একের পর এক ব্লগার হত্যা এবং হত্যাকারীদের ধরতে নিরাপত্তা বাহিনী তথা সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহারকারীরা৷
বিজ্ঞাপন
ইশতিয়াক রউফ তাঁর ফেসবুকে স্ট্যাটাসে দল হিসেবে বর্তমান আওয়ামী লীগের একটি ব্যবচ্ছেদ করার চেষ্টা করেছেন৷ তিনি লিখেছেন, এখন ব্লগারদের যেভাবে হত্যা করা হচ্ছে সেটা বিএনপি আমলে হলে আওয়ামী লীগ তীব্র আন্দোলন করতো৷ কিন্তু তারাই এখন নিজেরাই ক্ষমতায় থাকায় কিছু করছে না৷ ‘‘গত বছর কয়েক ধরে বিএনপি-জামায়াতের সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকের অন্তরঙ্গ আলাপের অডিও ফাঁস হয়েছে, যেটা থেকে বুঝা যায় যে ঘরে ঘরে ফোনালাপ শুনছে বিভিন্ন ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী'৷ অথচ এই বিষয়ের (ব্লগারর হত্যা) কোনো হিসাব-হদিস-আলামত নাই৷ এত এত অতিরিক্ত, অনৈতিক, এবং দূরপ্রসারী ক্ষমতা থাকার পরেও কোনো কিছু করতে না পারার দায় এককভাবে আওয়ামী লীগের উপর বর্তায়৷ তারা এই প্রসঙ্গে প্রশাসনিক কোনো পদক্ষেপ তো নেনই নাই, এমন কি রাজনৈতিকভাবেও এর বিরুদ্ধে কিছু বলেন নাই৷ এই হাঁটুভাঙা, ভীতু, আধা-সাম্প্রদায়িক দলটা এত বছরের পরিচিত আওয়ামী লীগ না'', লিখেছেন রউফ৷
হত্যার হুমকি পাওয়া এক ব্লগার
তাঁর বাবা হুমায়ুন আজাদের ওপরও হামলা হয়েছিল৷ বাবা তাঁর ছেলে অনন্যকে বলেছিলেন, ‘এরপর তুমি...’৷ হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুর কয়েক বছরের মধ্যেই ব্লগার অনন্য আজাদকে হত্যার হুমকি দিয়েছে জঙ্গিরা৷ তাঁকে নিয়েই আজকের ছবিঘর...
ছবি: DW/Gönna Ketels
লিখে যেতে চান অনন্য
ঢাকায় জন্ম৷ ঢাকা শহরকে তাই খুব ভালোবাসেন অনন্য আজাদ৷ এই শহর ছেড়ে কোথাও যেতে চাননি, তবে হত্যার হুমকি দেয়ার পর থেকে জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল৷ তারপরও লেখলেখি থামাননি৷
ছবি: DW/Gönna Ketels
চিন্তা মুক্ত, মতামত নয়
২৪ বছর বয়সি ব্লগার অনন্য নিজেকে ‘মুক্তচিন্তক’ মনে করেন৷ তিনি মনে করেন, ধর্ম বা যে কোনো কিছুকে বিশ্বাস করা বা না করার অধিকার সবারই থাকা উচিত৷ এই ভাবনা নিয়েই লেখালেখি করেন৷ এ কারণে ইসলামি জঙ্গিরা তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়েছে৷
ছবি: DW/Gönna Ketels
আত্মরক্ষার চেষ্টা
২০১৩ সালে ৮৪ জন ব্লগারের নামের তালিকা প্রকাশ করে তাঁদের হত্যার হুমকি দেয়া হয়৷ পরের ৩ বছরে মোট ৯ জন ব্লগারকে হত্যা করা হয়েছে৷ হালে দিনের আলোয়, জনাকীর্ণ স্থানে ব্লগার হত্যার ঘটনার পর তাঁকেও হত্যার হুমকি দেয়ায় অনন্য সাবধানে চলাফেরা শুরু করেন৷ ঢাকায় তো হেলমেট না পরে বেরই হতেন না তিনি৷
ছবি: DW/Gönna Ketels
চিন্তার জগতে এক
ইসলামি জঙ্গি এবং তাদের ভাবধারায় বিশ্বাসীরা ব্লগারদের ঢালাওভাবে ‘নাস্তিক’ বলছে৷ কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশের খুব কম ব্লগারই ধর্মের সমালোচনা করে লেখালেখি করেন৷ সরকার শুধু ব্লগারদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থই নয়, উল্টো ব্লগারদের ওপরই বিধিনিষেধ আরোপ করতে সচেষ্ট৷ অনেক ক্ষেত্রে ব্লগারদেই বরং বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে৷
ছবি: DW/Gönna Ketels
ঐতিহাসিক বিরোধ
একাত্তরে নয় মাসের যুদ্ধ শেষে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ৷ যুদ্ধে জামায়াতে ইসলামিসহ কয়েকটি দল পাকিস্তানকে সমর্থন করেছে, তাদের অনেক কর্মী হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগে অংশ নিয়েছে৷ ২০১৩ সালে জামায়াত নেতা, যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে ব্লগাররা আন্দোলন শুরু করে৷ শাহবাগে সমবেত হয় লাখো মানুষ৷ আন্দোলনের এক পর্যায়ে ৮৪ জন ব্লগারের তালিকা প্রকাশ করে হত্যার হুমকি দেয়া হয়৷
ছবি: DW/M. Mamun
এরপর তুমি...
বাবা হুমায়ুন আজাদ ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং লেখক৷ তাঁর ওপরও হামলা হয়েছিল৷ হুমায়ুন আজাদ তার কিছুদিন পরই মারা যান৷ একদিন হুমায়ুন অনন্যকে বলেছিলেন, ‘‘এরপর তুমি...৷’’ হুমায়ুন তাঁর লেখায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদরদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করতেন৷ তাই হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়৷ অনন্যকেও হত্যার হুমকি দিয়েছে জঙ্গিরা৷
ছবি: DW/Gönna Ketels
‘গৃহবন্দিত্ব’ থেকে মুক্তি
হত্যার হুমকির পরও লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছেন অনন্য৷ লিখছেন মৌলবাদের বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান ধরে রেখে৷ কয়েকদিন হলো বৃত্তি নিয়ে জার্মানিতে এসেছেন অনন্য আজাদ৷ প্রিয় শহর ঢাকায় নিজের বাড়িতেই প্রায় বন্দি থাকার যন্ত্রণা থেকে আপাতত মুক্তি!
ছবি: DW/Gönna Ketels
7 ছবি1 | 7
অন্য একটি স্ট্যাটাসে তিনি সচলায়তন ব্লগে প্রকাশিত হওয়া একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন৷ দীর্ঘ ঐ ব্লগপোস্টের একটি অংশ তিনি স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেছেন যেখানে লিখা আছে, ‘‘এক ভয়ংকর অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশ৷ এই অন্ধকারের খবর সবার আগে জেনে গেছে দেশের নবীন কিছু লেখক, কিছু ব্লগাররা৷ যে কারণে কিছু বোঝার আগেই এই যুদ্ধের ফ্রন্ট লাইনে চলে এসেছে তারা৷ প্রতিবাদী দর্শক থেকে নিজের অজান্তেই সৈনিক হয়ে গেছে৷''
শওগাত আলী সাগর ক্ষোভ মিশ্রিত একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন৷ হত্যাকারীদের ধরতে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যর্থতা নিয়ে যারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তাদের উদ্দেশে তিনি লিখেছেন, ‘‘...আপনি যত খুশি আহাজারি করতে পারেন, রাগে ক্ষোভে নিজের মাথার চুল ছিড়তে পারেন৷ তাতে কার কি আসে যায়! আপনি তো আর কারো কিছু ছিড়তে পারবেন না৷ সেটি করতে গেলে কিন্তু আইন আবার সক্রিয় হয়ে উঠবে৷ রাষ্ট্র আর সরকারের অবস্থান তো রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় পরিষ্কার করে দিয়েছেন অনেক আগেই৷ আপনি বুঝতে না পারলে সেটি আপনার ব্যর্থতা৷ গণতন্ত্রের চেয়েও উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ, সেটি তো আপনি মেনেই নিয়েছেন৷ এখন কয়েক ডজন ব্লগার নামের ‘নাস্তিকের' জীবনের চেয়েও উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ – এই বাণীকেও মেনে নিন৷ খামোখা উন্নয়নে বাগড়া দেবেন না৷ এইসব হত্যাটত্যা জাতীয় ঠুনকো বিষয় নিয়ে কথা বলে সময় নষ্ট করবেন না৷ তার চেয়ে উন্নয়নের কোরাস গাইতে থাকেন৷ আমরা এখন উন্নয়ন নিয়ে ব্যস্ত, আমাদের বিরক্ত করবেন না৷''
এদিকে, সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ইসলাম বা অন্য কোনো ধর্মের ব্যাপারে কেউ কটূক্তি কিংবা সীমালঙ্ঘন করে থাকলে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে সাজার ব্যবস্থা করা হবে৷ আজম খান সংবাদটি ফেসবুকে শেয়ার করে লিখেছেন, ‘‘কোন দেশে জন্মাইলামরে ভাই৷ যেই দেশে লেখা আর খুন সমান মাপের অপরাধ৷ যারা খুন করতেছে তাদের না ধইরা যারা খুন হইতেছে তাদের ধরা হবে৷ ক্ষমতায় থাকার জন্য এইটারে খোমেনীর দেশ বানাইতে হইলেও আওয়ামী লীগ তাই বানাবে৷ আদর্শ কোনো বিষয় না৷ ক্ষমতাটাই আসল৷''
র্যাব – বিতর্কিত এক বিশেষ বাহিনী
শুরুটা হয়েছিল ২০০৪ সালে৷ সেসময় বাঘা বাঘা জঙ্গিদের কুপোকাত করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায় ব়্যাব৷ কিন্তু অসংখ্য ক্রসফায়ার, অপহরণ, হত্যার দায়ে এখন সমালোচিত এই ‘এলিট ফোর্স’৷ র্যাব নিয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: Getty Images/AFP
‘এলিট ফোর্স’
বাংলাদেশে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব নামক ‘এলিট ফোর্স’-এর যাত্রা শুরু হয় ২০০৪ সালে৷ এই বাহিনীর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ‘‘পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রমকে আরো গতিশীল ও কার্যকর করার লক্ষ্যে সরকার একটি এলিট ফোর্স গঠনের পরিকল্পনা করে৷’’ তবে এই বাহিনী এখন তুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন মহল৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
সমন্বিত বাহিনী
বাংলাদেশ পুলিশ, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে র্যাব গঠন করা হয়৷ এই বাহিনীর উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাস প্রতিরোধ, মাদক চোরাচালান রোধ, দ্রুত অভিযান পরিচালনা এবং জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন কার্যক্রমে নিরাপত্তা প্রদান৷
ছবি: Getty Images/AFP
জঙ্গি তৎপরতা দমন
শুরুর দিকের ব়্যাবের কার্যক্রম অবশ্য বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিল৷ বিশেষ করে ২০০৫ এবং ২০০৬ সালে বাংলাদেশে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা উগ্র ইসলামি জঙ্গি তৎপরতা দমনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে র্যাব৷
ছবি: AP
জেএমবির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার
বাংলাদেশের ৬৩ জেলায় ২০০৫ সালে একসঙ্গে বোমা ফাটিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করা জেএমবির শীর্ষ নেতাদের আটক ব়্যাবের উল্লেখযোগ্য সাফল্য৷ ২০০৬ সালের ২ মার্চ শায়খ আব্দুর রহমান (ছবিতে) এবং ৬ মার্চ সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাইকে গ্রেপ্তারে সক্ষম হয় ব়্যাব৷ একাজে অবশ্য পুলিশ বাহিনীও তাদের সহায়তা করেছে৷
ছবি: DW
ভুক্তভোগী লিমন
২০১১ সালে লিমন হোসেন নামক এক ১৬ বছর বয়সি কিশোরের পায়ে গুলি করে এক ব়্যাব সদস্য৷ গুলিতে গুরুতর আহত লিমনের বাম পা উরুর নীচ থেকে কেটে ফেলতে হয়৷ এই ঘটনায় ব়্যাবের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদের ঝড় ওঠে৷ তবে এখনো সুবিচার পায়নি লিমন৷ উল্টো বেশ কিছুদিন কারাভোগ করেছেন তিনি৷
ছবি: DW
‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’
জঙ্গিবাদ দমনে সাফল্য দেখালেও ক্রসফায়ারের নামে অসংখ্য ‘বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের’ কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব়্যাবের বিরুদ্ধে সমালোচনা ক্রমশ বাড়তে থাকে৷ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ব়্যাবের বিলুপ্তি দাবি করে জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই বাহিনী ‘সিসটেমেটিক’ উপায়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে৷
ছবি: DW
‘ক্রসফায়ার’
বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পর্যালোচনা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালে ব়্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন ২৪ জন৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দাবি অনুযায়ী, ২০০৪ থেকে ২০১১ সালের আগস্ট পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে কমপক্ষে সাতশো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ব়্যাব জড়িত ছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আলোচিত সাত খুন
২০১৪ সালের মে মাসে ব়্যাবের বিরুদ্ধে ৬ কোটি টাকা ঘুসের বিনিময়ে সাত ব্যক্তিকে অপহরণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠে৷ নারায়ণগঞ্জে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিন ব়্যাব কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ৷ এই ঘটনার পর ব়্যাবের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আবারো বিতর্ক শুরু হয়েছে৷
ছবি: DW
প্রতিষ্ঠাতাই করছেন বিলুপ্তির দাবি
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, ব়্যাবের বিলুপ্তি দাবি করেছেন৷ অথচ তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই ‘এলিট ফোর্স’৷
ছবি: DW/M. Mamun
বিলুপ্তির দাবি নাকচ
বাংলাদেশে এবং আন্তর্জাতিক স্তর থেকে ব়্যাবকে বিলুপ্তির দাবি উঠলেও বর্তমান সরকার সেধরনের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না৷ বরং তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ব়্যাব বিলুপ্তির দাবি নাকচ করে দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘র্যাবের কোনো সদস্য আইন ভঙ্গ করলে তাদের চিহ্নিত করে বিচারিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়৷’’