1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘স্ত্রী-পুত্রের সঙ্গে মিলিত হতে চাই'

রিম দাওয়া/এসি২৬ ডিসেম্বর ২০১৫

আয়হাম আহমদ হলেন সেই পিয়ানোবাদক, যিনি সিরিয়ার একটি রিফিউজি ক্যাম্পের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পিয়ানো বাজিয়ে বিখ্যাত হন৷ এবার তাঁকে দেওয়া হয়েছে প্রথম আন্তর্জাতিক বেটোফেন পুরস্কার৷

Deutschland Beethovenpreis für Aeham Ahmad
ছবি: DW/R. Fulker

ডিডাব্লিউ: হোমস-এর আল-বাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগীত নিয়ে পড়াশুনা করবার পর আপনি দামেস্কের কাছে ইয়ারমুকের ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু শিবিরে ফেরার সিদ্ধান্ত নিলেন কেন?

আয়হাম আহমদ: ২০১১ সালে বিপ্লব শুরু হবার পর পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে যেতে থাকে৷ আমি ইয়ারমুকে ফিরতে বাধ্য হই৷ তারপর শিবিরটি অবরোধ করা হয়৷ আমাদের কোনো খাবার ছিল না, বিদ্যুৎ ছিল না, পানি ছিল না৷ সব কিছুর দাম চড়া৷ আমরা ঘাসপাতা খেয়ে – এমনকি বেড়াল মেরে খেয়ে বাঁচতে বাধ্য হয়েছি৷ লোকে অনশনে মারা যাচ্ছিল, তাদের মধ্যে আমার কিছু বন্ধ-বান্ধব আর পরিচিতরাও ছিলেন – কিন্তু বিশ্ব কিছুই করেনি৷

পিয়ানো বাজাচ্ছেন আয়হাম আহমদছবি: DW/R. Fulker

সবচেয়ে কষ্ট হতো, যখন দেখতাম, আমার ছেলে আহমদ খিদেয় কাঁদছে....নিজেকে অসহায় মনে হতো....মনে হচ্ছিল, এবার আমিও নিশ্চয় মরব, কাজেই আমি সম্মানের সঙ্গে মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিই, শিবিরের বাসিন্দাদের মধ্যে আমার ‘মিউজিক' দিয়ে আশার আলো জাগানোর সিদ্ধান্ত নিই৷ পিয়ানোটা একটা গাড়িতে বসিয়ে আমি সেটাকে টেনে রাস্তায় বের করে নিয়ে যাই৷ সেখানে আমি আমার নিজের লেখা গান বাজাই, উদ্বাস্তু শিবির আর সিরিয়ার অবস্থা নিয়ে গান, যেখানে রক্ত আর মৃত্যুর উপস্থিতি সর্বত্র৷ আমি পিয়ানো বাজিয়ে আমার বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে গান গাই – কখনো বা বাচ্চা ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে৷ জইনাব বলে যে মিষ্টি মেয়েটি আমার সঙ্গে গেয়েছিল – ভিডিও-টা ইউটিউবে আছে – পরে সে মাথায় গুলি লেগে মারা যায়৷ ওর কথা ভাবলে সত্যিই কষ্ট হয়৷

আপনি সিরিয়া ছাড়লেন কি করে?

গত মে মাসে আমার জন্মদিনে আমি ক্যাম্প ছেড়ে অন্য কোথাও গিয়ে বাজানোর কথা ভাবি; পিয়ানোটাকে একটা ঠেলায় বসিয়ে টেনে নিয়ে যাই তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইসিস-এর একটা চেকপয়েন্ট অবধি৷ সেখানে একজন আইসিস সদস্য আমাকে থামিয়ে জিগ্যেস করে, ‘‘তুমি কি জানো না, এই যন্ত্রটি বাজানো নিষিদ্ধ?'' তারপর সে পিয়ানোটা স্রেফ পুড়িয়ে দেয়৷ সেই সঙ্গে যেন আমার হৃৎপিণ্ড পুড়ে যায়৷

তখন আমি সিরিয়া ছেড়ে জার্মানিতে পালানোর সিদ্ধান্ত নিই৷ এখানে আমি আল ইয়ারমুক ক্যাম্পের কণ্ঠ হতে চাই, সিরিয়ার জন্য একটা কিছু করতে চাই, আমার দুই ছেলে, তিন বছরের আহমদ আর এক বছরের কিনান-এর জন্য একটি নিরাপদ ভবিষ্যতের ব্যবস্থা করতে চাই৷

আমার মা প্রয়োজনীয় অর্থের ব্যবস্থা করেন – প্রায় তিন হাজার ইউরো৷ মা বলেন, ‘‘টাকাটা নিয়ে দেশ ছেড়ে পালাও৷ আমি চাই না যে তোমার তোমার ভাই-এর দশা হোক৷'' আমার ভাইকে তিন বছর আগে গ্রেপ্তার করা হয়৷ আজও সে বেঁচে আছে কিনা, তা আমার জানি না৷

দোতলা পিয়ানো, মিউজিক, সংগীত

03:44

This browser does not support the video element.

এবার আপনি বেটোফেন পুরস্কার পেতে চলেছেন৷ আপনার কাছে এর অর্থ কী?

ইয়ারমুকে থাকাকালীন আমি যে সব গান লিখেছিলাম, অনুষ্ঠানে আমি সেই সব গানই গাইব৷ তার মধ্যে একটি গান আমি গেয়েছিলাম সেই ছোট মেয়েটির সঙ্গে, পরে যে মারা যায়৷ আরেকটি গান আছে, যার কথাগুলো লিখেছিলেন আমার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু, গাজার একটি ছেলে৷ সে-ও পরে মারা যায়....এই সব আমার ভিতরে মিশ্র অনুভূতির সৃষ্টি করেছে, দুঃখের স্মৃতি আর আনন্দের স্মৃতি, সিরিয়ার স্মৃতি৷

বন্ধুরা, কেমন লাগলো পিয়ানোবাদক আয়হাম আহমদের গল্প? জানিয়ে দিন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ