1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আবেদনপত্রে তৃতীয় লিঙ্গ, দাবিপূরণ রূপান্তরকামীদের

পায়েল সামন্ত কলকাতা
২৬ ডিসেম্বর ২০১৯

শতাব্দীপ্রাচীন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের ফর্মে এবার থেকে তৃতীয় লিঙ্গ চিহ্নিতকরণের সুযোগ থাকছে৷ যদিও তৃতীয় লিঙ্গের অনেকে মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত অনেক আগে নেয়া উচিত ছিল৷

Indien Transgender l Universität Kalkutta
ছবি: DW/P. Samanta

তৃতীয় লিঙ্গ স্বীকৃতি পাওয়ার পরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মক্ষেত্র সর্বত্র তার প্রতিফলন ঘটছে এমনটা নয়৷ ব্যক্তির পরিচিতি সংক্রান্ত ফর্মে বরাবরই নারী অথবা পুরুষ এই দুটি লিঙ্গ চিহ্নিত করার সুযোগ থাকে৷ তৃতীয় লিঙ্গ স্বীকৃতি পাওয়ার পরও অনেক প্রতিষ্ঠানে পুরোনো ফর্ম ব্যবহার করা হচ্ছে যেখানে নিজেকে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে ঘোষণার অবকাশ নেই৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক রূপান্তরকামী পড়ুয়া এ নিয়ে আদালতে মামলা করেন৷ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর এমফিল কোর্সে ভর্তি হওয়ার সময় তিনি দেখেন ফর্মে তৃতীয় লিঙ্গ বাছাইর সুযোগ নেই৷ এই অভিযোগ তুলে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন৷ এই মামলার শুনানির সময়ই বিচারপতির সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী জানান, ইতিমধ্যেই ফর্মে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের দাবি অনুযায়ী পরিবর্তন করা হয়েছে৷ এখানেই প্রশ্ন উঠছে, সুপ্রিম কোর্টের স্বীকৃতির পর কেন একজন রূপান্তরকামীকে তাঁর অধিকার আদায়ে ফের আদালতের দ্বারস্থ হতে হল?

রূপান্তরকামীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের নিষ্ক্রিয়তায় অসন্তুষ্ট৷ তাঁদের বক্তব্য, অনেক দেরি করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়৷ শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই স্বীকৃতি দেয়ার ব্যাপারে অনীহা লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে অভিযোগ৷ স্টেট ট্রান্সজেন্ডার বোর্ডের সদস্য রঞ্জিতা সিনহা বলেন, ‘‘অনেক দেরি করে বিশ্ববিদ্যালয় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ আমাদের সম্প্রদায়ের মানুষেরা অন্যান্য রাজ্যে অনেক বেশি অধিকার পাচ্ছেন৷ যদিও স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও অধিকার আদায় করতে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর পাঁচ বছর কেটে গেল৷''

অঙ্কন বিশ্বাস

This browser does not support the audio element.

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র, রূপান্তরকামী আইনজীবী অঙ্কন বিশ্বাস বলেন, ‘‘শুধু বাংলা নয়, ভারতেও প্রথম সারির প্রতিষ্ঠান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়৷ তাদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে আরও সক্রিয়তা আশা করা গিয়েছিল৷ কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় বা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় অনেক নবীন হলেও তারা বহু আগে আবেদনের ফর্মে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে ঘোষণার অবকাশ রেখেছে৷ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অনেক পরে সেটা করল৷''

যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নতুন ফর্মে লিঙ্গ নির্ধারণের ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীর সঙ্গে থাকবে অন্যান্য বলে একটি বিকল্প৷ এই বিকল্পের বাক্সে টিক চিহ্ন দিতে হবে যারা নিজেদের তৃতীয় লিঙ্গ বলে ঘোষণা করতে চান৷

এই ছোটখাটো স্বীকৃতিতে রূপান্তরকামীদের অধিকার আদায় হচ্ছে না বলে মনে করে তাদের সংগঠন৷ ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায় রূপান্তরকামীদের জন্য বৃহত্তর অধিকার আদায়ের পথ প্রশস্ত করেছিল৷ সেই রায়ে শিক্ষা এবং সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া শ্রেণী হিসেবে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছিল৷ কিন্তু সেই অধিকার এখনো আদায় সম্ভব হয়নি৷ রূপান্তরকামীদের সংগঠনের জোরালো দাবি, দ্রুত তাদের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করুক সরকার৷ নিজেদের যোগ্যতার জোরে অনেক রূপান্তরকামী মানুষ প্রতিষ্ঠিত হলেও অধিকাংশই সমাজের মূলস্রোতে জীবিকা থেকে বঞ্চিত৷ তাই আলিয়া শেখের দায়ের করা মামলায় হাইকোর্টে তার আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উল্লেখ করে সংরক্ষণের দাবি রেখেছেন৷ রঞ্জিতা সিনহার ক্ষোভ, ‘‘আমাদের রাজ্যে তৃতীয় লিঙ্গ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তোলার চেষ্টা নেই৷ ওড়িশা, ছত্তিশগড়ের মতো রাজ্যে স্কুলে তৃতীয় লিঙ্গ সম্পর্কে পড়ানো হয়৷ ছেলেমেয়েরা বিষয়টি বুঝতে পারে, রূপান্তরকামীদের সম্পর্কে একটা দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়৷ কিন্তু এখনো পশ্চিমবঙ্গে স্কুলপাঠ্যে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়নি৷'' 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ