপ্রিল তিনি মিশর সফরে আসছেন৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামলার নিন্দা করে বলেছেন, তাঁর বিশ্বাস মিশরের প্রেসিডেন্ট আল-সিসি পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারবেন৷
জোরালো সামরিক অভিযানের মুখে একের পর এক এলাকা হারিয়ে ইরাক ও সিরিয়ায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছে আইএস৷ এই অবস্থায় তারা অন্যান্য অঞ্চলে সক্রিয় হয়ে নিজেদের বার্তা তুলে ধরে আরও অনুগামী আকর্ষণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷
মোসুলে ভিন্ন এক লড়াই
তথাকথিত ‘ইসলামিক স্টেটের’ বিরুদ্ধে ইরাকে চলছে তুমুল লড়াই৷ জঙ্গি গোষ্ঠীটিকে কোণঠাসা করে ফেলা সম্ভব হলেও এখনো পুরোপুরি সরিয়ে দেয়া যায়নি মোসুল থেকে৷ তবে ইরাকি সেনাবাহিনীর স্নাইপাররা বেশ দক্ষতার সঙ্গেই এগোচ্ছেন৷
ছবি: Reuters/T. Al-Sudani
মিউজিয়ামে স্নাইপার
ইরাকের নিরাপত্তাবাহিনীর এক স্নাইপার ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি মিউজিয়ামের মধ্যে অবস্থান নিয়েছেন৷ ‘ইসলামিক স্টেট’ (আইএস)-এর জঙ্গিরা ২০১৫ সালে এই মিউজিয়ামে থাকা বিভিন্ন মূর্তি ও ভাস্কর্য ভাঙার ভিডিও ইন্টারনেটে প্রকাশ করেছিল৷
ছবি: Reuters/T. Al-Sudani
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
ইরাকে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন স্নাইপাররা৷ বিশেষ করে বেসামরিক প্রাণহানি কমানোয় এই পন্থা কাজে আসছে বলে দাবি ইরাকি বাহিনীর৷
ছবি: Reuters/Y. Boudlal
উভয়পক্ষে নিশানাবাজ বন্দুকধারী
জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের জিহাদিদের মধ্যেও স্নাইপার রয়েছে বলে জানা গেছে৷ মোসুলের পশ্চিমাঞ্চলে তোলা এই ছবিতে আইএসের স্নাইপারদের এড়িয়ে ইরাকি বাহিনীর কয়েক সদস্যকে রাস্তা পার হতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Reuters/Z. Bensemra
যথাসম্ভব লুকিয়ে থাকা
ইরাকি সেনাবাহিনীর স্নাইপাররা নিজেদের যথাসম্ভব লুকিয়ে রেখে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন৷ এই ছবিতে আইএসের যোদ্ধাদের অবস্থানের বেশ কাছে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া এক বিল্ডিংয়ে এক স্নাইপারকে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Reuters/Y. Boudlal
মানববর্ম তৈরি করছে আইএস
মোসুলে আইএস জিহাদিরা মানববর্ম তৈরি করে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছে ইরাকি সেনাবাহিনী৷ স্নাইপাররা চেষ্টা করে বেসামরিক মানুষদের ঝুঁকির বাইরে রেখে শুধু জিহাদিদের হত্যা করতে৷
ছবি: Reuters/K. al Mousily
এখনো অনেকে আটকে আছে
মোসুলে তুমুল যুদ্ধের কারণে শহরটির দুই লাখের মতো বাসিন্দা অন্যত্র চলে গেছে৷ তবে এখনো প্রায় ছয় লাখ বেসামরিক মানুষ সেখানে রয়েছে বলে ধারণা করছে জাতিসংঘ৷ আইএসবিরোধী লড়াইয়ে অংশ নেয়া আন্তর্জাতিক বাহিনীর বিমান হামলায় অনেক বেসামরিক মানুষও মারা যাচ্ছে৷