ইউরোপে বাড়ন্ত করোনা সংক্রমণের জেরে বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, গ্রিস ও আয়ারল্যান্ডকে 'হাই রিস্ক’ দেশের তালিকাভুক্ত করলো জার্মানি৷
বিজ্ঞাপন
করোনা সংক্রমণের বেশি ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলি থেকে আসা করোনা টিকা না নেওয়া পর্যটকদের জার্মানিতে প্রবেশের পর বাধ্যতামূলক কোয়ারান্টিন করতে হয়। ইউরোপে নতুন করে করোনা সংক্রমণ বাড়ার ফলে এই ‘হাই রিস্ক’ বা উচ্চ ঝুঁকির তালিকায় বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, গ্রিস ও আয়ারল্যান্ডকে যুক্ত করলো জার্মানি।
শুক্রবারের এই ঘোষণা কার্যকর হবে রোববার থেকে। ইউরোপে মান্যতা পাওয়া করোনা টিকাগুলির মধ্যে কোনোটিই না নেওয়া থাকলে সেই যাত্রীদের জার্মানিতে এসে দশদিন কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে। যদি কোয়ারান্টিনের পাঁচদিন পেরোবার পর করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে, তাহলে এরপর থেকে কোয়ারান্টিনে না থাকলেও চলবে।
শীত শুরু হতেই ইউরোপে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে৷ অথচ সব দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের কৌশল নিয়ে ঐকমত্য এখনো আসেনি৷ এখনো চলছে ভ্যাকসিনবিরোধী সমাবেশ৷ তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর হচ্ছে কোনো কোনো দেশ৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Flavio Lo Scalzo/REUTERS
রাশিয়া : ইউরোপে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে করোনায় সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে রাশিয়ায়৷ সেখানে করোনায় সংক্রমিত হয়ে মৃতের সংখ্যা এখন দুই লাখ ৬০ হাজার ৩৩৫৷ ওপরের ছবিতে রাশিয়ার এক শহরের হাসপাতালে কোভিড-১৯- এ সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসার দৃশ্য৷
ছবি: Kirill Braga/REUTERS
জার্মানি : সংক্রমণ বাড়ছে, বাড়ছে কোন্দল
জার্মানিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা এক লাখ হতে চলেছে (৯৮, ৯০৮)৷ সংক্রমণও বাড়ছে৷ সপ্তাহে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ৩৩৬ ছাড়িয়েছে৷ কিছু হাসপাতালের আইসিইউ ভরে যাওয়ায় নতুন করে রোগী ভর্তি করা যাচ্ছে না৷ অথচ করোনা সংকটের শুরুর দিকে জার্মানির মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলো কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য সত্ত্বেও যেভাবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিয়েছিল, সেই ‘ঐকমত্যে’ এখন ফাটল দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Lukas Barth/REUTERS
ইটালি : ভ্যাকসিনে বিল গেটস!
ইউরোপের আরেক দেশ ইটালিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা এক লাখ ৩২ হাজার ৯৬৫ জন৷ সংক্রমণ আবার বাড়ছে৷ অথচ ভ্যাকসিনবিরোধী সমাবেশ এখনো চলছে৷ মিলানের এক সমাবেশের একটা প্ল্যাকার্ডে বিল গেটসকে বলা হচ্ছে ‘যিশুবিরোধী’৷
ছবি: Flavio Lo Scalzo/REUTERS
অস্ট্রিয়া : ভ্যাকসিনবিরোধীদের জন্য লকডাউন
অস্ট্রিয়াতেও কোভিড-১৯-এ সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে দ্রুত৷ গত সোমবার থেকে যারা এখনো ভ্যাকসিন নেননি তাদের লকডাউনের আওতায় নেয়া হয়েছে৷ ওপরের ছবিতে ভিয়েনা শহরের লকডাউন করা একটি অঞ্চলে পুলিশের টহল৷
ছবি: Lisi Niesner/REUTERS
গ্রিস : ক্লান্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের বিক্ষোভ
করোনা সংকট শুরুর পর থেকে গ্রিসের স্বাস্থ্যকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন৷ কাজের চাপ এত বেশি যে নিরুপায় হয়ে বিক্ষোভেও নামতে শুরু করেছেন তারা৷ ওপরে এথেন্সের সেরকম এক বিক্ষোভ মিছিলের ছবি৷
ছবি: Louiza Vradi/REUTERS
ইটালি : ভ্যাকসিনবিরোধী বিক্ষোভে রবার্ট কেনেডি
মিলানের এক ভ্যাকসিনবিরোধী সমাবেশে হাজির যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ভাতিজা রবার্ট এফ কেনেডি৷
ছবি: Flavio Lo Scalzo/REUTERS
6 ছবি1 | 6
উচ্চ ঝুঁকির তালিকায় যুক্ত হওয়া চারটি দেশে সংক্রমণ বাড়ার ফলে সেসব দেশেও কড়াকড়ি বাড়ানো হয়েছে। টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের জন্য গণপরিসরে নানা নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। আয়ারল্যান্ডে টিকা না নেওয়া ব্যক্তিরা বার বা নাইটক্লাবে যেতে পারবেন না। গ্রিসেও এই নির্দেশ কার্যকর রয়েছে। নেদারল্যান্ডস ও বেলজিয়ামের ক্ষেত্রে এই কড়াকড়ি থাকছে কর্মক্ষেত্রেও।
জার্মানিতে বর্তমান পরিস্থিতি
জার্মানির দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য বাভারিয়াতে বাড়ন্ত করোনা সংক্রমণের ফলে আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে বার্ষিক ক্রিস্টমাস মার্কেট। বাভারিয়ার যে সমস্ত জেলায় সংক্রমণের হার প্রতি দশ লাখ মানুষে এক হাজার ছাড়িয়েছে, সেখানে জারি আছে লকডাউন। বর্তমানে লকডাউনের আওতায় রয়েছে বাভারিয়ার আটটি জেলা।
জার্মানিজুড়ে এই মুহূর্তে প্রযোজ্য রয়েছে ‘২জি’ নিয়ম, অর্থাৎ, গণপরিসরে চলাফেরার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া আছে কেবল টিকাপ্রাপ্ত বা করোনা থেকে সদ্য সেরে ওঠা ব্যক্তিদের জন্যেই। বেশিরভাগ দোকান, রেস্তোরাঁ, সিনেমা হল, বার-পাব বা উৎসবে অংশ নিতে পারবেন না টিকা না নেওয়া ব্যক্তিরা।
শেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার জার্মানিতে মোট নতুন সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৫২ হাজার ৯৭০। টিকার সবকটি ডোজ নিয়েছেন দেশটির মোট জনসংখ্যার ৬৭ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ।