1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শ্রমবাজারে আরবের মেয়েরা

ক্যার্স্টেন ক্নিপ / আরবি২ জুলাই ২০১৩

ইয়েমেনের মেয়েদের সমাজে একটি নির্দিষ্ট ভূমিকা রয়েছে, আর তা হলো বাড়িতে থেকে সংসার ও সন্তানের দেখাশোনা করা৷ দেশটির মাত্র ৩ শতাংশ নারী কর্মজীবী৷ শুধু ইয়েমেন নয়, আরব দেশগুলির সর্বত্রই পেশাক্ষেত্রে পুরুষের আধিপত্য লক্ষ্যণীয়৷

ছবি: KARIM SAHIB/AFP/Getty Images

বিশ্ব ব্যাংকের এক সমীক্ষায় জানা গেছে, সৌদি আরবের ১২ শতাংশ মেয়ে পেশাজীবী৷ তবে সে তুলনায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের অবস্থা ভালো৷ দেশটির মেয়েদের মধ্যে অর্ধেকই কর্মজীবী৷ তবে সমগ্র আরব জগতে মাত্র এক তৃতীয়াংশ নারীর নিজস্ব উপার্জন রয়েছে, যেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ৬২ শতাংশ মেয়ে অর্থ উপার্জন করে থাকেন৷

আফনান রাসিদ আল জায়ানিছবি: Ghorfa/El Sauaf

জনসম্পদের অপচয় রোধ করতে হবে

আরব ইন্টারন্যাশনাল উইমেন ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা হাইফা ফাহোউম আল কাইলানি এই প্রসঙ্গে বলেন, এই অবস্থা থেকে এখন বের হয়ে আসতে হবে আরবের মেয়েদের৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘আরব বিশ্ব অর্থনৈতিক ও সামাজিক দিক দিয়ে এগিয়ে যেতে পারবে না, যদি জনসংখ্যার অর্ধেককেই বাইরে রাখা হয়৷ বিশাল এই জনসম্পদের অপচয় রোধ করতে হবে৷''

বাহরাইনের নারী ব্যবসায়ী আফনান রাসিদ আল জায়ানি বলেন, তাঁর দেশ সুশিক্ষিত ও সক্রিয় নারী কর্মীর ওপর নির্ভরশীল৷ বাহরাইনের জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি অভিবাসী৷ অর্থাৎ প্রকৃত বাহরাইনিরা স্বদেশেই সংখ্যালঘু৷ কর্মক্ষেত্রেও বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে৷ কর্মজীবীদের মাত্র ২৩ শতাংশ বাহরাইনি৷

অর্জিত অর্থের বিরাট অংশ বাইরে চলে যায়

সুতরাং অর্জিত অর্থের এক বিরাট অংশই বাইরে চলে যায়৷ পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা শ্রমিকরা তাঁদের আয়ের একটা বড় অংশই স্বদেশে পাঠিয়ে দেন৷

হাইফা ফাহোউম আল কাইলানিছবি: Ghorfa/El Sauaf

অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এই ধরনের ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য বাহরাইনের মেয়েদেরও শ্রমবাজারে ঢুকতে হবে৷ এখন ৮ শতাংশ বাহরাইনি মেয়ে পরিবারের বাইরে কাজ করে অর্থ উপার্জন করেন৷ মেয়েরা আরো বেশি করে কর্মজগতে প্রবেশ করলে দেশের অর্থ দেশেই থাকবে৷ এছাড়া বাহরাইনিদের জীবনযাত্রার মানও উন্নত হবে৷ উন্নত হবে শিক্ষার মান, বৃদ্ধি পাবে ছেলে-মেয়েদের কাজের সুযোগ সুবিধা৷ তাই বলা যায়, মেয়েদের পেশার জগতে আসাটা রাষ্ট্রীয় অর্থব্যবস্থার জন্যই বেশি জরুরি, মনে করেন আল জায়ানি৷

একই মত পোষণ করেন গাবি ক্রাতোচভিল৷ আরবের প্রভাবশালী মেয়েদের নিয়ে একটি বই লিখেছেন এই ইসলামবিদ৷ তাঁর মতে, রাষ্ট্রীয় অর্থব্যবস্থাকে সচল করতে হলে অন্যান্য দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে৷ শুধু তেল, গ্যাস ও কাঁচামালের দিকে নয়৷ আর মেয়েদের অংশ গ্রহণ করা ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়৷

আরবের মেয়েরা পিছিয়ে থাকতে চাইছেন না

গাবি গাবি ক্রাতোচভিল লক্ষ্য করেছেন, আরব বিশ্বের মেয়েরা আর পিছিয়ে থাকতে চাইছেন না৷ কর্মজগতে ঢোকার জন্য তাঁরা এখন ভালোভাবে সজ্জিত হচ্ছেন৷ ‘‘যে সব মেয়ে শীর্ষ পদে আসতে পেরেছেন, কিংবা নিজস্ব ব্যবসা গড়ে তুলেছেন, তাঁরা দৃঢ় প্রত্যয়ের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছেন'', বলেন এই ইসলামবিদ৷

কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সর্বদা তাঁরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন৷ ম্যানেজমেন্টে নতুন নতুন কলাকৌশল শিখতে উদগ্রীব তাঁরা৷ ক্রাতোচভিলের ভাষায়, ‘‘জার্মানির তুলনায়, শীর্ষপদের জন্য প্রস্তুতিমূলক সেমিনারে যোগ দিতে আরব মেয়েদের উৎসাহ উদ্দীপনা চোখে পড়ার মতো৷''

গাবি ক্রাতোচভিলছবি: Ghorfa/El Sauaf

ভবিষ্যত প্রজন্মকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে

বাহরাইনে মেয়েদের কর্মজগতে সম্পৃক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে সেই ১৯২৮ সালে৷ এখন একে আরো চাঙা করে তুলতে হবে৷ ভূগর্ভস্থ তেল ও গ্যাস কয়েক বছরের মধ্যে ফুরিয়ে যাবে৷ আর তাই শ্রমবাজারকে উন্মুক্ত করতে হবে৷ অনেক মেয়ে লেখাপড়ার জন্য বিদেশে যান৷ দেশে ফিরে এক সফল ক্যারিয়ার গড়ে তোলেন৷ কিন্তু এই সাফল্যই যথেষ্ট নয়৷ ‘‘আমরা আরো মেয়েকে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ও শীর্ষপদগুলিতে দেখতে চাই'', বলেন হাইফা ফাহোউম আল কাইলানি৷ তবে আরো একটা কারণে আরবের মেয়েদের শ্রমবাজারে প্রবেশ করা উচিত বলে মনে করেন প্রগতিশীল এই নারী৷

বলেন, ‘‘এর ফলে সুন্দর এক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবে আরব বিশ্ব৷ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বনির্ভরশীল মেয়েরা তাঁদের বেতন পরিবারের কাজে লাগাবেন৷ ব্যয় করবেন সন্তানদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে৷ অর্থাৎ বিনিয়োগ করা হবে ভবিষ্যত প্রজন্মকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ