যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট দাবি করেছেন, তিনি সবচেয়ে কম বর্ণবাদী মানুষ৷ আফ্রিকার কয়েকটি দেশকে শিটহোল বা নোংরা জায়গা বলে গাল দেবার পর তীব্র সমালোচনার মুখে এমন দাবি করেন তিনি৷
বিজ্ঞাপন
রোববার ফ্লোরিডায় রিপাবলিকান নেতা কেভিন ম্যাককার্থির সঙ্গে এক সান্ধ্যভোজ অনুষ্ঠানে যোগ দেবার আগে সাংবাদিকদের কাছে এমন দাবি করেন তিনি৷
‘‘আমি বর্ণবাদী নই৷ নিশ্চিত করে বলতে পারি, যতজনের সাক্ষাৎকার আজ পর্যন্ত আপনারা নিয়েছেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে কম বর্ণবাদী আমি৷''
জাতিসংঘে নিযুক্ত ৫০ জনেরও বেশি আফ্রিকান রাষ্ট্রদূত শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ‘ক্ষমা চাইতে' বলেন৷ ট্রাম্প টুইট করে তাঁর বক্তব্যের একটা অস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছেন৷ তাতে তিনি লিখেছেন, ‘‘বৈঠকে খুব শক্ত মন্তব্য করা হয়েছে৷ কিন্তু যে ভাষার কথা বলা হচ্ছে তা হয়নি৷''
শতাব্দীর সবচেয়ে বড় ‘চড়'
এদিকে, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসও ধুয়ে দিয়েছেন ট্রাম্পকে৷ জেরুসালেমে ইসরায়েলের রাজধানী সরিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন দেবার পর এ ঘটনা নিয়ে রোববার রামাল্লায় দুই দিনের বৈঠক শেষে এক উত্তেজিত বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি৷
আব্বাস বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে ‘শান্তি স্থাপনে' যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগ এবং জেরুসালেম সিদ্ধান্ত ‘শতাব্দীর সবচেয়ে বড় চড়' ছাড়া আর কিছু নয়৷ ‘‘জেরুসালেম আমাদের চিরদিনের রাজধানী৷ আবু দিসকে রাজধানী করার আহ্বান কখনো গ্রহণযোগ্য হবে না৷''
আবু দিসকে বিকল্প রাজধানী করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র আহ্বান করেছে বলেও জানান তিনি৷ সেইসঙ্গে ভবিষ্যতে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলে শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভুমিকা মানা হবে না বলেও জানান আব্বাস৷
‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি’: ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে একনজর
মার্কিন সাংবাদিক মাইকেল উলফের বই ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি’ প্রকাশের আগেই ওয়াশিংটনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে৷ বইতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং হোয়াইট হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার রয়েছে৷ হোয়াইট হাউসের অন্য চিত্র ফুটে উঠেছে এতে৷
ছবি: picture alliance/ZUMAPRESS/D. Higgins
‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি’
মার্কিন সাংবাদিক মাইকেল উলফের নতুন বই ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি: ইনসাইড দ্য ট্রাম্প হোয়াইট হাউস’৷ এই বইয়ের বিশেষ কিছু অংশ মার্কিন এবং ব্রিটিশ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে৷ বইটিতে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে হোয়াইট হাউসের এক অন্য ছবি উঠে এসেছে৷ ম্যাকডোনাল্ড বার্গারের প্রতি ভালোবাসা থেকে ইভানকা’র প্রেসিডেন্ট হওয়ার স্বপ্ন এমন নানা বিষয় উঠে এসেছে এতে৷
ছবি: picture-alliance/AP/B. Camp
‘মেলানিয়ার চোখে জল’
‘‘নির্বাচনের রাতে, ৮টার একটু পরে, যখন মোটামুটি নিশ্চিত ট্রাম্প হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট, ট্রাম্প জুনিয়র তার বন্ধুকে বলেছিলেন, তার বাবাকে এমন দেখাচ্ছিল, যেন ভূত দেখেছেন৷ মেলানিয়ার চোখে ছিল জল, তবে তা আনন্দের নয়৷ এর এক ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে হতবাক ট্রাম্পকে এমন দেখাচ্ছিল যেন তিনি ঠিক বিশ্বাস করতে পারছেন না, তাঁকে দ্বিধাগ্রস্ত আর ভীত দেখাচ্ছিল৷’’
ছবি: picture-alliance/AP/V. Mayo
ইভানকা ট্রাম্প প্রথম ‘নারী প্রেসিডেন্ট’?
‘‘কোনো পুরস্কার পেতে হলে ঝুঁকি নিতে হবে– জ্যারেড এবং ইভানকা এটা মেনে নিয়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করছেন, অন্যদের পরামর্শ মেনে কাজ করছেন৷ দু’জনের মধ্যে যেন এক অলিখিত চুক্তি: ভবিষ্যতে কখনো যদি সুযোগ আসে, ইভানকাই লড়বেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে৷ যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিলারি নন, হবেন ইভানকা৷’’
ছবি: picture-alliance/AP/M. Sohn
ফাস্ট ফুড খেতে লাগে ভালো
‘‘অনেক আগে থেকে ট্রাম্পের মধ্যে একটি চিন্তা কাজ করে যে, কেউ তার খাবারে বিষ মিশিয়ে দিবে– এই চিন্তা থেকেই ম্যাকডোনাল্ডসের খাবার বেছে নিয়েছেন তিনি৷ কেননা, ম্যাকডোনাল্ডসের খাবার আগে থেকেই তৈরি থাকে৷ তাই কেউ জানে না যে ট্রাম্প সেটা খাবেন৷’’
ছবি: Instagram
ব্যাননের তত্ত্ব
‘‘ব্যাননের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান শত্রু হলো চীন৷ নতুন শীতল যুদ্ধের প্রথম ফ্রন্ট হলো চীন৷ চীনকে নিয়েই মাথা ঘামানো উচিত, আর কিছু নিয়ে নয়৷ চীনের সঙ্গে যদি সম্পর্ক ঠিক না থাকে, কোনো কিছুই ঠিক থাকবে না৷ পুরো ব্যাপারটা খুব সহজ৷ চীনের বর্তমানে যা অবস্থা, ১৯২৯ থেকে ১৯৩০ সালে জার্মানির নাৎসিদেরও এমন অবস্থাই ছিল৷ চীনারা, জার্মানদের মতোই ভীষণ বাস্তববাদী৷’’
ছবি: picture-alliance/AP/B. Anderson
ব্যানন: ডোনাল্ড জুনিয়র ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’
‘‘ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র, জ্যারেড কুশনার এবং নির্বাচনি প্রচারণার ব্যবস্থাপক পল ম্যানাফোর্ট মনে করেন, ট্রাম্প টাওয়ারের ২৬ তলায় সম্মেলন কক্ষে বিদেশি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকটি একটি ভালো পরিকল্পনা ছিল৷ সেখানে কোনো আইনজীবী ছিল না৷ এখন যদি আপনার কাছে মনে হয় এটা রাষ্ট্রদ্রোহ না, দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড নয়, তারপরও আমি বলবো, এটা রাষ্ট্রদ্রোহ৷ আমাদের ঠিক সেই মুহূর্তেই এফবিআইকে খবর দেয়া উচিত ছিল৷’’
ছবি: picture-alliance/AP/C. Kaster
‘হেরে গেলেও জিতে জেতেন’
‘‘ট্রাম্প যদি নির্বাচনে হেরেও যেতন, তাহলেও বিখ্যাত হতেন৷ তার মেয়ে ইভানকা এবং জামাই জ্যারেড আন্তর্জাতিক তারকা বনে যেতো৷ স্টিভ ব্যানন হতো টি-পার্টি আন্দোলনের ডি ফ্যাক্টো প্রধান৷ অর্থাৎ হেরে গেলেও তাদের অন্যরকম জয় হতো৷’’