1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আরো একটি হত্যাকাণ্ড কি দেখতে হবে?

২০ অক্টোবর ২০১৫

চলতি বছর ইতোমধ্যে চারজন ব্লগার খুন হয়েছেন৷ নিয়মিত বিরতিতে ধীরে সুস্থে, বাছাই করে, অনুসরণ করে, মোক্ষম সময়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে৷ এভাবে কি আরো একটি হত্যাকাণ্ড ঘটতে যাচ্ছে?

Protest nach Mord an bengalischem Blogger Niloy Chottopadhay
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Rajib Dhar

পরপর চারজন ব্লগার খুন হওয়ার পর গোটা বিশ্বেই আলোড়ন উঠেছে৷ বাংলাদেশ নামক মুসলিম অধ্যুষিত দেশটি আগে পরিচিত ছিল জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতির শিকার একটি দেশ আর তৈরি পোশাক শিল্পের ‘হাব' হিসেবে৷ এখন পরিচিত হচ্ছে উগ্রপন্থিদের আখড়া হিসেবে৷ যেখানে যে কারো গলা কাটার অধিকার আছে তাদের৷

ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের পরই খুনিদের বিচারের দাবি উঠেছিল চারিদিক থেকে৷ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একজন মার্কিন নাগরিকের হত্যা স্বাভাবিকভাবেই পশ্চিমাদের ভাবিয়ে তুলেছিল৷ কিন্তু সেই ভাবনা উদ্বেগে পরিণত হতে বেশি দেরি হয়নি৷ সর্বশেষ গত আগস্টে বাড়ির মধ্যে খুন হয়েছেন ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়, যিনি অনলাইন জগতে পরিচিত ছিলেন নিলয় নীল নামে৷

বিস্ময়কর হচ্ছে, প্রকৃত খুনিদের ধরতে সরকারের অপারগতা৷ যারা খুন হয়েছেন, তারা নাস্তিক৷ আর নাস্তিকদের খুন করা যেন বাংলাদেশে এখন এক অঘোষিত নিয়মে পরিণত হয়েছে৷ অন্তত পুলিশ এবং সরকারের ভূমিকাতে সেটাই মনে হচ্ছে৷ খুনিদের ধরার বদলে তারা বরং ব্লগারদের লেখালেখির ব্যাপারে সতর্ক করছে

বলতে পারেন, কেন ইতোমধ্যে কয়েকজনতো গ্রেপ্তার হয়েছেন৷ হ্যাঁ, এটা ঠিক৷ চলতি বছর চতুর্থ হত্যাকাণ্ডের পর কয়েকজনকে ব্লগারদের খুনি সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ এদের মধ্যে একজন রয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক৷ তার পরিবার দাবি করেছে, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিটি মানসিক ভারসাম্যহীন, চিকিৎসা নিচ্ছেন৷ আর তাঁকে যখন আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, তার অনেক আগে থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন৷ এরকম একজন ব্যক্তিকে একজন ব্লগার হত্যার ‘মাষ্টারমাইন্ড' হিসেবে দেখানো হচ্ছে, এখন পর্যন্ত৷

চলতি মাসে পাবনায় এক যাজককে হত্যা চেষ্টার পরপরই কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ কিন্তু সেই যাজক জানিয়েছেন, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁদের কেউ হত্যা চেষ্টার সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন না৷ অর্থাৎ যাঁরা হত্যার চেষ্টা করেছেন, তাঁদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ৷ তাহলে কি এসব গ্রেপ্তার লোক দেখানো?

ব্লগারদের ঠিক কারা খুন করছে, সেটা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়া সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়৷ তবে গণমাধ্যম ঘাটলে দেখা যায়, ২০১৩ সালে ‘নাস্তিক ব্লগারদের' ফাঁসির দাবিতে ঢাকায় তাণ্ডব করেছিল ‘হেফাজতে ইসলাম' নামের একটি উগ্রপন্থি সংগঠন৷ সেসময় ৮৪ ব্লগার এবং অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টের নাম নিয়ে একটি ‘হিট লিস্ট' তৈরি হয়েছিল, সেই লিস্টের বেশ কয়েকজন ইতোমধ্যে জবাই হয়েছেন৷ মার্চে ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুর দুই সম্ভাব্য খুনিকে হত্যাকাণ্ডের পরপরই ধরে পুলিশে দিয়েছিলেন হিজড়ারা৷ তাদের একজন দাবি করে, হাটহাজারি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেছে সে৷ পুলিশ অবশ্য এই তথ্যটি সযতনে এড়িয়ে গেছে৷

আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলেছবি: DW/Matthias Müller

ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন ব্লগার বাংলাদেশ ছেড়ে গেছেন৷ কেউ কেউ লেখালেখি ছেড়ে, লেখার ধরন বদলে, নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন৷ বোঝাই যায়, প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে এসব করা৷ সেটা খুব স্বাভাবিক৷ গতকাল দেখলাম ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম' ইমেল পাঠিয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে, পরবর্তীতে কাদের হত্যা করা হবে, কি করা যাবে, যাবে না সেসব জানিয়ে৷ বোঝাই যাচ্ছে, তৈরি হচ্ছে তারা৷ হয়ত শীঘ্রই দেখতে হবে জবাই হওয়া নতুন কোন ব্লগারের রক্তে ডুবে থাকা মরদেহ৷ তাদেরকে রক্ষায় সত্যিই কী কেউ নেই?

আপনি কী এই ব্লগে নতুন কিছু যোগ করতে চান? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ