যুক্তরাষ্ট্রে একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশের নির্যাতনে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর আমরা ফেসবুকবাসীরা বর্ণবাদ নিয়ে আলোচনায় ঝাঁপিয়ে পড়েছি৷
বিজ্ঞাপন
শ্বেতাঙ্গদের বর্ণবাদী আচরণে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছি৷ ফ্লয়েডকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার ভিডিও দেখার পর অবশ্য এমন আচরণই স্বাভাবিক৷ তবে স্ট্যাটাস দেয়ার সময় আবেগের সবটুকু দয়া করে এখনই শেষ করে ফেলবেন না৷ কারণ, সহসাই কিন্তু এমন নির্মমতা শেষ হবে না৷
যতদিন পর্যন্ত না আমরা একজন মানুষকে শুধুই মানুষ হিসেবে বিবেচনা করতে পারবো, ততদিন এমন বর্ণবাদী আচরণ ও নির্যাতন চলতেই থাকবে৷ আজ একজন কৃষ্ণাঙ্গ নির্মমতার শিকার হয়েছেন৷ এর জন্য দায়ী একজন শ্বেতাঙ্গ৷ কিন্তু ইতিহাসে দেখা যায়, শ্বেতাঙ্গরাও একসময় দাস হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছেন৷ আর দাসদের সঙ্গেতো মানুষের মতো আচরণের কোনো বাধ্যবাধকতাই ছিল না৷
দয়া করে কেউ ভেবে বসবেন না, শ্বেতাঙ্গদের সঙ্গেও এমন আচরণ হওয়ার কথা উল্লেখ করে আমি জর্জ ফ্লয়েডের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি জায়েজ করতে চাইছি৷ এর ব্যাখ্যায় পরে আসছি৷ আগে কিছু তথ্য জেনে নেই৷
বর্ণবাদ রোখার সাত উপায়
কিছু মানুষের কাজই বিভেদ সৃষ্টি করা, বিদ্বেষ ছড়ানো৷ বর্ণ, ধর্ম, জাতপাত, সংখ্যা, ভাষা বা সংস্কৃতির ভিত্তিতে বর্ণবাদ ছড়ানোর এসব প্রয়াস রুখে দেয়া খুব জরুরি৷ কীভাবে তা সম্ভব? দেখুন সাতটি উপায়...
ছবি: Imago Images/PhotoAlto/F. Cirou
বাকস্বাধীনতার ‘হামলা’ পরিহার
ব্যক্তি থেকে পরিবার, পরিবার থেকে সমাজ, সমাজ থেকে রাষ্ট্র- এভাবে ছোট থেকে খুব বড় পরিসরে বিভিন্ন রূপে থাকে বর্ণবাদ৷ মুখের কথায়ও তা ব্যাপকভাবে ছড়াতে পারে৷ ক্যানাডার অ্যালবার্টা সিভিল লিবার্টিজ রিসার্চ সেন্টার বলছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে ‘ব্যক্তিগত মতামত’ হিসেবে যা কিছু বলা বা লেখার মাধ্যমেও তা ব্যাপক হারে ছড়ায়৷ তাই ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, সংস্কৃতি ইত্যাদির নামে পক্ষপাত বা ঘৃণা প্রকাশ পরিহার করুন৷
ছবি: AP
উদারতায় শ্রেষ্ঠত্ব, অহঙ্কারে নয়
উদারতায় শ্রেষ্ঠত্ব, অহঙ্কারে নয়৷ ধর্ম, জাতপাত, গায়ের রং, উচ্চতা, ভাষা, আঞ্চলিকতা ইত্যাদি দিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করাও বর্ণবাদের নামান্তর৷ যে সমাজ বা রাষ্ট্রে এসব প্রবণতা যত কম, সেই সমাজ বা রাষ্ট্র তত বেশি বর্ণবাদমুক্ত৷
ছবি: Colourbox
অসহিষ্ণুতা ও উগ্রতা বর্জন
কারো মত বা কাজ পছন্দ না হলে তাকে শারীরিক বা মানসিকভাবে আঘাত করার প্রবণতা প্রায় সব সমাজেই দেখা যায়৷ এমন অসহিষ্ণু এবং বিদ্বেষপূর্ণ আচরণে বর্ণবাদ বিস্তৃতি পায়৷ গালাগাল, হুমকি, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা ইত্যাদিও এমন আচরণের অন্তর্ভুক্ত৷
ছবি: Imago/Indiapicture
ভুক্তভোগীর পাশে দাঁড়ান
যে কোনো স্থানে নির্দিষ্ট ব্যক্ত , শ্রেণি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার, অশ্লীলতা কিংবা কুৎসা ছড়ানোর অপপ্রয়াস না রুখলে অপশক্তির সক্রিয়তা বাড়ে৷ ফলে ঘৃণার সঙ্গে সঙ্গে নানা পর্যায়ে বর্ণবাদও বাড়ে৷ মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন প্রতিটি মানুষের উচিত এসব ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীর পাশে দাঁড়ানো৷
ছবি: Imago/E. Biba
রুখে দিন সাইবার দুনিয়ার বর্ণবাদ
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসা শাস্ত্র বিষয়ক তথ্যের উৎস সায়েন্সডাইরেক্ট ডটকম দশ বছরের এক গবেষণা শেষে বলেছে, ইন্টারনেটের প্রসারের ফলে সাইবার দুনিয়ায় বর্ণবাদী তৎপরতা ব্য্যাপকহারে বেড়েছে৷ ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীগতভাবে চালানো হচ্ছে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরণের বর্ণবাদী প্রচার৷ যে কোনো সমাজে বর্ণবাদ রুখতে সাইবার দুনিয়ায় মানবিকতার প্রসার জরুরি৷
ছবি: picture-alliance/imageBROKER/J. Tack
প্রমান রাখুন, কর্তৃপক্ষকে জানান
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানহানিকর যে কোনো বক্তব্যের প্রমাণ রেখে দেয়া উচিত৷ অনেক সময় সম্মান এবং নিরাপত্তার স্বার্থে সাইবার অপরাধ দমন বিভাগকে প্রমাণসহ বিষয়টি জানানো জরুরি হয়ে পড়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/MAXAPP/R. Brunel
সংঘাত নয় সমর্থন চান
সব দেশের সব মানুষের সুখে শান্তিতে থাকার অধিকার আছে৷ কারো বর্ণবাদী আচরণে শান্তি বিঘ্নিত হলেও সংঘাতে না যাওয়া ভালো৷ সংঘাতে অনেক সময় সমস্যা বাড়ে৷ তাছাড়া সংখ্যা বা শক্তিতে পিছিয়ে থাকাদেরই বেশি টার্গেট করে বর্ণবাদীরা৷ সেক্ষেত্রে প্রতিকার বা আত্মরক্ষার জন্য ‘প্রতিবেশীদের’ সমর্থন বা সহযোগিতা চান৷
ছবি: picture-alliance/E.Topcu
7 ছবি1 | 7
যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদের শুরু ষোড়শ শতকে৷ সেই সময় কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকানদের দাস হিসেবে ব্যবহারের জন্য অ্যামেরিকায় নিয়ে যাওয়া শুরু হয়েছিল৷ এরপর প্রায় এক কোটি ২০ লাখ কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকানকে দাস হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়৷
ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির ইতিহাসের সাবেক অধ্যাপক রবার্ট ডেভিসের মতে, ১৫শ' থেকে ১৮শ' শতকের মধ্যে দশ লাখের বেশি মুসলমানকে ইউরোপে দাস হিসেবে ব্যবহার করা হয়৷ একই সময়ে উত্তর আফ্রিকা এবং তুরস্ক, মিশর ও পশ্চিম এশিয়ায় প্রায় ২০ লাখ খ্রিস্টানকে দাস করা হয়েছিল৷ অধ্যাপক ডেভিস বলছেন, ঐ সময়টাতে বিভিন্ন যুদ্ধে পরাজিতদের দাস করা হতো৷
অষ্টম শতকে উত্তর আফ্রিকার মুররা স্পেন ও পর্তুগালের একটি অংশ দখল করার পর শ্বেতাঙ্গ খ্রিস্টানদের দাস হিসেবে ব্য়বহার শুরু করে৷ ১৫শ’ শতকে ইউরোপ থেকে বিতাড়িত হওয়ার আগ পর্যন্ত সেই রীতি চালু ছিল৷
প্রিয় পাঠক, খেয়াল করে দেখুন একটা অংশের মানুষ সবসময়ই নিপীড়নের শিকার হয়ে এসেছে৷ কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে মোটা দাগে বলা যায়, ধর্ম ও বর্ণ দিয়েই মানুষকে আলাদা করা হয়েছে৷ আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, ক্ষমতাবানরা দুর্বলের উপর অত্যাচার চালিয়েছে৷ যুক্তরাষ্ট্রে এখনকার বর্ণবাদেও এই বিষয়টি দেখা যাচ্ছে৷ দেশটিতে কৃষ্ণাঙ্গদের সামাজিক অবস্থান শ্বেতাঙ্গদের ধারেকাছেও নেই৷ তাই শ্বেতাঙ্গ পরিবারে জন্ম নেয়া শিশুটি শুরু থেকেই কৃষ্ণাঙ্গদের কম সামাজিক মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকতে দেখছে৷ কৃষ্ণাঙ্গদের সঙ্গে তাদের বাবা-মায়ের আচরণও দেখছে৷ এবং সেটাকেই তারা স্বাভাবিক মনে করছে৷ ফলে সে-ও বড় হয়ে একই আচরণ করছে৷ প্রজন্মের পর প্রজন্ম এভাবেই চলছে৷
এদিকে, দিনের পর দিন নির্যাতন-অবহেলার শিকার হওয়ায় বেশিরভাগ কৃষ্ণাঙ্গের মনে ক্ষোভ থেকে এক ধরনের হিংস্রতা তৈরি হয়, যা তাদের আচরণে ফুটে ওঠে৷ এমন আচরণ দেখলে তৎক্ষণাৎ আমার-আপনার মনে হয়, তারা এমন কেন? এর পেছনে যে দীর্ঘদিনের নিপীড়ন লুকিয়ে আছে, তখন তা মনে করতে পারি না৷
এছাড়া টিভিতে, পত্রপত্রিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের যেভাবে দেখানো হয় সেটাও আমাদের মনে প্রভাব ফেলে৷ একইভাবে অন্য ধর্ম, বর্ণ, জাতি ও সম্প্রদায়ের মানুষ সম্পর্কেও আমরা ধারণা পেয়ে থাকি৷ পরবর্তীতে বাস্তব জগতে তাদের সঙ্গে দেখা হলে আমরা সেসব ধারণার ভিত্তিতেই আচরণ করে থাকি৷
এটাই কিন্তু মানুষের স্বাভাবিক আচরণ৷ আর এ কারণেই আমার মনে হয় পৃথিবী থেকে কখনো বর্ণবাদ যাবে না৷ তবে বর্ণবাদের ক্ষতিটা যেন কম হয় সেই চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে৷ কারণ, বিষয়টা এমন যে, পরিস্থিতি অনুযায়ী একসময় যেমন আপনি নিজে বর্ণবাদী হয়ে উঠতে পারেন, তেমনি অন্য সময় আপনি নিজেও বর্ণবাদের শিকার হতে পারেন৷
ঘানা: দাসত্বের চারশ বছর
১৬১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছায় আফ্রিকার দাসদের প্রথম চালান৷ ২০১৯ সালে সেই নির্মম ইতিহাসের ৪০০ বছর স্মরণ করেছে ঘানা৷ ‘ফিরে আসার দিন’ মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে প্রবাসী আফ্রিকানদের নিজে দেশে ফিরে আসার উৎসাহ যোগাতে চায় ঘানা৷
ছবি: picture-alliance/CPA Media
স্মরণে পূর্বসূরীরা
আব্দুল সুমুদ শাইবুর বয়স এখন ৫০৷ নিজের স্মার্টফোন বের করে দেখালেন পিতামহের ছবি৷ বললেন, ‘‘তাঁর উচ্চতা দেখেন!’’ তিনি আরো জানান, ‘‘আমার পূর্বসূরীরা ছিলেন অতিকায়, শক্তিশালী এবং সুঠাম দেহী৷’’ শাইবুর কথায় জানা গেল, দাসত্ব ঠেকাতে পূর্বসূরীদের অনেকেই যুদ্ধ করতেন৷ মাঝে মাঝে জয় পেতেন, কিন্তু হেরেও যেতেন৷ আর হেরে যাওয়া মানে আজীবন দাসত্ব৷
ছবি: Reuters/F. Kokoroko
পর্তুগালের পথে
যুক্তরাষ্ট্রে দাস বিক্রির আগে থেকেই পশ্চিম আফ্রিকায় এই বাণিজ্যের প্রচলন ছিল৷ ১৫ শতকের শেষের দিকে, জাহাজে করে নিজ দেশে দাস নিয়ে যেত পর্তুগিজরা৷ ইউরোপীয় দখলদারিত্বের পর আফ্রিকার পশ্চিম উপকূল হয়ে ওঠে দাস রপ্তানির মূল কেন্দ্র৷
ছবি: Imago Images/Leemage
ট্রান্সঅ্যাটলান্টিক ত্রিভূজ বাণিজ্য
দাস ব্যবসার জন্য ইউরোপের ক্ষমতাশালীরা অস্ত্র, টেক্সটাইল বা অ্যালকোহলের জাতীয় পণ্যগুলো আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে নিয়ে আসতো৷ আফ্রিকা থেকে জাহাজগুলো পাল তুলতো অ্যামেরিকার পথে৷ সেখানে চা, কফি বা সুতির মতো লোভনীয় কাঁচামালের বিপরীতে ক্রীতদাসদের বিনিময় করা হতো। আর পণ্যগুলো পাঠানো হতো ইউরোপে৷ তাই পুরো সিস্টেমটিকে বলা হতো ত্রিভুজাকার বাণিজ্য৷
ছবি: gemeinfrei
নিষ্ঠুর সে পথ
ক্রীতদাসদের নিয়ে আটলান্টিক পাড়ি দেয়ার যাত্রা ছিলো খুবই অমানবিক৷ দাসবাহী জাহাজগুলোর শেষ সেন্টিমিটার জায়গাটিও ছাড় দেয়া হতো না৷ আক্ষরিক অর্থে একে অপরের উপরে সারিবদ্ধভাবে রাখা হতো দাসদের৷ বেধে রাখা হতো শিকলে৷ দেওয়া হতো না পর্যাপ্ত খাবার বা পানি৷ আর ক্রীতদাসদের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে তাঁদের জাহাজ হতে ফেলে দেয়া হতো৷
ছবি: picture-alliance/Mary Evans Picture Library
মাঠের কাজ
‘নতুন বিশ্বে’ ক্রীতদাসদের সুতা আর আখ চাষে বাধ্য করা হতো৷ জমির মালিক লাভবান হতেন, আর ক্রীতদাস গরীবই থেকে যেতেন৷ তাঁদের জীবন যাপনও ছিলো মানবেতর৷ শহরের দিকে তাঁদেরকে দিয়ে পণ্য উঠা নামানোর কাজ করানো হত, আর গৃহস্থালি কাজে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের চলতে হতো মালিকের কথা মতো৷ অনেককে আবারো শিল্প-কারখানার কাজে লাগানো হতো৷
ছবি: picture-alliance/CPA Media
পরাধীন জীবন
অনেক দাসের জন্য সহিংসতা ছিল নিত্যদিনের ঘটনা৷ শেকল আর লোহা দিয়ে তাঁদের চিহ্নিত করা হতো৷ কেউ আপত্তি করলেই বেত্রাঘাত৷ এমনকি, ক্রীতদাসরা কোনো সম্পর্কে জড়াবে কি-না সেই সিদ্ধান্তও নিতে পারতো তাঁদের কথিত মালিকরা৷ দাসদের কোনো অধিকার ছিল না৷ একদিন মুক্ত হবেন এই আশাটা ছিলো তাঁদের একমাত্র সম্বল৷ দাসপ্রথার স্মারক হয়ে এই শেকলটি আইভরি কোস্টের একটি যাদুঘরে রাখা আছে৷
ছবি: Reuters/L. Gnago
দাসত্বের জীবন
ট্রান্সঅ্যাটলান্টিক দাস ব্যবসার সুবর্ণ সময় ছিলো ১৮ শতকে৷ আফ্রিকার দুই-তৃতীয়াংশ দাসকে নিয়ে যায় অ্যামেরিকা৷ মানচিত্রটি সেই সাক্ষ্য বহন করছে৷ এই পথ ধরে নোঙ্গর তুলে চলে যেতো দাসবাহী জাহাজ৷ কতোজন আফ্রিকান দাসত্ব বরণ করেছিলেন তার প্রকৃত সংখ্যা নেই৷ অনুমান করা হয় সংখ্যাটি অন্তত চার কোটি৷
ছবি: gemeinfrei
জার্মান দাস ব্যবসায়ী
আজকের ঘানা উপকূলে ‘গ্রো ফ্রেড্রিশবুর্গ’ উপনিবেশ ছিলো ব্র্যান্ডেনবুর্গের ইলেক্টর ফ্রেডরিখ ভিলহেলমের৷ দাস ব্যবসায়ের সময় ঘানাকে ‘সোনালী উপকূল’ বলা হত৷ সেখান থেকে ব্র্যান্ডেনবুর্গাররা ত্রিভুজাকার বাণিজ্যে অংশ নিত৷
ছবি: picture-alliance/akg-images
শ্রদ্ধাঞ্জলি
ঘানার আশান্তি অঞ্চলের গ্রাম আদিওয়ান৷ পূর্বসূরী কোয়ামে বাদুর সমাধিতে গিয়েছিলেন নানা অ্যাসেনসো। অনেক বছর আগে দাস হিসাবে বিক্রি করা হয় কোয়ামে বাদুকে। পূর্বপুরুষের সম্মানে তাঁদের পরিবারে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে এই নামটি চলে আসছে। এমনকি, নানা অ্যাসেনসোর সন্তানের নামও কোয়ামে বাদু৷
ছবি: Reuters/F. Kokoroko
নুহালেনিয়া আদা স্মৃতিসৌধ
নুহালেনিয়া আদা গ্রামে ইনস্টলেশন আর্টের মধ্য দিয়ে পূর্বপুরুষদের স্মরণ করেন ঘানার শিল্পী কাওমে অকোটো বামফো। ১৮০৮ সালে দাস ব্যবসা নিষিদ্ধ করে ব্রিটিশরা৷ নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি ১৮১৫ সালে নিশ্চিত করে ভিয়েনার কংগ্রেস৷ তারপরেও ১৮৭০ সালের আগ পর্যন্ত প্রকৃত অর্থে বিলুপ্ত হয়নি দাস প্রথা৷ ঘানার উপকূলে দাস দুর্গের ধ্বংসাবশেষ সেই যুগের স্মারক হয়ে আছে৷