‘আমারাও একাত্তরে শরণার্থী হয়ে অন্য দেশে গিয়েছিলাম’
২৫ আগস্ট ২০১২
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত খুলে দিতে আবারো বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷ সংস্থাটি ঐ এলাকায় কর্মরত বেসরকারি সংগঠনগুলোর (এনজিও) উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ারও দাবি করেছে৷ বৃহস্পতিবার সংস্থাটির শরণার্থী বিষয়ক পরিচালক বিল ফ্রেলরিক এক বিবৃতিতে বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের নীতি ‘নিষ্ঠুর' ও ‘অমানবিক'৷ এই নীতি অবিলম্বে পরিবর্তন করা উচিত৷
বাংলাদেশে শরনার্থী নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘রামরু'র প্রধান নির্বাহী তাসনিম সিদ্দিকী ডয়চে ভেলেকে বলেন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এই বিবৃতির সঙ্গে তিনি একমত৷ সরকারের উচিৎ মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দেয়া৷
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের বিবৃতিতে আরো বলেছে, শরণার্থীদের ত্রাণ ও সহায়তা দিতে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা কাজ করছে৷ সরকারের উচিত তাদের স্বাগত জানানো৷ দুই লাখেরও বেশি মুসলিম রোহিঙ্গার জন্য ত্রাণ দিচ্ছে এসব সংস্থা৷ সরকার সম্প্রতি চারটি সংস্থার কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে৷ অবিলম্বে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া দরকার৷ বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের জীবনযাপন এমন ভয়ঙ্কর ও দুর্বিষহ করে তুলেছে যে, মিয়ানমারের বিপদগ্রস্ত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আশ্রয় পাচ্ছে না৷
বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে হত্যা, লুট, উপদলীয় সংঘাতের কবল থেকে বাঁচার জন্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে চায়৷ মিয়ানমার সরকারের দমন ও জাতিগত সংঘাতের কারণেও রোহিঙ্গারা বিপদগ্রস্ত৷ এ অবস্থায় সীমান্ত খুলে দিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদান ও এনজিওদের কাজ করতে দিতে হবে৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের মনে রাখতে হবে আমারাও একাত্তরে শরনার্থী হয়ে অন্য দেশে গিয়েছিলাম৷ তখন আমাদেরও অন্যরা আশ্রয় দিয়েছিল৷''
প্রতিবেদন: সমীর কুমার দে, ঢাকা
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ