সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ও রাশিয়ার প্রতি আলেপ্পোয় রক্তপাত বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ ব্রাসেলসের এক বৈঠকে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিদ্ধস্ত নগরটিতে আরো ভয়ানক মানবিক বিপর্যয় রোধে জরুরি উদ্যোগ প্রয়োজন৷
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রধানরা একদিনের এক শীর্ষ সম্মেলনে মিলিত হয়েছিলেন৷ সেখানে সিরিয়া প্রসঙ্গেও আলোচনা ঞয়েছে৷ ধারণা করা হচ্ছিল, সম্মেলনে আলেপ্পোতে সিরীয় সরকার ও রাশিয়ার চালানো অভিযানের কঠোর সমালোচনা করা হবে৷ তা-ই হয়েছে৷ ইইউ-র পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ের প্রধান ফেডেরিকা মঘেরিনি সিরিয়া যুদ্ধে রাশিয়ার ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করতে গিয়ে জানান, আলেপ্পোয় স্থিতি ফেরাতে তিনি অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন৷ তিনি আরো জানান, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং রাশিয়ার সরকারের প্রতি তিনি আলেপ্পোয় মানবিক নিজেদের মানবিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন৷
ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি ডোনাল্ড টুস্ক বলেন, ‘‘আমরা আলেপ্পোয় চিকিৎসক এবং অন্যান্য সহায়তা কর্মীদের পূর্ণ এবং বাধাহীন প্রবেশাধিকার চাই৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘জোর খাটিয়ে এই সংকট নিরসন করা অসম্ভব৷''
বিদ্রোহী অধিকৃত আলেপ্পো নগরী গত জুলাই থেকে ঘিরে রেখেছে বাশার আল-আসাদের অনুগত বাহিনী৷ সম্প্রতি বাশার আল-আসাদ সরকারের অনুগত বাহিনী পূর্ব আলেপ্পোয় পূর্ণ নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করে৷ এখন চলছে সেখান থেকে মানুষজনকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ৷ তবে নারী-শিশুসহ কয়েক হাজার মানুষকে সরিয়ে নেয়ার কাজে বিঘ্ন ঘটছে বারবার৷ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, শুক্রবার পূর্ব আলেপ্পোয় অন্তত চারটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে৷ বিস্ফোরণের পর থেকে মানুষ সরিয়ে নেয়া বন্ধ রয়েছে বলেও জানিয়েছে রয়টার্স৷
এসিবি/ডিজি (ডিপিএ, রয়টার্স)
সিরিয়া থেকে যেভাবে জার্মানিতে এসেছে একটি পরিবার
জীবন বাঁচাতে সিরিয়া থেকে জার্মানিতে এসেছেন অনেক শরণার্থী৷ জার্মানির ইমিগ্রেশন সেন্টার সেসব মানুষের সংগ্রাম নিয়ে আয়োজন করেছে একটি প্রদর্শনীর৷ সেখানেই জানা গেলো কোটো পরিবারের বেঁচে থাকার গল্প৷
ছবি: Sammlung Deutsches Auswandererhaus
আলেপ্পোয় সুখি সংসার
২০১৬ সালে তোলা কোটা পরিবারের ছবি৷ খলিল, তাঁর স্ত্রী হামিদা, সন্তান মান্নান, ডোলোভান, আয়াজ এবং নের্ভানা৷ তখন সিরিয়ায় কোনো গৃহযুদ্ধ ছিল না, ছিল না ধ্বংসলীলা৷
ছবি: Sammlung Deutsches Auswandererhaus
দেশত্যাগের সিদ্ধান্ত
সিরিয়ায় ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর সময় খলিল কোটো সেদেশের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের একটি শাখার প্রধান ছিলেন৷ গৃহযুদ্ধ শুরুর পর চাকুরি হারান এই ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার৷ একসময় খাদ্য এবং পানির অভাব প্রকট হতে থাকে৷ ২০১৪ সালের এপ্রিলে পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, তারা তুরস্ক চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, যেখানে খলিলের মা বাস করতেন৷
ছবি: Sammlung Deutsches Auswandererhaus
ধাপে ধাপে আগানো
খলিল তুরস্কে কোনো কাজ খুঁজে পাননি৷ তাই ২০১৪ সালের জুলাইয়ে তাঁর পরিবার জার্মানিতে আসার সিদ্ধান্ত নেন৷ খলিলের ভাই ইউরোপে বাস করেন৷ তিনিই পরিবারটিকে জার্মানিতে আসতে উৎসাহ যোগান৷ শরণার্থী হিসেবে জার্মানিতে আসার পথে বুলগেরিয়ায় একটি শরণার্থী শিবিরে ছয় মাস কাটান কোটো পরিবার৷ এই চামচটি সেই শিবিরের এক স্মৃতিচিহ্ন৷
ছবি: Sammlung Deutsches Auswandererhaus
জার্মানিতে স্বাগতম
অবশেষে জার্মানিতে কোটো পরিবার৷ জার্মানির উত্তরের শহর ব্রেমেনে তাদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে৷ সেখানকার এক নারী খলিলকে এই জিন্সের প্যান্টটি দিয়েছেন, জার্মানিতে পাওয়া তাঁর প্রথম পোশাক এটি৷
ছবি: Sammlung Deutsches Auswandererhaus
অনিশ্চিত ভবিষ্যত
খলিলের সন্তানরা এখন জার্মান স্কুলে যাচ্ছেন৷ আর খলিল এবং তাঁর স্ত্রী হামিদা শিখছেন জার্মান৷ ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার জার্মানিতে একটি চাকরি পাবেন বলে আশা করছেন৷ সিরিয়ায় ফেলে আসা অতীত মাঝে মাঝে মনে করে আনন্দ খোঁজেন তারা৷ আয়াজের সিরিয়ার স্কুলের আইডি কার্ড এটি৷