1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গায়ে বাগান, বারান্দায় ঝোপঝাড়

ইয়ুলিয়া কাউলবারস / এসি২ আগস্ট ২০১৪

উপমহাদেশে বন কেটে বসত নির্মাণ থেকে শুরু করে পুকুর ভরাট করে উঁচু ভবন তৈরি হচ্ছে৷ কিন্তু যে হাইরাইজের গায়েই বাগান, বারান্দাতে গাছ ও ঝোপঝাড় – এমন একটি আবাসিক বহুতল ভবনের কথা কল্পনা করতে পারেন?

Deutsche Welle Brasilien futorando 62
ছবি: DW

ভবিষ্যতের শহরগুলো দেখতে কেমন হবে, তা বলা সহজ নয়, কেননা ততোদিনে বিশ্বের জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ বাস করবে শহরে৷ নগর পরিকল্পনা করেন যারা, তাদের পক্ষে এটা একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ৷

অনাগত ভবিষ্যতের মেগা-শহরগুলো কতোটা ‘সবুজ' হবে, তাই নিয়েই ইটালির স্থপতি স্টেফানো বোয়েরি-র চিন্তা৷ তিনি চান বনানিকে শহরের মধ্যে নিয়ে আসতে৷ মিলান শহরের মাঝখানে তিনি দু'টি সবুজ বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন৷ এগুলোর নাম রেখেছেন ‘বস্কো ভ্যার্টিকালে' বা ভার্টিক্যাল ফরেস্ট, অর্থাৎ উল্লম্ব বনানি৷ স্টেফানো বোয়েরি একটি সবুজ শহরের স্বপ্ন দেখেন, ‘‘আমার ধারণা, আজকাল আমাদের অন্য পথে যেতে হবে৷ উদ্ভিদ ব্যবহার করে টেকসই বাড়ি নির্মাণ করতে হবে৷ সেটাই হলো দৃষ্টিভঙ্গির মূল পার্থক্য৷ অর্থাৎ প্রথাগত দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মূল পার্থক্য৷''

দু'টি হাইরাইজ বিল্ডিং সাজানো হবে ৮০০-র বেশি গাছ, ৫,০০০ ঝোপঝাড় ও ৪০,০০০ অন্যান্য ধরনের গাছপালা দিয়ে – সব মিলিয়ে এক হেক্টর বনানি৷ এটা হবে প্রচলিত কাচ ও ইস্পাতের টাওয়ারগুলোর বিকল্প৷ তবে শহরের মাঝখানো সবুজের কোলে বসবাস বিত্তশালীদের একটা লাক্সারি, আজও সাধারণ মানুষদের জন্য নয়৷

‘বাড়ির গায়েই জঙ্গল'

অসম্ভব উচ্চতায় গজিয়েছে নানা ধরনের গাছ৷ গ্রীষ্মে তারা ছায়া দেয়; শীতে রোদ আটকায় না অথচ ঝড়ে বাতাস আটকায়; ঘরের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করে, ধুলো ঢোকা নিবারণ করে আর সবচেয়ে বড় কথা – গাছের পাতা থেকে অক্সিজেন পাওয়া যায়৷ তবে ৮০ থেকে ১০০ মিটার উচ্চতায় গাছ লাগানো খুব সহজ কাজ নয়৷ তবে বোয়েরি বলেন, ‘‘আমরা ফ্লোরিডার মায়ামি-তে প্রতিটি গাছকে উইন্ড টানেলে পরীক্ষা করে দেখেছি, কোনটায় সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়৷ এছাড়া আমরা গাছ পোঁতার বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি, যাতে কোনো গাছের কোনো অংশ উপড়ে রাস্তার ওপর গিয়ে না পড়ে৷''

গাছগুলোর জন্য আলাদা কংক্রিটের টব তৈরি করা হয়েছে, যার ভেতরে তাদের শক্ত ব্যান্ড দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে৷ এমনকি টবের মাটিও আলাদা করে বানানো হয়েছে যাতে বারান্দার পক্ষে টবগুলো বেশি ভারি না হয়, অথচ শিকড়গুলো যথেষ্ট মাটি পায়৷

এই ‘অরণ্যে' কিন্তু কোনো কিছুই প্রকৃতির মর্জির উপর ছেড়ে দেওয়া হয়নি৷ উঁচু বাড়ির গাছে জল দেওয়ার প্রণালীটা আলাদা করে সৃষ্টি করা হয়েছে – এবং দিক, বাড়ির তলা ও কোন জাতের গাছ, সেই অনুযায়ী বদলে৷ সব গাছপালা দেখাশোনার ভার দেওয়া হয়েছে একটি নার্সারি-কে৷ বাড়ির বাসিন্দাদের তাতে হাত দিলে চলবে না, তবে খরচটা শেষমেষ তাদেরই দিতে হবে৷

মিলান শহরের মাঝখানে তৈরি দু'টি সবুজ বহুতল ভবনছবি: imago

দক্ষিণে ডালিম, উত্তরে অ্যাশ

পুবে অলিভ গাছ, দক্ষিণে ডালিম, উত্তরে অ্যাশ গাছ – প্রত্যেক দিকের জন্য একটি বিশেষ ধরনের গাছ, সব মিলিয়ে চল্লিশ ধরনের গাছ৷ আর্দ্রতা, বাতাস আর রোদ্দুর অনুযায়ী বসানো হয়েছে৷ বোয়েরি জানান, ‘‘এখানে একটা আপেল গাছ লাগানো হয়েছে, যার ফলগুলো ছোট, যাতে সেগুলো ওপর থেকে রাস্তায় পড়ে বিভ্রাট না ঘটাতে পারে৷''

স্থপতি স্টেফানো বোয়েরি শুধু মানুষ আর গাছপালাই নয়, তাঁর দু'টি সবুজ টাওয়ারে জীবজন্তুদের বাস করার কিংবা বাসা বাঁধার ব্যবস্থা রাখছেন৷ পোকামাকড় পুষে মশামাছি নিয়ন্ত্রণ করা হবে স্বাভাবিক, প্রাকৃতিক উপায়ে; আবার সেই পোকামাকড়ের লোভে পাখিরা আসবে৷

এ বছরই এই ‘খাড়াই জঙ্গলে' বসতি বসবে, আসবেন প্রথম বাসিন্দারা৷ তবে ‘বস্কো ভ্যার্টিকালে' শুধু ধনী ও বিলাসীদের খেয়াল হয়েই থাকবে, না বাস্তবিক নগরায়ন বা মহানগরীর অরণ্যায়নের আদর্শ হয়ে উঠবে, তা বুঝতে আরো অন্তত বিশ বছর সময় লাগবে৷ স্টেফানো বোয়েরি-র স্বপ্ন হলো এক সবুজ মিলান, যেখানে যুগপৎ পরিবেশ ও স্থাপত্যের নতুন প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকবে একটির পর একটি সবুজ বহুতল৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ