২৩ দিনে গাজায় নিহত হয়েছে ১৩শ'র বেশি মানুষ৷ আহত হয়েছে অন্তত আট হাজার৷ তারপরও বন্ধ হয়নি ইসরায়েলের হামলা৷ বরং অভিযান আরো বাড়াতে অতিরিক্ত ১৬,০০০ সেনা আহ্বানের ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল৷
বিজ্ঞাপন
কেবল বুধবারই জাতিসংঘ শরণার্থী স্কুল ও একটি মার্কেটে হামলাসহ ইসরায়েলের অভিযানে নিহত হয়েছে ১১৬ জন ফিলিস্তিনি৷ আর ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে তিন জন৷ বৃহস্পতিবারও অব্যাহত রয়েছে হামলা৷ এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোরে উত্তরাঞ্চলের শহর বেইত লাহিয়ায় জাতিসংঘের একটি স্কুলের পাশে থাকা মসজিদে আঘাত হানে ইসরায়েলি গোলা৷ এতে আহত ১৫ জনের মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক৷ আহত এক নারী জানালেন, গাজায় বর্তমানে নিরাপদ কোনো স্থান নেই৷ জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, গাজায় নিহতদের ৪০ ভাগ শিশু, নারী এবং বৃদ্ধ৷
গাজাবাসীর ‘লাইফলাইন’ টানেল নেটওয়ার্ক
গাজায় ইসরায়েলের হামলার অন্যতম উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হচ্ছে টানেলের কথা, যেগুলো হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে প্রবেশের জন্য ব্যবহার করছে৷ এগুলো ধ্বংস করতে চায় ইসরায়েল৷ তবে এসব টানেল অন্য অনেক কাজেও ব্যবহার হচ্ছে৷
ছবি: picture alliance/landov
‘লাইফলাইন’ এবং চোরাচালানের পথ
ফিলিস্তিনিরা টানেল বা সুড়ঙ্গগুলোকে তাদের লাইফলাইন মনে করে, যদিও ইসরায়েল এগুলোকে বিবেচনা করে অস্ত্র চোরাচালান এবং চোরাগোপ্তা হামলার পথ হিসেবে৷ চারপাশ থেকে আবদ্ধ গাজার সঙ্গে বিশ্বের সংযোগের অন্যতম পথ এসব টানেল৷ এগুলো ব্যবহার করে এমনকি পশুও গাজায় নেয়া হয়৷
ছবি: Getty Images
নিজেদের ভূমিতে কারাবন্দি
গাজায় প্রায় দুই মিলিয়ন মানুষের বাস৷ প্রতিবেশী দেশ ইসরায়েল এবং মিশর থেকে তাদের বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে উঁচু দেয়াল দিয়ে৷ সীমান্ত চেকপোস্টগুলোতে রয়েছে কড়া পাহারা৷ একসময় মিশরের রাফা সীমান্ত ব্যবহার করে গাজার বাইরে যেতে পারতো ফিলিস্তিনিরা৷ কিন্তু ২০০৭ সালের জুনে হামাস গাজার ক্ষমতা নেয়ার পর বন্ধ হয়ে গেছে সেই সীমান্তও৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ঝুঁকিপূর্ণ নির্মাণকাজ
আর তখন থেকে গাজাবাসী বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে একমাত্র টানেল বা সুড়ঙ্গ ব্যবহার করে৷ এগুলো অধিকাংশক্ষেত্রে তৈরি করা হয় অনিরাপদ এবং সাধাসিধে উপায়ে৷ নির্মাণকাজে ব্যবহার হয় বেলচা এবং কাঠ৷ তরুণ ফিলিস্তিনিদের জন্য অর্থ উপায়ের অল্প কিছু মাধ্যমের একটি এই সুড়ঙ্গ খনন৷ তবে এই কাজে মৃত্যু ঝুঁকিও আছে৷
ছবি: Getty Images
গোপন প্রবেশপথ
টানেলে প্রবেশের পথ অধিকাংশক্ষেত্রে সাধারণ বাসাবাড়ির মধ্যে থাকে৷ মূলত বাইরে থেকে যাতে বোঝা না যায়, সেজন্য এই ব্যবস্থা৷ যারা এসব টানেল ব্যবহার করতে চান, তাদের এজন্য টাকা খরচ করতে হয়৷ ইসরায়েল মনে করে, গাজাবাসী টানেল ব্যবহারের জন্য যে টাকা খরচ করেন, তা অন্যান্য চাহিদা মেটাতে আরো ভালো কাজেও ব্যবহার করা যেতে পারে৷
ছবি: Getty Images
নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্র আনার পথ
ফিলিস্তিনিরা এসব টানেল ব্যবহার করে নির্মাণকাজের জন্য সিমেন্ট এবং অন্যান্য উপাদান গাজায় আনেন৷ ঘরবাড়ি তৈরি কিংবা সংস্কারে এগুলো দরকার হয়৷ এছাড়া ভোগ্যপণ্য, কাপড় এমনকি রকেট এবং বিস্ফোরকও টানেল দিয়েই গাজায় আসে৷
ছবি: DW/T. Krämer
সময়ের সাথে সাথে বেড়েছে
গত ত্রিশ বছরের বেশি সময় ধরে গাজায় টানেল রয়েছে৷ ১৯৭৯ সালে ইসরায়েল এবং মিশরের মধ্যে শান্তি চুক্তির পর রাফা শহরটি বিভক্ত হয়ে যায়৷ এর অর্ধেক চলে যায় মিশরের দখলে বাকিটা গাজার৷ তখন থেকেই শহরটির দুই অংশের মধ্যে যোগাযোগ এবং মালামাল পরিবহণের উপায় হয়ে ওঠে সুড়ঙ্গ পথ৷
ছবি: Getty Images
মিসাইল থেকে বাঁচার উপায়
এখন অনেক সাধারণ টানেলেও যোগাযোগের আধুনিক সরঞ্জাম রয়েছে৷ বিশেষ করে বিদ্যুৎ এবং টেলিফোনের কথা বলা যায়৷ সুড়ঙ্গ খননের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা মাটির উপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন টেলিফোনের মাধ্যমে৷ আর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী যখন আক্রমণ করে, তখন অনেক ফিলিস্তিনি জীবন বাঁচাতে বা লুকিয়ে থাকতে টানেলে আশ্রয় নেন৷
ছবি: Getty Images
মিশরও ধ্বংস করছে সুড়ঙ্গ
শুধুমাত্র ইসরায়েলই গাজার সুরক্ষা নেটওয়ার্ক ধ্বংসের চেষ্টা করছে না৷ মিশরও এগুলোর বিরোধী৷ সেদেশের সিনাই উপত্যকায়ও হামাসের হামলার অভিযোগ রয়েছে৷ তাই মিশরের সেনারাও বছরের পর বছর তাদের ভূখণ্ডের নীচে থাকা টানেল ধ্বংসের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে৷
ছবি: DW/S.Al Farra
মাটির নীচে বিপদ
শুধুমাত্র ইসরায়েলি সেনাদের হত্যার উদ্দেশ্যেও অনেক সুড়ঙ্গ খোঁড়া হয়েছে৷ ২০০৪ সালে হামাসের প্রকাশিত এই ছবিতে কিছু বিস্ফোরক দেখানো হয়েছে যা ব্যবহার করে সেবছরের ডিসেম্বরে ইসরায়েলের একটি সেনা ঘাঁটির নীচে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল৷ এতে পাঁচ ইসরায়েলি সেনা নিহত এবং দশজন আহত হন৷
ছবি: Getty Images
সুড়ঙ্গে মন্ত্রী
গাজা থেকে ইসরায়েলে প্রবেশের জন্য তৈরি এই সুড়ঙ্গটি ২০১৩ সালে প্রদর্শন করেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোসা ইয়ালন৷ ইসরায়েলের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, হামেস এই টানেল দিয়ে ইসরায়েলে হামলা এবং ইসরায়েলিদের অপহরণ করেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আক্রমণ চলছেই
ইসরায়েল দাবি করেছে, গাজায় কয়েক ডজন টানেল ধ্বংসে সক্ষম হয়েছে তাদের সেনাবাহিনী৷ গত আট জুলাই থেকে গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল৷ এতে বুধবার (৩০.০৭.১৪) পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে বারোশ’র বেশি মানুষ, যাদের অধিকাংশই নিরীহ ফিলিস্তিনি৷
ছবি: picture alliance/landov
11 ছবি1 | 11
১৭ জুলাই থেকে গাজায় স্থল অভিযান শুরুর পর ৩২টি টানেল বিধ্বস্ত করার দাবি করেছে ইসরায়েলি সেনারা৷ এই টানেলগুলো গাজা অধিবাসীদের খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহের পথ ছিল৷ অল্প কয়েকদিনের মধ্যে সব টানেল উড়িয়ে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে তারা৷
হামাসের পাল্টা জবাব
জাতিসংঘের স্কুল ও বাজারে হামলার পর যুদ্ধে অটল থাকার ঘোষণা দিয়েছে হামাস৷ তারা তেল আভিভে রকেট হামলা চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে৷
বান কি মুনের নিন্দা
জাবালিয়ায় স্কুলে ইসরায়েলের চালানো হামলার কড়া নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন৷ কোস্টারিকা সফরের সময় মুন বলেন, জাতিসংঘের স্কুলে আশ্রয় নেওয়া হাজার হাজার ফিলিস্তিনি পরিবারের ওপর চালানো ওই হামলা ন্যাক্কারজনক৷ তিনি এই হামলাকে ইসরায়েলের অন্যায় আচরণ হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং সুবিচার দাবি করেন৷
বুধবার ভোরে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলার সময় নারী ও শিশুসহ ৩,৩০০ জন ফিলিস্তিনি ছিল৷ জাতিসংঘ ত্রাণ সংস্থার প্রধান পিয়েরে ক্রাহেনবুয়েল বলেছেন, ইসরায়েলের শতভাগ চেষ্টা করা উচিত হামলায় যাতে কোনো বেসামরিক নাগরিক আঘাত না পায়, বিশেষ করে গাজায়৷ তিনি বলেন, গাজা ছোট্ট একটি উপকূলীয় এলাকা, যেখানে ১৭ লাখ মানুষের বাস৷ সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর অন্তত দুই লাখ শরণার্থী ৮০টি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানান তিনি৷
পিয়েরে আরো বলেন, বিশ্ব নেতারা হয়ত ভুলে যাচ্ছেন, গাজার এই মানুষদের পালাবার কোনো পথ নেই৷ যখনই হামলা হচ্ছে তারা হয়ত এক স্থান থেকে অন্যত্র সরে যাচ্ছে কিন্তু সীমান্ত পার হতে পারছে না৷
গাজার শিশুদের কী অপরাধ?
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য মানুষ৷ পরিসংখ্যান বলছে, নিহতদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশই শিশু ও নারী৷ বোমার আঘাতে প্রাণ হারানো শিশুরা হয়ত যুদ্ধ কি তাই জানে না৷ গাজার শিশুদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: Reuters
ধ্বংসের মাঝে বেঁচে থাকা
ইসরায়েলি বিমান হামলায় বিধ্বস্ত একটি গাড়ি পরীক্ষা করে দেখছে এক ফিলিস্তিনি শিশু৷ ছবিটি গত ১৪ জুলাই তোলা৷ বিমান হামলায় গাজায় নিহতদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশই নারী ও শিশু৷
ছবি: Mohammed Abed/AFP/Getty Images
পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা
ইসরায়েলের বিমান হামলা থেকে বাঁচতে পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটছেন ফিলিস্তিনিরা৷ তবে গাজায় তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নেই বললেই চলে৷ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা মনে করেন, ইসরায়েলের হামলা সহসা বন্ধের কোনো লক্ষণ নেই৷
ছবি: Reuters
অপেক্ষা
ইসরায়েলি হামলায় আহত ফিলিস্তিনি এই ছেলেটি গাজার দক্ষিণাঞ্চলে মিশর সীমান্তে অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে মিশরে ঢোকার জন্য অপেক্ষা করছে৷ আহতদের চিকিৎসার সুবিধার্থে মিশর রাফা সীমান্ত খুলে দেয় ১০ জুলাই৷
ছবি: Said Khatib/AFP/Getty Images
স্কুলে রাতযাপন
বাড়িতে যে-কোনো মুহূর্তে পড়তে পারে ইসরায়েলের বোমা৷ তাই ঘরবাড়ি ছেড়ে এই শিশুরা আশ্রয় নিয়েছে গাজায় অবস্থিত জাতিসংঘের স্কুলে৷ এখানে যে বোমা পড়বে না, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই৷ তবে আশঙ্কা কম৷
ছবি: Mahmud Hams/AFP/Getty Images
আতঙ্ক
বাড়ির উপরে উড়ছে ইসরায়েলি ড্রোন৷ আর সেটাই দেখছে এই শিশুটি৷
ছবি: Thomas Coex/AFP/Getty Images
ইয়াসমিনের জানাজা
গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলের বিমান হামলায় প্রাণ হারায় চার বছরের শিশু ইয়াসমিন৷ ছবিটি ১০ জুলাই তার জানাজার সময় তোলা৷
ছবি: Reuters
বিনা অপরাধে শাস্তি
গাজার শিশুরা জানে না তাদের অপরাধ কি? কেনই বা বোমা হামলার নির্মম শিকার তারা? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটারেও এমন প্রশ্ন করেছেন অনেকে৷ গত ১৪ জুলাই তোলা ছবিতে চাচার মৃত্যুতে কাঁদছে দুই শিশু৷
ছবি: Mahmud Hams/AFP/Getty Images
প্রতিবন্ধীদের আশ্রয়
ছবিটি ২০১২ সালের এপ্রিলে তোলা৷ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এক শিশুকে জাতিসংঘের স্কুলে নিয়ে যাচ্ছে তার এক সহপাঠী৷ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আহতও হচ্ছে অসংখ্য শিশু৷ পঙ্গুত্ব নিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে তাদের৷ তবে এই শিশুটি ইসরায়েলি হামলায় দৃষ্টি হারিয়েছে কিনা জানা যায়নি৷
ছবি: Reuters
নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান
ইসরায়েলের বিমান হামলা থেকে বাঁচতে অনেক ফিলিস্তিনি তাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান করছেন৷ তবে গাজার দু’দিকে ইসরায়েল, একদিনে মিশর এবং অপর পাশে সমুদ্র৷ এই অবস্থায় নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাওয়া দুষ্কর৷ তবুও প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
হামলা নতুন নয়
গাজায় ইসরায়েলের হামলা নতুন নয়৷ হামাসের রকেট ছোড়ার জবাব সেদেশ দেয় বিমান হামলার মাধ্যমে৷ আর তাতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রাণ হারায় নারী, শিশু এবং হামাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন মানুষ৷
ছবি: Reuters
10 ছবি1 | 10
মানবাধিকার সংস্থা'র আহ্বান
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির কাছে পাঠানো এক চিঠিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আবেদন ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা৷
ইসরায়েলের দাবি
ইসরায়েলের দাবি গত তিন সপ্তাহে হামাস অন্তত ২,৬০০ রকেট ছুড়েছে তাদের বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে৷ হামাস গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে জানিয়েছে তারা৷
এর আগে ২০০৯ সালে ২২ দিন ধরে চলা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষে নিহত হয়েছিল ১,৪৪৪ জন ফিলিস্তিনি এবং ১৩ জন ইসরায়েলি নাগরিক৷