1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পুলিশ হেফাজতে শহীদুল আলমকে ‘নির্যাতন’

৫ আগস্ট ২০১৮

প্রখ্যাত আলোকচিত্রী এবং অ্যাক্টিভিস্ট শহীদুল আলমকে বিতর্কিত তথ্য প্রযুক্তি আইনের আওতায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাতদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে৷ ঢাকার এক আদালত প্রাঙ্গণে তিনি দাবি করেছেন, পুলিশ হেফাজতে তাঁকে আঘাত করা হয়েছে৷

আদালতে শহীদুৃল আলম
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman

বাংলাদেশের বিতর্কিত তথ্য প্রযুক্তি আইনে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাতদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে শহীদুল আলমকে৷ সোমবার ঢাকার একটি আদালতে কয়েক মুহূর্তের জন্য তাঁকে দেখতে পান সেখানে আগে থেকে অবস্থানরত সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্টরা৷ এ সময় ধারণ করা একাধিক ভিডিওতে শহীদুলকে বলতে শোনা গেছে, ‘‘আমি আইনজীবী চেয়েছি, আমাকে দেওয়া হয়নি৷ আমাকে আঘাত করা হয়েছে৷ আমার রক্তাক্ত পাঞ্জাবী ধুয়ে আবার পরানো হয়েছে এবং শাসানো হয়েছে যে, আমি যদি তাদের কথামত বিবৃতি না দেই তাহলে আমাকে আরো... (বাকিটা অস্পষ্ট)৷’’ 

<iframe src="https://www.facebook.com/plugins/video.php?href=https%3A%2F%2Fwww.facebook.com%2Farafatul%2Fvideos%2F10160737693590506%2F&show_text=0&width=560" width="560" height="315" style="border:none;overflow:hidden" scrolling="no" frameborder="0" allowTransparency="true" allowFullScreen="true"></iframe>

এর আগে, ডয়চে ভেলের আধুনালুপ্ত দ্য বব্স অ্যাওয়ার্ডের অন্যতম বিচারক শহীদুল আলমকে স্থানীয় সময় রবিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে তাঁর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে তুলে নিয়ে যায় সাদা পোশাকের একদল লোক৷ সেই ঘটনার কিছুক্ষণ পর তাঁর স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের বাসার নিরাপত্তা কর্মী আমাকে জানিয়েছেন, ডিবি পরিচয়ে লোকজন বাড়িতে ঢুকে সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে গেছে৷ তারপর ক্যামেরার উপরে কশটেপ লাগিয়ে উপরে গিয়ে শহীদুলকে জোর করে নীচে নামিয়ে এনেছে এবং হাইএইস গাড়িতে তুলেছে৷ বাসার বাইরে তখন আরো দু’টি গাড়ি অপেক্ষমান ছিল, যার একটির লাইসেন্স নম্বর জানা গেছে৷’’

ঘটনার সময় একই ভবনের আরেকটি তলায় অবস্থান করছিলেন রেহনুমা আহমেদ৷ তিনি বলেন, ‘‘শহীদুলকে যে ফ্ল্যাট থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেখানকার সবকিছু আগে যেমন ছিল তেমনই আছে৷ শহীদুলের স্যান্ডেলও আছে৷’’ 

শহীদুলকে সাদা পোশাকের ব্যক্তিরা তুলে নিয়ে যাওয়ার পরপরই ধানমন্ডি থানায় গিয়েছেন রেহনুমা৷ সেখানে দায়ের করা অভিযোগে তিনি তাঁর স্বামী এবং সহকর্মী শহীদুল আলমকে ‘‘অক্ষত অবস্থায় দ্রুত উদ্ধারের’’ জন্য পুলিশের প্রতি আর্জি জানিয়েছেন৷

রবিবার রাতভর শহীদুলকে কারা তুলে নিয়ে গেছে তা নিয়ে বিভ্রান্তি থাকলেও সোমবার তাঁকে গ্রেপ্তারের কথা নিশ্চিত করে পুলিশ৷ পুলিশ কর্মকর্তা মশিউর রহমান বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘‘তাঁকে সোমবার ভোরে আমাদের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছে৷ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভুল তথ্য এবং ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য দেয়ার বিষয়ে আমরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি৷’’

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘‘তিনি (শহীদুল আলম) কোন সদুত্তর দিতে পারেননি৷ তিনি স্বীকার করেছেন, সেগুলো তাঁর ব্যক্তিগত মতামত ছিল৷’’

প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরে ঢাকায় চলা স্কুল শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নানা ধরনের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করছিলেন শহীদুল আলম৷ শনিবার ধানমন্ডিতে ছাত্র বিক্ষোভের ছবি তুলতে গেলে ‘ছাত্রলীগের’ বাঁধার মুখে পড়েন তিনি৷ সেসময় তাঁর ক্যামেরা ভেঙে যায়৷ এমনকি তিনি ফেসবুক লাইভে বক্তব্য দেয়ার সময়ও তাঁকে বাধা দেয়া হয় এবং তাঁর মোবাইল কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে দুই যুবক৷ রবিবার রাতে তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়ার কয়েকঘণ্টা আগেও তিনি কাতারভিত্তিক আল-জাজিরা টেলিভিশন চ্যানেলে এক সাক্ষাৎকার দেন, যেখানে রাজপথে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ এবং ক্ষমতাসীন দল ছাত্রলীগের হামলার তীব্র সমালোচনা করেন৷ 

‘‘ডিবি পরিচয়ে লোকজন বাড়িতে ঢুকেছে’’

This browser does not support the audio element.

ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রেহনুমা আহমেদর জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সংবিধান প্রদত্ত বাকস্বাধীনতার চর্চার বাইরে অবৈধ কিছু করেননি শহীদুল আলম৷ তবে তাঁকে যেভাবে রাতের বেলা তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেটা অবৈধ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি৷ 

এদিকে, শহীদুল আলমকে বিনা শর্তে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার দাবি করেছে সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘‘কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট৷’’ এক বিবৃতিতে সংগঠনটি শহীদুলকে মুক্তি দেয়ার পাশাপাশি সব সাংবাদিক যাতে চলমান শিক্ষার্থী বিক্ষোভ নিরাপদে কভার করতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে৷

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ফোটোগ্রাফির জগতে এক মাইল ফলক দৃক৷ মানবাধিকারের পক্ষে, সুশীল সমাজের জোরালো কণ্ঠ হিসেবেও সক্রিয় প্রতিষ্ঠানটির স্থপতি ও প্রাণপুরুষ শহীদুল আলম৷ নিজের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন সময়ে অসংখ্য আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন তিনি৷ 

প্রিয় পাঠক, শহীদুল আলমকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন? লিখুন মন্তব্যে৷

বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনটি সর্বশেষ জার্মান সময় ০৬ আগস্ট সন্ধ্যা ছয়টায় হালনাগাদ করা হয়েছে৷ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ