1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানি-তুরস্ক সংঘাত

২ জুন ২০১৬

১৯১৫-১৭ সালে অটোমান সাম্রাজ্যে আর্মেনীয় জনগোষ্ঠীর হত্যালীলাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে জার্মান সংসদ যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার বিরুদ্ধে প্রবল সমালোচনায় সোচ্চার হয়ে উঠেছে তুরস্ক৷

জার্মান সংসদে আর্মেনিয়া বিতর্ক
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kappeler

অতীতের কুকর্ম স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া ও সম্ভব হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার উদ্যোগ যে কোনো রাষ্ট্রের পরিণত চিন্তাধারার প্রতিফলন ঘটায়৷ নাৎসি আমলে জার্মানির ইহুদি নিধন যজ্ঞে ৬০ লক্ষেরও বেশি মানুষকে ঠান্ডা মাথায় যেভাবে হত্যা করা হয়েছিল, আজকের জার্মানি এখনো তার প্রায়শ্চিত্ত করে চলেছে৷

অনেকের মতে, গত শতাব্দীতে আর্মেনীয় জনগোষ্ঠীর হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রেও জার্মানি তার ঐতিহাসিক দায় এড়াতে পারে না, কারণ, জার্মানি তখন অটোমান সাম্রাজ্যের সহযোগী ছিল৷ এমনকি খোদ হিটলার আর্মেনীয়দের গণহত্যা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার অভাব থেকে শিক্ষা নিয়ে ইহুদি নিধন যজ্ঞ চালানোর উৎসাহ পেয়েছিলেন বলে কিছু মহলে অভিযোগ ওঠে৷

সেই ঘটনার প্রায় ১০০ বছর পর জার্মান সংসদ এই মর্মে এক প্রস্তাব অনুমোদন করার উদ্যোগ নিয়েছে৷ বলা বাহুল্য, তুরস্ক এই উদ্যোগের প্রবল বিরোধিতা করছে এবং এর পরিণতি সম্পর্কে জার্মানিকে সাবধান করে দিচ্ছে৷

আর্মেনিয়া অবশ্য জার্মানির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তুরস্কের চাপ উপেক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছে৷

জার্মান সংসদের এই উদ্যোগ অবশ্যই বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়৷ ডয়চে ভেলে এর পক্ষে ও বিপক্ষে দু'টি সংবাদভাষ্য প্রকাশ করেছে৷

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

গত শতাব্দীর শুরুতে বিশাল এক এলাকা ছিল তুরস্কের অটোমান সাম্রাজ্যের দখলে৷ তার পূর্ব প্রান্তের প্রদেশে ছিল আর্মেনীয় জনগোষ্ঠীর প্রায় ১৭ থেকে ২৩ লক্ষ মানুষের বসবাস৷ সেটা ১৯১৫ সাল৷ তাদের আনুগত্য নিয়ে অটোমান কর্তৃপক্ষের মনে আগেই সংশয় দেখা দিয়েছিল, কারণ, স্বাধীনতার লক্ষ্যে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকেই আর্মেনীয়দের এক জাতীয় আন্দোলন শুরু হয়েছিল৷ সে সময়েই ১ থেকে ৩ লক্ষ আর্মেনীয়কে হত্যা করা হয় বলে ঐতিহাসিকদের একাংশ মনে করেন৷

১৯১৪ সালে অটোমান সাম্রাজ্য জার্মানি ও অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়৷ সেই সময় আর্মেনীয়দের ‘ঘরশত্রু'-র তকমা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে প্রচারণা অভিযান শুরু হয়৷ দু'টি আইন অনুমোদন করে আর্মেনীয়দের ঘরবাড়ি বাজেয়াপ্ত করে তাদের স্থানান্তর শুরু করে অটোমান কর্তৃপক্ষ৷ নানাভাবে তাদের বিরুদ্ধে হত্যালীলা চালানো হয়েছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে৷

এখনকার রাষ্ট্র আর্মেনিয়ার হিসেব অনুযায়ী ১৯১৫ থেকে ১৯১৭ সাল পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ ১৫ লক্ষ৷ অতএব এই ঘটনাকে আন্তর্জাতিকভাবে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত বলে আর্মেনিয়া মনে করে৷

প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ানের নেতৃত্বে আজকের তুরস্ক ‘গণহত্যা' শব্দটির চরম বিরোধী৷ তাদের বয়ান অনুযায়ী, সে সময়ে গৃহযুদ্ধের কারণে ৩ থেকে ৫ লক্ষ আর্মেনীয় এবং প্রায় সমান সংখ্যক তুর্কি প্রাণ হারিয়েছিল৷ অটোমান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে গণজাগরণের সময় আর্মেনীয়রা হামলাকারী রুশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল৷ এমনকি ২০১৪ সালে এর্দোয়ান এই ঘটনা সম্পর্কে শোক প্রকাশ করে আর্মেনিয়ার উদ্দেশ্যে ওই অধ্যায়কে ‘দুই দেশের সম্মিলিত কষ্ট' হিসেবে মেনে নেয়ার আহ্বান জানান৷ আর্মেনিয়া অবশ্য সেই বয়ান প্রত্যাখ্যান করে৷

এসবি/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ