‘ইসলাম জার্মানির অংশবিশেষ’
২২ মার্চ ২০১৮জার্মানিতে সরকারের কার্যকালের শুরুতেই চ্যান্সেলর সংসদে এক আনুষ্ঠানিক ভাষণে পরের ৪ বছরের কর্মসূচির একটা রূপরেখা তুলে ধরেন৷ বুধবার আঙ্গেলা ম্যার্কেল জানান, সরকারের প্রধান লক্ষ্য হলো সমাজে বর্তমান বিভাজন দূর করে ঐক্য অর্জন করা৷ ২০১৫ সালে শরণার্থী সংকটের জের ধরে বিদেশিদের আগমন নিয়ে সমাজে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, তা কাটিয়ে তোলার অঙ্গীকার করেন তিনি৷ তিনি স্বীকার করেন, এই ঘটনা দেশে বিভাজন সৃষ্টি করেছে, যার ফলে বিতৃষ্ণা দেখা দিয়েছে৷ জার্মানির অর্থনৈতিক অবস্থা এত ভালো হওয়া সত্ত্বেও ভবিষ্যৎ নিয়ে মানুষের মনে দুশ্চিন্তা রয়েছে৷ ইউরো এলাকায় অস্থিরতা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামও এর জন্য দায়ী বলে ম্যার্কেল মনে করেন৷ নির্বাচনেও সরকারি জোটের দলগুলি এই অনিশ্চয়তার স্বাদ পেয়েছে৷ ম্যার্কেল বলেন, সরকারের দায়িত্ব এমনভাবে আলোচনা চালানো, যাতে শেষে জার্মানিতে বসবাসরত সব মানুষের মধ্যে মেলবন্ধন সম্ভব করতে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়৷ তাঁর ভাষায় ‘আমরা সবাই মিলেই জার্মানি'৷
এ প্রসঙ্গে তিনি এমনকি সরকারি জোটে বিভাজন নিয়েও কোনো রাখঢাক করেননি৷ সম্প্রতি সহযোগী দল সিএসইউ আরও একবার সাফ জানিয়ে দিয়েছে, যে তারা ইসলাম ধর্মকে জার্মানির অংশ বলে মনে করে না, যদিও জার্মানিতে বসবাসরত মুসলিমদের নিয়ে তাদের কোনো আপত্তি নেই৷ বুধবার চ্যান্সেলর ম্যার্কেল স্পষ্ট ভাষায় সেই বিভাজনের বিরোধিতা করেছেন৷ তাঁর মতে, ঐতিহাসিকভাবে জার্মানির কাঠামো অবশ্যই খ্রিষ্টান ও ইহুদি ধর্ম ও সংস্কৃতির ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে৷ সেই মূল্যবোধ আজও বজায় রয়েছে৷ কিন্তু সেইসঙ্গে এটাও সত্য যে, জার্মানিতে বসবাসরত প্রায় ৪৫ লক্ষ মানুষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী৷ তাই ইসলাম ধর্মও ইতোমধ্যে জার্মানির অংশ হয়ে উঠেছে৷
শরণার্থী সংকটের জের ধরে জার্মানিতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে উগ্র দক্ষিণপন্থি এএফডি দল৷ ইউনিয়ন শিবিরের অনেক ভোটার এই দলকে সমর্থন করছেন৷ বাভেরিয়ার সিএসইউ দল রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাদের মন জয় করতে কড়া সুরে ইসলাম ধর্মের সমালোচনা করছে৷ এএফডি সংসদীয় দলের নেতা আলেক্সান্ডার গাউলান্ড ম্যার্কেলের ভাষণের সমালোচনা করে বলেন, তিনি নিজের শরণার্থী নীতির মাধ্যমে ইউরোপে বিভাজন সৃষ্টি করেছেন৷ পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরির মতো দেশ শরণার্থীদের বোঝা ভাগ করে নিতে অস্বীকার করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে তিনি মনে করেন৷
মানবিক কারণে সিরিয়ার শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে কোনো ভুল করেননি বলে মনে করেন ম্যার্কেল৷ তবে ভবিষ্যতে এমন সংকট প্রতিরোধ করতে তিনি বদ্ধপরিকর৷