পদ্মা সেতু প্রকল্প
২৫ জুলাই ২০১২![Bangladesh government has signed a $140 million loan agreement with the Islamic Development Bank to finance the Padma Multipurpose Bridge project. Finance minister A M A Muhith and IDB president Ahmad Mohammed Ali inked the deal on Tuesday (24.05.2011) morning. 6533455 Foto: Korrespondent in Bangladesch (DW) am 24.05.201 Eingereicht durch: Sanjiv Burman](https://static.dw.com/image/15981659_800.webp)
পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ এনে কিছুদিন আগে ১২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণচুক্তি বাতিল করে বিশ্ব ব্যাংক৷ এরপর সোমবার বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেন, যিনি বিশ্ব ব্যাংক যে সময়কালে দুর্নীতির কথা বলে তখন যোগাযোগমন্ত্রী ছিলেন, পদত্যাগ করেছেন৷ এই পদত্যাগের পর পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নের বিষয়টি আবারো আলোচনায় এসেছে৷
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবং অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলী খান এই বিষয়ে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যদিও এই পদত্যাগটি অত্যন্ত বিলম্বিত হয়েছে - এটা যদি করতেই হতো তাহলে আরো আগে করাই ভালো ছিল - তবুও আমার মনে হয় যে বিশ্ব ব্যাংকের কাছে একটা ইতিবাচক সংকেত হিসেবে এটা যাবে৷ এবং বিশ্ব ব্যাংক ইচ্ছা করলে বিষয়টি পুর্নবিবেচনা করতে পারে৷''
বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, ‘‘আমরা ধারণা, এই পদত্যাগের আগে হয়তো সরকারের সঙ্গে পর্দার অন্তরালে (বিশ্ব ব্যাংকের) আলাপ-আলোচনা হয়েছে৷ কাজেই আমরা এই পদত্যাগ নিয়ে আশাবাদী৷''
বলাবাহুল্য, আবুল হোসেনের পদত্যাগ ছাড়াও ছুটিতে গেছেন সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া৷ সর্বশেষ তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ছিলেন৷ ধারণা করা হয়, বিশ্ব ব্যাংক সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রীর পদত্যাগ ছাড়াও কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাকে ছুটিতে পাঠানোর শর্ত আরোপ করেছিল৷
বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত মঙ্গলবার আশা প্রকাশ করে গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘সৈয়দ আবুল হোসেন মন্ত্রী পদ ছাড়ায় এবং একজন ‘উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা' ছুটিতে যাওয়ায় বিশ্ব ব্যাংক আবারো পদ্মা সেতু প্রকল্পে ফিরে আসবে৷'' অথচ বিশ্ব ব্যাংক ঋণচুক্তি বাতিলের পর সরকারের শীর্ষ পর্যায় তাদের সমালোচনায় মুখর ছিল৷ এবং নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণাও করা হয়েছিল৷ কিন্তু সেই অবস্থা থেকে একাধিক কারণে সরকার সরে এসেছে বলে মনে করেন আকবর আলী খান৷ তিনি বলেন, ‘‘একটি কারণ হচ্ছে, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করা অসম্ভব নয়, কিন্তু তা অত্যন্ত কঠিন কাজ৷ এই কঠিন সিদ্ধান্তগুলো সরকার কতটা নিতে পারবে সেগুলো বোধহয় সরকারের পক্ষ থেকে পুর্নবিবেচনা করা হয়েছে৷''
ড. আকবর আলী খান বলেন, ‘‘দ্বিতীয়ত, শুধু যে পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে বিশ্ব ব্যাংক অর্থ তুলে নিয়ে যাচ্ছে তা নয়, এখানে যদি বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা প্রতিষ্ঠা না হয়, তাহলে কিন্তু দেশে দুর্নীতি হ্রাস করার প্রশ্নে দাতাগোষ্ঠীর সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের একটা মতবিরোধ থেকে যাচ্ছে৷ এখন যদি সরকার বিশ্ব ব্যাংকের প্রস্তাব মেনে অগ্রসর হয়, তাহলে ঐ ব্যাপারেও দাতাগোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারের যে বিরোধ সেটাও অনেক কমে যাবে৷''
উল্লেখ্য, ৬.১৫ কি.মি. দীর্ঘ পদ্মা সেতু প্রকল্পের মোট খরচ ধরা হয়েছে ২৯০ কোটি মার্কিন ডলার৷ এর মধ্যে বিশ্ব ব্যাংক প্রতিশ্রুত ১২০ কোটি ডলার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ঋণচুক্তি বাতিল করেছে৷
সাক্ষাৎকার: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ