আরব জগতে গণতন্ত্রের বিকাশে ইসলাম ধর্মের ভূমিকা
২৬ অক্টোবর ২০১১![](https://static.dw.com/image/15484234_800.webp)
আরব বিশ্বে অনেক বেশি গণতন্ত্রের অর্থ কি রাজনৈতিক মঞ্চে ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠা? তাই যদি হয়ে থাকে তাহলে তার চরিত্র কী হবে? এসব প্রশ্ন এখন অনেকের মনে৷ টিউনিশিয়ার নির্বাচনের পর সেখানে ইসলামিক রাজনৈতিক দল এন্নাহদা বিপুল ভোট পেয়েছে৷ এদিকে লিবিয়ার এনটিসির প্রধান মুস্তাফা আব্দেল জলিল জানিয়েছেন, লিবিয়ায় শরিয়া আইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করবে৷
নেদারল্যান্ডসের আইনের অধ্যাপক ইয়ান মিশেল অটো সম্প্রতি একটি জরিপে জানিয়েছেন, পৃথিবীর ১২ টি দেশে কীভাবে শরিয়া আইন অনুসরণ করা হয়৷ এসব দেশের রাজনীতিতে ইসলাম ধর্মের প্রভাব চোখে পড়ার মত৷ লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক আরো জানান,‘‘শরিয়া আইনের প্রবর্তন করা হলে কেউ জানবে না কী অপেক্ষা করছে সামনে৷'' অধ্যাপক মিশেল অটো একটি বই লিখেছেন ‘শারিয়া ইনকর্পোরেটেড'৷ তিনি জানান, পশ্চিমী বিশ্বের অনেক দেশই আতঙ্কিত শারিয়া আইন নিয়ে৷ অথচ ইসলামি আইনের প্রবর্তন অনেক বেশি স্বাধীনতা দিতে পারে মানুষকে৷
তুরস্কের কোনিয়ার সেলচুক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানী ইয়াসিন আকতায় জানান, শরিয়া আসলে কোন ধরণের আইন নয়৷ এখানে শুধু অত্যাচার আর শাস্তির কথা বলা হয়েছে তা-ও ঠিক না৷
মধ্যেপ্রাচ্যের অনেক দেশেই শরিয়া আইন মেনে চলা হয়৷ কিন্তু এর পাশাপাশি পশ্চিমী বিশ্বের অনুকরণে দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইনও মেনে চলে দেশগুলো৷ শুধু সৌদি আরব বাদে অন্যান্য দেশগুলোতে বিভিন্ন আইনের সমন্বয় চোখে পড়বে৷ শরিয়া আইনের শাসন কোন দেশ চাইলে বেশ কড়াভাবে অনুসরণ করতে পারে৷ আবার চাইলে বেশ শিথীলভাবেও এই আইনের প্রবর্তন সম্ভব৷
টিউনিশিয়ার এন্নাহদা ইসলামিক পার্টি রবিবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে৷ আরব জগতে প্রথম বিপ্লব শুরু হয়েছিল এই দেশটিতেই৷ টিউনিশিয়ার এই দলটি জানিয়েছে, গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা তাদের রয়েছে এবং মানবাধিকারের বিষয়টিও তাদের কাছে বেশ গুরুত্ব পাবে৷
টিউনিশিয়ার সংবিধানে দেশের আনুষ্ঠানিক ধর্ম হিসেবে ইসলামের নাম উল্লেখ করা রয়েছে৷ কিন্তু শারিয়া আইন মেনে চলতে হবে, এমনটা উল্লেখ করা নেই৷ এর আগের সংবিধানটি রচনা করেছিলেন রশিদ গানুশি৷ এখন নতুন সংবিধান রচনার দায়িত্ব পেয়েছে এন্নাহদা ইসলামিক পার্টি৷ ধারণা করা হচ্ছে, এন্নাহদা যদি যদি শারিয়া আইন প্রবর্তন করতে চায়, তাহলে হয়তো তারা বিরোধিতার সম্মুখীন হবে৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন