দু’চোখ বেঁধে এবার ভারতের এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবকও পথে নেমেছেন৷ নেমেছেন একটা পরীক্ষা করতে৷ পরীক্ষাটা হলো ‘মুসলমানদের আমরা কতটা বিশ্বাস করি' – তার এক্সপেরিমেন্ট৷ ফ্রান্সে সন্ত্রাসী হামলার পর এমন পরীক্ষা হয়েছে বিশ্ব জুড়ে...৷
বিজ্ঞাপন
তথাকথিত ইসলামিক স্টেট, আল-কায়েদা, তালেবান – এ সমস্ত জঙ্গি দলের অধিকাংশ সদস্যরাই মুসলমান৷ কিন্তু তাই বলে সব ইসলাম ধর্মাবলম্বরীরাই কি সন্ত্রাসী? একজন সন্ত্রাসী হলো একজন সন্ত্রাসী, যে আরেকজন মানুষকে তুচ্ছ কারণে হত্যা করতে রাজি৷ একজন সত্যিকারের মুসলমান কি কখনও তা করবেন? করবেন না৷ ইসলাম শব্দের অর্থই যে শান্তি৷
হ্যাঁ, এই বিশ্বাস নিয়েই মুম্বইয়ে একটা পার্কের কাছে, কাপড় দিয়ে নিজের চোখ দু’টো বেঁধে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক যুবক৷ পরনে সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি৷ আর পায়ের কাছে রাখা একটা কাগজ৷ তাতে লেখা – ‘‘আমি একজন মুসলমান৷ আমি আপনাকে বিশ্বাস করি৷ আপনি কি আমাকে বিশ্বাস করে আলিঙ্গন করবেন?''
ভিডিওটা ক্লিক করলেই দেখবেন, কেমন অসহায়ের মতো আলিঙ্গনের জন্য দুই হাত খুলে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি৷ তাঁর পাশ দিয়ে মানুষজন চলে যাচ্ছে, অথচ কেউ-ই যেন তাঁকে দেখেও দেখতে পারছে না৷ কেউ কেউ আবার কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে কাগজের লেখাটা পড়ার পরও, তাঁকে পাশ কাটিয়ে চলে গেছে৷ কেউ বা তুলে নিয়েছে আজব এই কাণ্ডটার ছবি৷ ধীরে ধীরে ভিড় করেছে মানুষ৷ কৌতূহলী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকেছে তারা৷ বেশ কিছুক্ষণ পরে দু'টি মেয়ে এসে ‘হ্যান্ডশেক' করেছে, কিন্তু ‘হাগ' দেয়নি৷ ভারতের মতো একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশে, মুম্বইয়ের মতো একটি আধুনিক, বাণিজ্য নগরীতে যুবককে আলিঙ্গন করার জন্য এগিয়ে আসেনি কেউ৷
অথচ অন্যান্য দেশে, তা সে সুইডেন হোক, অথবা তুরস্ক – কয়েক মিনিটের মধ্যেই মানুষ এগিয়ে এসেছিল৷ কিন্তু ভারতীয় এই মুসলমানকে ওভাবেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে মিনিটের পর মিনিট৷ অবশ্য শেষ পর্যন্ত সাড়া পেয়েছেন তিনি৷
এই পরীক্ষার ফলকে আপনি কি সফল বলবেন? জানান নীচের মন্তব্যের ঘরে৷
ডিজি/এসবি
এক ছাদের নীচে মসজিদ, গির্জা আর সিনাগগ!
জার্মানির বার্লিনে এমনই এক উপাসনালয় তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ নাম – ‘হাউজ অফ ওয়ান’৷ আর এ জন্য ‘ক্রাউডফান্ডিং’-এর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের কাজ চলছে৷
ছবি: Lia Darjes
এক ছাদের নীচে
জার্মানির বার্লিনে এমন একটি ভবন প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করা হয়েছে যেখানে এক ছাদের নীচে ইসলাম, খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের প্রার্থনার জন্য আলাদা অংশ বরাদ্দ থাকবে৷ ‘হাউজ অফ ওয়ান’ নামের এই ভবনে থাকবে অন্য আরেকটি অংশ, যেখানে তিন ধর্মের অনুসারীরা একসঙ্গে মিলিত হয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে পারবেন৷
ছবি: KuehnMalvezzi
তিন উদ্যোক্তা
প্রোটেস্ট্যান্ট যাজক গ্রেগর হোব্যার্গ, রাব্বি টোফিয়া বেন-চোরিন ও ইমাম কাদির সানচির যৌথ উদ্যোগে পরিকল্পনাটি গ্রহণ করা হয়েছে৷ এ প্রসঙ্গে সানচি বলেন, ‘‘তিন ধর্মের চলার পথ আলাদা হলেও লক্ষ্য একই৷’’ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তিন ধর্মের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলা এর অন্যতম একটি উদ্দেশ্য৷
ছবি: Lia Darjes
গির্জার স্থানে
বার্লিনের যে স্থানে ভবনটি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে সেখানে আগে ছিল একটি গির্জা৷ শীতল যুদ্ধের সময় সেটি ধ্বংস হয়ে যায়৷ তারপর থেকে জায়গাটি খালি পড়ে আছে৷
ছবি: Michel Koczy
শুরুতে মুসলিমদের আগ্রহ ছিল না
প্রকল্পের শুরুতে কোনো মুসলিম সম্প্রদায় এর সঙ্গে জড়িত হতে আগ্রহী ছিল না৷ পরে ‘ফোরাম ফর ইনটেলেকচুয়াল ডায়ালগ’ নামের তুর্কিভাষী সুন্নি মুসলিমদের একটি সংগঠন এর সঙ্গে যুক্ত হয়৷
ছবি: KuehnMalvezzi
খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের সমালোচনা
জার্মানির ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের নেতা মার্টিন মোসেবাখ বলেন, ভবনটির নকশায় ‘পবিত্র’ বিষয়টি নেই৷ নকশাটি দেখে ‘ফারাউনের কবর’-এর মতো আকারহীন মনে হয়৷ ইহুদিদের একটি অংশও এই পরিকল্পনার সমালোচনা করেছে বলে জানা যায়৷
ছবি: Lia Darjes
তহবিল সংগ্রহ
ভবনটি তৈরি করতে ৪৩ মিলিয়ন ইউরো প্রয়োজন৷ ক্রাউডফান্ডিং-এর মাধ্যমে সেই টাকা তোলার প্রক্রিয়া চলছে৷