1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
বিচার ব্যবস্থাভারত

আরজি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী, টাস্ক ফোর্সও গঠন সুপ্রিম কোর্টের

২০ আগস্ট ২০২৪

চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের জন্য টাস্ক ফোর্স গঠন ও আরজি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের।

দিল্লিতে সুপ্রিম কোর্টের ববন।
আরজি কর নিয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিলো সুপ্রিম কোর্টের। ছবি: picture-alliance/NurPhoto/N. Kachroo

আরজি কর-কাণ্ডের পর নিজে থেকে মামলা হাতে নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানিয়েছেন, ''পরিস্থিতির বদল ঘটানোর জন্য দেশ আরেকটি ধর্ষণ, হত্যার জন্য অপেক্ষা করতে পারে না।'' তাই নিজে থেকে শুরু করা এই মামলার প্রথম দিনে বেশ কয়েকটি নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

তার মধ্যে অন্যতম আরজি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআইএসএফ নিয়োগ করা হবে। নিরাপত্তার ভার থাকবে তাদের উপর। বস্তুত এদিন শুনানি চলার সময় কলকাতা পুলিশ ও তাদের কাজ নিয়ে প্রচুর প্রশ্ন ও মন্তব্য করেন বিচারপতিরা। তারপর চিকিৎসকরা যাতে কাজে ফিরতে পারেন, তার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

তবে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, তারা দেশের সব হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করছেন। সেই টাস্ক ফোর্সে কারা থাকবেন, সেটাও জানিয়ে দিয়েছে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। এই টাস্ক ফোর্সের কাছ থেকে তারা কোন বিষয়ে সুপারিশ চান, সেটাও জানিয়েছেন বিচারপতিরা। তাছাড়া টাস্ক ফোর্স চাইলে সংশ্লিষ্ট অন্য যে কোনো বিষয়ে সুপারিশ করতে পারবে।

সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকার যেন কোনো বিক্ষোভকারীর উপর তাদের শক্তি প্রয়োগ না করে। বিক্ষোভ যদি শান্তিপূর্ণ হয়, তাহলে তার উপর কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নেওয়ার কথা বলেছেন বিচারপতিরা।

আন্দোলনরত চিকিৎসকদের কাছে সর্বোচ্চ আদালতের অনুরোধ, ''আপনারা এবার কাজে যোগ দিন। এমসের উদাহরণ তুলে তারা বলেছেন, অনেক ক্ষেত্রে এমসের অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে দুই বছর লেগে যায়। একবার যদি তা বাতিল হয়ে যায়, তাহলে আরো দুই বছর অপেক্ষা করতে হবে।''

প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ''এটা শুধু কলকাতার বিষয় নয়, এটা দেশের সিস্টেম ব্যর্থ হওয়া। আদালত পুরো দেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসক নিয়ে চিন্তিত।''

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এদিন সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন কপিল সিবাল। বিচারপতিরা তাকে প্রশ্ন করেন, পুলিশ কখন এফআইআর করে?

কপিল সিবাল জানান, বেলা সাড়ো বারোটা নাগাদ পুলিশ আনন্যাচেরাল ডেথ বলে রিপোর্ট দেয়। বিচারপতিরা জানতে চান, কেন রাত পর্যন্ত এফআইআরে হত্যা কথাটা লেখা হলো না? মৃতার পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেয়ার তিন ঘণ্টা পরে কেন এফআইআর করা হলো?

বিচারপতিরা বলেন, "সৎকারের জন্য মৃতদেহ কখন পরিবারকে দেওয়া হয়? এফআইআর দায়ের হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দেহ দিয়ে দিলেন?”

সুপ্রিম কোর্ট জানতে চায়, পরের দিন কী করে মানুষ ঢুকে ভাঙচুর করলো?  পুলিশের কাজ হলো ক্রাইম সিন বা অপরাধের জায়গা রক্ষা করা, কেন তারা সেই কাজে ব্যর্থ হলো? সাত হাজার মানুষ কী করে ঢুকে পড়লো? পুলিশ কী করছিল, তারা কি ভাঙচুরের অনুমতি দিয়েছিল?

সাবেক অধ্যক্ষকে নিয়ে

বিচারপতিরা প্রশ্ন করেন, অধ্যক্ষ কী করছিলেন?  তিনি কী করে প্রথমে এটাকে আত্মহত্যা বলেন? হাসপাতাল কেন সময়ে এফআইআর করেনি?

বিচারপতিরা বলেন, ''আরজি কর থেকে প্রিন্সিপালকে সরিয়ে আরেকটি কলেজের প্রিন্সিপাল করা হলো। তার কাজ কি স্ক্রুটিনি করা হলো? আমরা চাই সিবিআই বৃহস্পতিবার স্টেটাস রিপোর্ট দিক। আমরা সকালে সেই রিপোর্ট দেখব। আমরা দেখতে চাই তদন্ত কোথায় যাচ্ছে। তারপর আমরা নির্দেশ দেব।''

টাস্ক ফোর্স যা দেখবে

বিচারপতিরা জানিয়েছেন, টাস্ক ফোর্স দেখবে, কীভাবে চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। নারী চিকিৎসক ও কর্মীরা যেন কোনোরকম হেনস্থার মধ্যে না পড়েন। দেখা গেছে, রোগী বা তার আত্মীয়রা অনেক সময়ই সহিংসতার পিছনে থাকেন। তাদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের বিষয়টাও তারা দেখেবন।

সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, রাতের ডিউটিতে রেস্টিং স্পেস নেই। ডিউটি রুম আলাদা নেই। ইন্টার্ন, রেসিডেন্টস ও সিনিয়ার রেসিডেন্টস ৩৬ ঘণ্টার ডিউটি করে, টয়লেট অপ্রতুল। অনেক সময়ই চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের থাকার জায়গা হাসপাতাল থেকে অনেক দূরে। তাদের রাতে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা থাকে না। সুরক্ষা থাকে না। হাসপাতাল থেকে গাড়ি দেয়া হয় না। সিসিটিভি ক্যামেরা কম। এই সব বিষয় টাস্ক ফোর্স দেখবে। তারা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলবে। প্রতিটি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পুরুষ ও নারী  চিকিৎসক ও কর্মীদের জন্য আলাদা রেস্ট রুম থাকা দরকার। সেখানে পর্যান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা দরকার।

প্রধান বিচারপতি বলেছেন, তারা সারা দেশের চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে চান। সেজন্যই টাস্ক ফোর্স গঠন করা হচ্ছে। সেজন্যই আরজি করের ঘটনার পর সুপ্রিম কোর্ট নিজে হস্তক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এএনআই)

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ