রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় মঙ্গলবার রাতে একটি চুক্তি সই হয়েছিল৷ এর আওতায় পূর্ব আলেপ্পোতে থাকা সাধারণ জনগণ ও বিদ্রোহীদের নিরাপদে শহর ছাড়ার সুযোগ তৈরি হয়েছিল৷
বিজ্ঞাপন
চুক্তির পরপরই নাগরিক ও বিদ্রোহীদের স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু করতে সরকারি কয়েকটি বাস অপেক্ষায় ছিল৷ কথা ছিল বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৫টায় এই প্রক্রিয়া শুরু হবে৷ কিন্তু তা হয়নি৷ প্রথমে শোনা যায় স্থানান্তর প্রক্রিয়া বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পিছিয়ে দেয়া হয়েছে৷ আর এখন শোনা যাচ্ছে যুদ্ধবিরতি ভেঙে গেছে৷ ফলে সেখানে আবারও বোমাবর্ষণ শুরু হয়েছে৷ বাসগুলোও সরে গেছে৷
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, সিরীয় বিদ্রোহীরা যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দেয়ায় সিরিয়ার সেনাবাহিনী আবারও অভিযান শুরু করেছে৷ তবে সিরীয় বিদ্রোহীরা চুক্তি ভঙ্গের জন্য ইরানকে দায়ী করছে৷
এদিকে, পূর্ব আলেপ্পোতে থাকা নাগরিকদের আশ্রয় দিতে একটি ‘তাঁবু শহর’ গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন তুরস্কের উপ প্রধানমন্ত্রী মেহমেট সিমসেক৷ সেখানে প্রায় ৮০ হাজার মানুষের সংকুলান হবে বলে এক টুইটে জানিয়েছেন তিনি৷ তবে কোথায় এই শহরটি গড়া হবে তা তিনি বিস্তারিত জানাননি৷
বানা কোথায়?
সাত বছরের শিশু বানা আলাবেদ তার মায়ের সহায়তায় পূর্ব আলেপ্পো থেকে টুইট করে৷ তার অনুসারীর সংখ্যা পৌনে তিন লাখ ছাড়িয়ে গেছে৷ হামলায় তাদের বাসস্থান ধ্বংস হয়ে গেছে৷ এখন সে ও তার পরিবার গোপনে অবস্থান করছে৷ সেখান থেকেও টুইট করছে বানা৷ সবশেষ মঙ্গলবার একটি টুইট করেছে সে৷ সোমবার করা আরেক টুইটে তার বাবার আহত হওয়ার খবর দিয়েছে বানা৷
জেডএইচ/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স, এপি, ডিপিএ)
মেয়ের ক্যানভাসে যুদ্ধের বিভীষিকা
প্রতিদিন সিরিয়া ছাড়ছে অসখ্য মানুষ৷ আশ্রয় খোঁজা মানুষদের মধ্যে আছে শিশুরা, যারা যুদ্ধের বিভীষিকা নিজের চোখে দেখেছে৷ অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথে যাত্রা করা তেমনই এক মেয়ে ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলেছে যুদ্ধের ভয়াবহতা৷
ছবি: DW/M.Karakoulaki
বাড়িটা যেমন ছিল
সিরিয়ার এক শরণার্থী মেয়ে কলম আর কাগজ বেছে নিয়েছে তার জীবনের গল্প বলতে৷ এই ছবির ক্যাপশনে সে লিখেছে, ‘‘এটা সিরিয়া, মৃত্যু দূত৷ সিরিয়ার রক্ত ঝড়ছে৷’’ মেয়েটির আঁকা ছবিতে দেখা যাচ্ছে ট্যাঙ্ক থেকে একটি শহরের দিকে গোলা ছোড়া হচ্ছে৷ একইসঙ্গে আকাশ পথে চলছে হামলা৷ ফলে বাড়িগুলো আগুনে পুড়ে যাচ্ছে আর একটি কবরের পাশে দাঁড়িয়ে একজন তা দেখছে৷
ছবি: DW/M.Karakoulaki
মৃত্যু এবং হতাশা
‘‘এটা আমার বাবা, মা এবং পরিবারের - এবং সিরিয়ার সকল পরিবারের কবর,’’ মেয়েটা লিখেছে৷ তার কথায়, ‘‘সিরিয়ার শিশুদের অবস্থা এমন৷’’ তার হাতে থাকা ছবিটিতে তিনটি কবর এবং শুয়ে থাকা কয়েকজনকে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: DW/M.Karakoulaki
শিশুরা মারা যাচ্ছে
এখানে এজিয়ান সাগরে ডুবে প্রাণ হারানো আয়লান কুর্দির মরদেহ আঁকার চেষ্টা করেছে মেয়েটি৷ তার মৃত্যু গোটা ইউরোপকে নাড়িয়ে দিয়েছিল৷ সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের কারণে শিশুদের চরম দুর্দশা ফুটে উঠেছিল কুর্দির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে৷
ছবি: DW/M.Karakoulaki
‘এটা সিরিয়ার মানুষের আসল ট্রাজেডি’
যুদ্ধ থেকে বাঁচতে গিয়ে হাজার হাজার মানুষ সমুদ্রে ডুবে মারা গেছে৷ অনেক শিশু হারিয়েছে তাদের অভিভাবক৷ অবৈধ পথে সিরিয়া থেকে ইউরোপের উদ্দেশ্যে যাত্রা খুবই বিপজ্জনক৷
ছবি: DW/M.Karakoulaki
থমকে যাওয়া জীবন
গ্রিসের ইডোমেনি শরণার্থী শিবিরে কিছু শিশু ছিল যারা তাদের অভিভাবকের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হওয়ার আশায় ছিল৷ তাদের বাবা-মা সীমান্ত বন্ধ হওয়ার আগেই ইউরোপে প্রবেশে সক্ষম হয়েছিল৷ কিন্তু বাকিদের আশা ধীরে ধীরে ক্ষীন থেকে ক্ষীনতর হচ্ছে৷ ছবির ক্যাপশন, ‘‘শিশুদের সব আশা, স্বপ্ন এখন ময়লার বাক্সের মধ্যে আছে৷’’
ছবি: DW/M.Karakoulaki
হারানো স্বপ্ন
‘‘শিশুদের ইউরোপে যাওয়ার স্বপ্ন হারিয়ে গেছে-’’ লিখেছে মেয়েটি৷ তার কথায়, শরণার্থী শিবিরে থাকা অনেক শিশু ইউরোপে শান্তিতে থাকার স্বপ্ন দেখেছিল৷ কিন্তু তারা বুঝতে পেরেছে, সেই স্বপ্ন শীঘ্রই বাস্তব হওয়ার আশা নেই৷
ছবি: DW/M.Karakoulaki
‘তাদের বুঝতে হবে যে তারা শিশু’
দশ বছর বয়সি এই শিশুটির মতো আরো অনেক শিশু ইডোমেনি ক্যাম্পে রয়েছে৷ মানবাধিকার সংগঠনগুলো মনে করে, শরণার্থী শিবিরে শিশুদের দিকে আলাদাভাবে খেয়াল রাখা হচ্ছে না৷