1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আরব অঞ্চলে সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ

১০ জানুয়ারি ২০১২

আরব অঞ্চলে সাম্প্রতিক গণজাগরণের পর ঐ অঞ্চলের চলচ্চিত্র জগতে এক নতুন হাওয়া বইছে৷ তবে একইসাথে নতুন বিধি-নিষেধের বেড়াজালে বাধাগ্রস্ত হতে পারে আরব্য চিত্রজগত৷ এমন আশঙ্কাও করছেন আরব দেশগুলোর চলচ্চিত্র শিল্পবোদ্ধারা৷

তাহরির স্কোয়ারের বিক্ষোভ নিয়ে ছবি হয়েছেছবি: dapd

২০১১ সালের শুরুতেই টিউনিশিয়া এবং মিশর দেখেছে প্রতাপশালী একনায়কদের পতন৷ আর বাকিটা সময় গেছে আরব অঞ্চলে গণতন্ত্র বিকাশের সম্ভাব্য পন্থা নিয়ে বিতর্কের মধ্য দিয়ে৷ মিশরের ২৫শে জানুয়ারির বিপ্লব নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু প্রামাণ্য গ্রন্থ৷ ১৮ দিনের বিক্ষোভ ও হোসনি মুবারকের পতনের সেই সময় তোলা ছবির সংকলনও বেরিয়েছে৷ এছাড়া মুক্তি পেয়েছে ‘তাহরির ২০১১: ভালো, মন্দ ও রাজনীতিক' শিরোনামের ছবি৷ ছবিটিতে ‘ভালো' অংশে দেখানো হয়েছে মিশর বিপ্লবের নায়ক গণতন্ত্রকামী জনতাকে৷ ‘মন্দ' পর্বে উঠে এসেছে মুবারক প্রশাসনের চার নিরাপত্তা কর্মকর্তা যারা বিক্ষোভকারীদের দমনের দায়িত্বে ছিলেন৷ আর ‘রাজনীতিক' পর্বে দেখানো হয়েছে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারকের ভিলেনসুলভ চেহারা৷ তবে এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে জনতার বিক্ষোভ-আন্দোলনের ফসল সফল বিপ্লবের কারণে৷

হোসনি মুবারকের শাসনামলে নীরবে কেঁদেছে মিশরের সাংস্কৃতিক জগত৷ ২০০৬ সালে তাহরির চত্বরে ‘আইন শামস' ছবির শুটিং করতে গিয়ে পুলিশি বাধায় তা পণ্ড হয়৷ ছবির পরিচালক ইব্রাহিম আল বাতুত সহ কলাকুশলীদের ধরে নিয়ে যায় পুলিশ সদস্যরা৷ তবে ‘আইন শামস' ছবিটি তৈরি করতে যেসব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছিল আল বাতুতকে, সেসব ঘটনা নিয়ে ২০১০ সালে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি করেন ইয়াসের নাইম৷ তরুণ প্রযোজক নাইম জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ'কে বলেন, ‘‘মুবারকের পতনের সাথে এদেশের চিত্রজগতের দমবন্ধ হওয়ার অবস্থা শেষ হয়েছে৷ তবে শিল্পীরা এখন যে স্বাধীনতা পেয়েছেন, তা যেন চিরস্থায়ী হয়৷ আল-বাতুতকে আটক করার মতো ঘটনা যেন ফিরে না আসে সেজন্য শিল্পীদেরই সোচ্চার হতে হবে৷''

ছবি: picture-alliance/dpa

মিশরের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আল-মাওরেদ আল-সাকাফি'র ব্যবস্থাপক বাসমা আল হুসাইনিও বললেন, ‘‘সাম্প্রতিক বিপ্লবী চেতনা আরব অঞ্চলে সৃষ্টিশীলতার পথ সুগম করেছে৷ অবশ্য একইসাথে শিল্পী এবং রাজনৈতিক কর্মীর ভূমিকা পালন করায় সৃষ্টিশীলতা কিছুটা থমকে দাঁড়িয়েছে৷ এখনও শিল্পীদের হাতে যথেষ্ট সময় হয়নি নতুন ধারার শিল্প বিকাশে, বলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা ভিওলা শফিক৷ তবে মিশরের চেয়ে টিউনিশিয়া এক্ষেত্রে আরো বেশি পিছিয়ে রয়েছে৷ এপর্যন্ত সেখানে শুধু একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী হয়েছে৷ ‘আর্টোক্র্যাসি ইন টিউনিশিয়া' নামের এই প্রদর্শনীতে বিক্ষোভ-আন্দোলনের বাছাই করা একশ'টি ছবি স্থান পায়৷

তবে সফল বিপ্লবের পাশাপাশি আরব দেশগুলোতে ইসলামি কট্টরপন্থী দলগুলোর প্রভাবও বাড়ছে বলে মনে হচ্ছে৷ তাই ঐ অঞ্চলে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সাথে সাংস্কৃতিক জগতের উপর কড়াকড়ি বাড়তে পারে এমন আশঙ্কাও শিল্পবোদ্ধাদের৷ গত নভেম্বরের নির্বাচনে মরোক্কোয় জয়ী হয় ইসলামপন্থী জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি৷ এই দলটির বিজয়ের সাথে সাথে সেদেশে সৃষ্টিশীল কাজের স্বাধীনতা খর্ব হতে শুরু করেছে বলে মত কবি ও সাংস্কৃতিক কর্মী মুরাদ কাদিরির৷ গত মাসে অনুষ্ঠিত ১১তম মারাকেশ চলচ্চিত্র উৎসবে শুধুমাত্র ইসলামি মূল্যবোধের ছবিগুলোই স্থান পায়৷ নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে মুক্ত দৃষ্টিভঙ্গির ছবি ‘আমুর ভোয়ালি'৷ কারণ ছবিটিতে দেখানো হয়েছিল একজন বোরকা পরা নারীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের মাধ্যমে গর্ভবতী হওয়ার দৃশ্য৷

মিশরের রাজধানী কায়রোর একটি আলোচনায় কাদিরি ঐ অঞ্চলের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন৷ তাই মিশরের চিত্রশিল্পী হুদা লুফতির মতো অনেকেই মনে করেন, সংস্কৃতিক কর্মীদের একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করে সৃষ্টিশীল কর্মকাণ্ডের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখার এখনই সময় ৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ