আরপিও সংশোধন: ইসির ক্ষমতা খর্ব, বনাম ভোটারদের সম্মান
হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৫ জুলাই ২০২৩
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিরও) সংশোধন বিল পাশ হয়েছে৷ বিরোধী সংসদ সদস্য, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
তবে আইনমন্ত্রীর মতে এ ভাবনা অপরিপক্কতাদুষ্ট৷
আরপিও সংশোধন অনুযায়ী, অনিয়মের কারণে ইসির নির্বাচনের যে কোনো পর্যায়ে ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা ছিল। কিন্তু সংশোধনীতে এই ক্ষমতা সীমিত করে শুধু ভোটের দিন অনিয়মের কারণে নির্দিষ্ট সংসদীয় আসনের নির্দিষ্ট কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করতে পারার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে ইসিকে।
‘সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে আরো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলো’
আরপিওর সংশোধনী অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল ঘোষণা করার পর কোনো আসনের পুরো ফলাফল স্থগিত বা বাতিল করতে পারবে না ইসি। যেসব ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ আসবে, শুধু সেসব ভোটকেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত করা যাবে। এরপর তদন্ত সাপেক্ষে ফলাফল বাতিল করে ওই সব কেন্দ্রে নতুন নির্বাচন দিতে পারবে ইসি।
সংশোধনীতে ‘ইলেকশন' শব্দকে ‘পোলিং' শব্দ দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
সংশোধিত আরপিওতে নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা গণমাধ্যমকর্মী এবং পর্যবেক্ষকদের কাজে কেউ বাধা দিলে সর্বনিম্ন দুই বছর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
এছাড়া মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগের দিন পর্যন্ত ক্ষুদ্র ঋণ এবং টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির সরকারি সেবার বিল পরিশোধের সুযোগ দেয়া হয়েছে। আগে মনোনয়ন দেয়ার সাত দিন আগে এসব ‘ঋণ' পরিশোধ করতে হতো।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও বিশ্লেষকদের অনেকে প্রধানত দুটি ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করার কথা বলছেন।
‘তাদের ক্ষমতা সীমিত করে ফেলা হলো’
১. তারা মনে করেন, একটি আসনের পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট সেন্টারের নির্বাচন স্থগিতের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা সঙ্কুচিত করেছে। এর ফলে নির্বাচনের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ অনেক কমে গেল।
২. ‘ইলেকশনের' পরিবর্তে ‘পোলিং' শব্দ ব্যবহার করার মাধ্যমে যেটুকু ক্ষমতা দেয়া হলো তা-ও শুধু নির্বাচনের দিনে সীমিত হয়ে পড়লো।
এছাড়া ঋণখেলাপি, বিলখেলাদির নির্বাচন করার জন্য সুবিধা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক ( সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার মনে করেন, "আরপিও সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের হাত-পা ছেঁটে দেয়া হলো। তাদের ক্ষমতা আরো খর্ব হলো। সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে আরো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলো। সংশোধনী নির্বাচন কমিশনই চেয়েছিল। তারা কেন এই সংশোধনী চাইলো তা বুঝতে পারছি না। কারণ, তারা যা চেয়েছিল তা উচ্চ আদালতের রায়েই ছিল। তারা সুনির্দিষ্ট করতে চেয়েছিল। কিন্তু এখন তাদের ক্ষমতা খর্ব হলো। এটা আত্মঘাতী হলো। এটা পাতানো খেলা কিনা বুঝতে পারছি না।”
তার কথা. "পোলিং মানে হলো ভোটের দিন। আগে ছিল ইলেকশন। ইলেকশন বলতে বুঝায় তফসিল ঘোষণার পর থেকে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত। এখন পোলিং করায় তারা যে ক্ষমতাটুকু দেয়া হয়েছে তা-ও শুধু ভোটের দিন প্রয়োগ করতে পারবে।”
সাবেক নির্বচন কমিশনার রফিকুল ইসলামের মতামতও প্রায় এক। তিনি বলেন, "নির্বাচন বন্ধ করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের এখনো আছে। সেটা যেমন প্রার্থীর মৃত্যু হলে, ব্যালট পেপার শর্ট পড়লে, অথবা নির্বাচনের আগে অন্যকোনো কারণ ঘটলে। সেটা আলাদা। কিন্তু আরপিওর সংশোধনীতে নির্বাচনের দিনে তাদের সীমাবদ্ধ করে ফেলা হয়েছে। আর ওই দিনে তারা কোনো অনিয়মের কারণে শুধু অনিয়মের সেন্টারের নির্বাচন স্থগিত করতে পারবে। এর বাইরে পুরো আসন বা পুরো নির্বাচন নিয়ে তারা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। আর নির্বাচন শেষ হওয়ার পর তারা এটা আর পারবে না। এর মাধ্যমে তাদের ক্ষমতা সীমিত করে ফেলা হলো।”
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে আরপিও সংশোধন বিল পাসের আগে যেসব বিরোধী সংসদ সদস্য এর তীব্র সমালোচনা করেন তাদের মধ্যে একজন গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান। তিনি বুধবার ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এই সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচনকে হাসির বিষয়ে পরিণত করা হচ্ছে। এমনিতেই মানুষ ভোট দিতে পারেন না। ভোটের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এখন পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। এর মাধ্যমে ক্ষমতাসীনরা আবারো ক্ষমতায় যাওয়ার পথ পোক্ত করতে চাইছে। শুধু এই সরকার নয়, যারা যখন ক্ষমতায় ছিল তারাই নির্বাচন কমিশনকে তাদের মতো ব্যবহার করেছে। আর আমাদের নির্বাচন কমিশনও ক্ষমতাসীনদের সেবা দিয়েছে। জনগণের জন্য কাজ করেনি।”
‘নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা কোনোভাবেই খর্ব হয়নি’
তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, "এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা কোনোভাবেই খর্ব হয়নি। ইলেকশন হলো পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া। তার মধ্যে তফসিল থেকে শুরু করে ভোটের ফলাফল সব আছে। আর পোলিং হলো ভোট। ভোট হয় ভোটের দিন। আমরা ইলেকশন সেন্টার বলি না। বলি পোলিং সেন্টার। নির্বাচনের নানা ধাপ আছে। পোলিং তার একটি ধাপ। আইনটি যেহেতু পোলিং-এর, তাই ইলেকশনের পরিবর্তে পোলিং শব্দ ব্যবহার করে ক্ষমতা খর্ব করা হয়নি।”
"আর নির্বাচনের দিন কোনো এক বা একাধিক কেন্দ্রে অনিয়ম বা গন্ডগোলের কারণে পুরো আসনের নির্বাচন বাতিল করা গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিপন্থী। ১৯৭২ সালের সংবিধানে কোনো আসনের নির্বাচন বন্ধের বা বাতিলের ক্ষমতা দেয়া আছে। নির্বাচ কমিশন আরপিরও ৯১(ক) ধারায় এই ক্ষমতাটি নির্বাচনের দিনও চেয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদ মনে করেছে এটা গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী। তাই দেয়া হয়নি। কারণ, একটি আসনের মাত্র দুইটি কেন্দ্রে গন্ডগোল হলো, কিন্তু বাকি সব কেন্দ্রে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, তাহলে পুরো আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা দেয়া হলে ভোটারদের প্রতি অন্যায় করা হবে,” বলেন আইনমন্ত্রী।
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল জাতীয় সংসদে পাস হওয়া আরপিও নিয়ে বুধবার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বরেন , আরপিও'র বিলের আইন গেজেট আকারে প্রকাশ হওয়ার পরই সব প্রশ্নের উত্তর দেবো।”
বাংলাদেশে রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের যত মন্তব্য
নির্বাচন ঘনিয়ে এলেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশি কূটনীতিকদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়৷ ২০০০ সালের পর থেকে এমন কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা থাকছে ছবিঘরে৷
২০০০ সালের পর থেকে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনগুলোর প্রায় প্রত্যেকটির আগে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও রাষ্ট্রদূতদের কথা বলতে দেখা গেছে৷ বিদেশি কূটনীতিকদের এমন আচরণকে সবসময় ক্ষমতাসীন দল ‘শিষ্টাচার লঙ্ঘন’ হিসেবে অভিহিত করে। আর ক্ষমতার বাইরে থাকলে তা ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার’ পদক্ষেপ৷
ছবি: AP
‘স্টুপিড রাষ্ট্রদূত’
চার দলীয় জোট সরকারের মেয়াদ শেষের আগে নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের তৎপরতা দেখা যায়৷ তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী ব্যরিস্টার নাজমুল হুদা বলেন, ‘‘কিছু কিছু দালাল রাষ্ট্রদূত মহাজোটকে (আওয়ামী লীগ ও তার জোট) সংবিধান ধ্বংসের উসকানি দিচ্ছেন৷ তাদের কর্থাবার্তা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরুপ৷’’ বাংলাদেশে মার্কিন ও ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে ‘স্টুপিড’ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
২০ বছর পর আওয়ামী লীগের মুখেও একই সুর
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে ভিসা নীতি। কথা বলছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকেরাও। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল বা বিতর্ক সৃষ্টি করে এমন বিষয় বা অনুষ্ঠান থেকে কূটনীতিবিদেরা বিরত থাকবেন বলে আশা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর৷
ছবি: DW
২০০১ সালের নির্বাচনের আগে ঢাকায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট
২০০১ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে আগস্টে ঢাকায় আসেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। ‘সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতন্ত্রকে সুসংহত‘ করতে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনায় বসেন তিনি৷ ঢাকা ত্যাগের আগে সংবাদ সম্মেলনে কার্টার জানান, ১) সংসদ বর্জন নয় ২) হরতাল নয় ৩) সন্ত্রাস নয় ৪) ভোটকেন্দ্রে স্থানীয় পর্যবেক্ষক এবং ৫) কমপক্ষে ৬০জন নারী এমপি, এই পাঁচ প্রশ্নে একমত হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি৷
ছবি: John Amis/REUTERS
‘বাংলাদেশ ট্রাবলসাম হয়ে উঠেছে’
চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সারাদেশে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা, জঙ্গিবাদের উথ্থানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনায় আসে বাংলাদেশ৷ এমন প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পরররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিৎসা রাইসের এক বক্তব্য বেশ আলোড়ন তোলে৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ বেশ ট্রাবলসাম বা সমস্যাসংকুল হয়ে উঠেছে এবং এ ব্যাপারে আমাদের (যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত) কিছু করতে হবে।’’
ছবি: DW/O. Sawizky
বাংলাদেশ বিষয়ে মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের চিঠি
সম্প্রতি বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে লেখা ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের চিঠি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে৷ এমন ঘটনা নতুন নয়৷ ২০০৫ সালে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ১৬ বা ১৮ জন মার্কিন কংগ্রেসম্যান-সিনেটর পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিৎসা রাইসকে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বুশের কাছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংস জঙ্গিবাদের ব্যাপারটি উথ্থাপন করার অনুরোধ জানান৷
ছবি: Anna Moneymaker/Getty Images
এক-এগারো সরকার ও কূটনীতিকেরা
চারদলীয় জোট সরকারের মেয়াদ শেষ হবার আগেই বাংলাদেশে শুরু হয় রাজনৈতিক অস্থিরতা৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইত্যাদি বিষয়ে সম্পূর্ণ দুই মেরুতে অবস্থান নেয় সেসময় ক্ষমতায় থাকা বিএনপি ও প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আগে থেকেই তৎপরতা শুরু করে কূটনীতিকেরা।
ছবি: DW
সরব পশ্চিমারা
চারদলীয় জোটের সময়কালে অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে বেশ তৎপরতা দেখা যায় পশ্চিমা কূটনীতিকদের৷ ২০০৬ সালের ৮ ডিসেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে ফোন করেন মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি নিকোলাস বার্নসে৷ সব দল যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেন৷
ছবি: Jakub Porzycki/NurPhot/picture alliance
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের 'কফি গ্রুপ’
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ঢাকাস্থ পশ্চিমা কূটনীতিকেরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য নিজেদের মধ্যে নিয়মিত বৈঠক করতেন। যার নাম দেয়া হয়েছিল ‘কফি গ্রুপ’। এর সাথে সম্পৃক্ত ছিল অ্যামেরিকা, ব্রিটেন, ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি ও জাতিসংঘের প্রতিনিধি। এই গ্রুপে জাপানকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। উইকিলিকসে প্রকাশিত তথ্য এমন ইঙ্গিত দেয়।
ছবি: DW
চাকরির নিশ্চয়তা চান সেনাপ্রধান
বাংলাদেশের সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ সেসময়ের ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির কাছে চাকরির নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন। পরে ভারতের রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত প্রণব মুখার্জি ‘দ্য কোয়ালিশন ইয়ার্স’ এ জানান, মইন উ আহমেদের আশঙ্কা ছিল, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এলে তাকে চাকুরিচ্যুত করা হবে। তার চাকরির দায়িত্ব প্রণব মুখার্জি ব্যক্তিগতভাবে নিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন।
ছবি: DW / Samir Kumar Dey
সুজাতা সিংয়ের বিতর্কিত সফর
২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না এমন অবস্থানে অনড়৷ সেবছরের পাঁচ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা নির্বাচন৷ ঠিক এক মাস আগে ঢাকা সফর করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং। অনকের দাবি, সুজাতা সিং জাতীয় পার্টির প্রধান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদকে নির্বাচনে আসতে অনুরোধ জানান৷ এর ফলে বিএনপিকে ছাড়া আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচন আয়োজন সহজ হয়৷
ছবি: DW
পুলিশ রাতে ব্যালট ভর্তি করেছে: জাপানের রাষ্ট্রদূত
দ্বাদশ নির্বাচনের আগে হঠাৎ করেই একাদশ নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে গত নির্বাচনে (২০১৮ নির্বাচনে) পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যালট বাক্স ভর্তি করার যে অভিযোগ উঠেছে, অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে কখনোই এমনটা শুনিনি। আশা করি আগামী নির্বাচনে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না। জাপান আশা করে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে।’’
ছবি: U.S. Embassy Dhaka
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি
সম্প্রতি বাংলাদেশের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ ৷ ২৪ মে ঘোষিত ওই ভিসানীতিতে বলা হয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করলে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে৷ এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি চ্যানেল 24-কে বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ইউরোপের বাজারে ‘জিএসপি প্লাস’ সুবিধার দুয়ার খুলতে পারে।
সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি সমুন্নত রাখার প্রশ্নে বাংলাদেশের প্রতি চীনের অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে বলে জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন। অবশ্য এক সপ্তাগ আগে গত শুত্রবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উপহারসামগ্রী পাঠিয়েছে ঢাকার চীনা দূতাবাস।