মহিলা তাঁর বেবি হাস্কি কুকুরটিকে বগলদাবা করে সাইকেলে চড়ে কোথায় যেন যাচ্ছেন৷ আর হাস্কিটা কী করছে? সামনের দু'টো থাবা ঘুরিয়ে যাচ্ছে – যেন সাইকেল চালাচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
হাস্কি কুকুররা আসলে খুব গম্ভীর, কাজের মানুষ – থুড়ি কুকুর৷ বরফের ওপর দিয়ে স্লেজ টানা, দিনে আড়াইশ' কিলোমিটার দৌড়নো, এই সব হলো ওদের কাজ৷ কিন্তু প্রকৃতির নিয়ম হলো, তুমি বাঘের বাচ্চা হও আর সিংহশাবক হও – কমবয়সে তোমাকে ‘কিউট' হতেই হবে, যাতে তোমাকে দেখে সকলের বাৎসল্য উথলে ওঠে, সকলে তোমাকে সামলে রাখে, খেতে-পরতে দেয়, মারধোর না করে৷
বেবি হাস্কির এই ভাইরাল ভিডিওটা ‘কিউটনেসে' ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করেছে৷ ‘টুইপল', মানে টুইটার ফলো করে থাকেন এমন সব ‘পিপল' বা জনতা নাকি বেবি হাস্কির বাতাসে সাইকেল চালানোর ১৫ সেকেন্ডের ভিডিওটা রিটুইট করে করে আর কিছু রাখেনি! কয়েক লাখ বার রিটুইট – তার সঙ্গে আরো কয়েক লাখ লাইক: এ তো দিন তিনেক আগেকার স্ট্যাটিটিক্স; আজ তা কোথায় পৌঁছেছে, কে জানে৷
কিন্তু কিউটনেস ব্যাপারটার মধ্যেই যেন কোথায় একটা ফাঁক কিংবা ফাঁকি আছে৷ প্রথমত, বেবিরা বোধহয় ঠিক জানে না, কখন তাদের কিউট দেখাচ্ছে অথবা না দেখাচ্ছে৷ জেনেশুনে কিউট হওয়াটাকে বলে ন্যাকামি – প্রয়োজনে বেবিরাও সেটা শেখে৷ কিন্তু বেবিরা সত্যিকারের কিউট হয়, যখন তারা না জেনে কিছু একটা করে – আর তাদের মা, মাসি-পিসি, দিদা-দিদিরা ‘আহা মরে যাই' বলে গলে যান – আগে ওভাবেই লাইক দেযা হতো কিনা৷
হাস্কি বেবি জানেও না যে, সে সাইকেল চালাচ্ছে না৷ সে দেখছে, পায়ের তলা দিয়ে মাটি সরে যাচ্ছে, অর্থাৎ সে ‘চলেছে'৷ আর থাবা না নাড়লে যে ‘চলা' যায় না, এটা তার সহজাত প্রবৃত্তি তাকে বলে দিচ্ছে৷ মনে রাখবেন, কুকুররা কিন্তু ঠিক ঐভাবেই সাঁতার কাটে, ঠিক যেভাবে তারা চলে, সেভাবে, অর্থাৎ থাবার পর থাবা ফেলে৷ বলতে কি, কোনোদিন যদি কোনো কুকুরকে উড়তে দেখেন, তাহলে দেখবেন মাটির পৃথিবীতে চলা, হাঁটা, দৌড়নোর মতোই সে তার থাবা ঘুরিয়ে যাচ্ছে...
ঠিক আমাদের ঐ বেবি হাস্কির মতো৷
কুকুর নিয়ে প্রদর্শনী, কুকুরই সেখানে সুপারস্টার
জার্মানিতে কুকুরের খুব কদর৷ অনেকেই কুকুর পোষেন৷ কুকুর তাঁদের কাছে শুধু বন্ধু নয়, সন্তানতুল্য৷ ছবিঘরে থাকছে বার্লিনের এক জাদুঘরে কুকুর নিয়ে অভিনব প্রদর্শনীর কথা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. v. Jutrczenka
মানুষের সেরা বন্ধু কুকুর
বার্লিনের ‘মিউজিয়াম অফ প্রিন্ট অ্যান্ড ড্রয়িংস’ এবার কুকুর নিয়ে অন্যরকম এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে৷ কুকুর নিয়ে অনেক শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে৷ প্রদর্শনীর নাম, ‘গন টু দ্য ডগস’৷ প্রদর্শনীর উদ্দেশ্য, কুকুরকে মানুষের সেরা বন্ধু হিসেবে তুলে ধরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. v. Jutrczenka
অস্বাভাবিক আচরণ
কিছু কিছু ক্ষেত্রে কুকুরের কাজই ছিল অস্বাভাবিক আচরণ করে কোনো কাজে ব্যাঘাত ঘটানো৷ রেমব্রান্ট তো বাইবেলের মাঝখানেও ভীষণ রাগি এক কুকুর এঁকেছেন৷
ছবি: DWHund in der Kunst
সবসময় কুকুর ছিল, কুকুর আছে
সৃষ্টির আদিকাল থেকেই কুকুর আছে মানুষের পাশে৷ কখনো বিশ্বস্ত পাহারাদার হয়ে, কখনো বন্ধু হয়ে৷ কেউ কেউ মনে করেন, আদম আর হাওয়ার সময় থেকেই কুকুর মানুষের সঙ্গী৷ অজস্র শিল্পকর্মও আছে কুকুর নিয়ে৷ আগোস্টিনো কারাচি, আলব্রেশ্ট ড্যুরার, রেমব্রান্ট, আডল্ফ ফন মেনসেল, অটো ডিক্স এবং ডিটার রোট-এর মতো সুপরিচিত শিল্পীদের ১০০টি ছবি, ছবির প্রিন্ট, অয়েল স্কেচ এবং জলরং স্থান পেয়েছে বার্লিনের প্রদর্শনীতে৷
ছবি: DW/S. Broll
কুকুরপ্রেমীর সেরা ছবি...
বিশ্বের সবচেয়ে দামি ছবির মূল্য ৫ কোটি ৮৪ লাখ ডলার৷ জেফ কুনস-এর আঁকা সেই ছবির নাম, ‘বেলুন ডগ’৷ অনেক কুকুরপ্রেমীর কাছে অবশ্য সেই ছবির চেয়েও দামি নিজের পোষা কুকুরের কোনো ছবি৷ বার্লিনের প্রদর্শনীতে এসে অনেকে তাই নিজের কুকুরের ছবিই তুলেছেন৷
ছবি: DW/S. Broll
সেললেব্রিটি কুকুর...
প্রদর্শনীতে কুকুররাই পেয়েছে সেলেব্রিটির মর্যাদা৷ ‘পাম ডগ’ অ্যাওয়ার্ড জেতা উগি থেকে শুরু করে ইউটিউব-এ সুপারস্টার হয়ে যাওয়া ‘দ্য আর্টিস্ট’ ছবির পিয়ানোবাদক টাকার-এর ছবি তো ছিলই, জলজ্যান্ত কুকুরদের আদর-আপ্যায়নও ছিল দেখার মতো৷ ছবিতে প্রদর্শনীস্থলে কুকুরের জন্য রাখা পানি আর নাশতা৷