আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় চীন-রাশিয়া
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭
একের পর এক ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষা করে পরিস্হিতি ঘোলাটে করে তুলেছে উত্তর কোরিয়া৷ জাতিসংঘে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাষণেও এ বিষয়টি গুরুত্ব পাবে৷ তবে চীন ও রাশিয়া্ মনে করে, বিষয়টির সমাধান হতে হবে আলোচনার ভিত্তিতে৷
বিজ্ঞাপন
উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর জাপান তার উত্তরের দ্বীপ হোক্কাইডোতে মঙ্গলবার একটি অতিরিক্ত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপন করছে৷ জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘‘হোক্কাইডোর দক্ষিণ প্রান্তে গ্রাউন্ড সেফ-ডিফেন্স ফোর্সের বেসে জরুরি অবস্থার প্রস্তুতির অংশ হিসাবে আমরা একটি পিএসি-৩ ইউনিট স্থাপন করছি৷''
এক মাসের কম সময়ের মধ্যে পিয়ংইয়ংয়ের ষষ্ঠ পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো এবং জাপানের উপর দিয়ে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ায় কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়৷ ‘ভবিষ্যতে আবারও জাপানের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হতে পারে বলেও জানিযেছে উত্তর কোরিয়া৷দেশটি জানিয়েছে, জনগণের নিরাপত্তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেবে তারা৷
এদিকে, চীন ও রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রীরা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আগে কোরীয় উপদ্বীপের উত্তেজনা শান্তিপূর্ণভাবে অবসান করার আহবান জানিয়েছেন৷ চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভারভ পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক কর্মসূচির এখনকার অবস্থান সম্পর্কে ‘শান্তিপূর্ণ সমাধান' খোঁজার জন্য সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷
উত্তর কোরিয়ার মিসাইলের বিরুদ্ধে বেলুন যুদ্ধ
উত্তর কোরিয়া একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জবাব দিতে দক্ষিণ কোরিয়ার কিছু কর্মকর্তা অভিনব পন্থা নিয়েছেন৷ বেলুন ওড়ানোর মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ার মানুষদের বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ ঘটানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা৷
ছবি: picture-alliance/Zuma/S. Il Ryu
বাতাসের চেয়ে হালকা
ভারী বিস্ফোরক এবং দূরে আঘাত হানতে সক্ষম এমন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়া উত্তর কোরিয়ার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার কিছু কর্মকর্তা হালকা বেলুনের মাধ্যমে একধরনের অভিনব যুদ্ধ শুরু করেছেন৷
ছবি: picture-alliance/AP/A. Young-joon
বেলুনে কী আছে?
এসব বেলুনে আছে উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন-এর কার্টুন আঁকা পোস্টার৷ এছাড়া ভেতরে গণতন্ত্রের আবেদন জানিয়ে লিফলেট, এ ছাড়া ফ্ল্যাশ ড্রাইভে ভরে দক্ষিণ কোরিয়ার সোপ অপেরা, হলিউডের সিনেমা, ডকুমেন্টারি থাকে৷
ছবি: picture-alliance/Yonhap
বেলুনের বার্তা
দক্ষিণ কোরিয়ার এসব কর্মকর্তা উত্তর কোরিয়াকে এই বার্তা পাঠাতে চান যে, গণতন্ত্র কতটা জরুরি এবং ভালো৷ দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীনের মানুষের জীবন-যাপন কতটা সহজ, এসব বোঝানোর জন্য খাওয়া-দাওয়ার প্যাকেট বেলুনের মধ্যে ভরে দেন তাঁরা৷
ছবি: picture-alliance/Zuma/S. Il Ryu
যুদ্ধের সূচনা
যাঁরা এই কার্যক্রম শুরু করেছেন, তাঁরা বলছেন, কিম জং উন-এর যে ভাবমূর্তি সেখানকার মানুষের মনে আছে, বাইরের পৃথিবীর তথ্যের মাধ্যমে তা প্রভাবিত করা যেতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/AP/A. Young-joon
প্রতি বছর লাখো বেলুন
এই কর্মকর্তারা প্রতি বছর লাখো বেলুন এবং হাজারো ফ্ল্যাশ ড্রাইভ উত্তর কোরিয়ায় পাঠান৷ তাঁদের বদ্ধমূল ধারণা, এই বেলুনগুলো পেলে তা থেকে সেখানকার জনগণ যেসব তথ্য পাবে, তাতে তাদের চিন্তাধারায় পরিবর্তন আসবে৷ তার ফলে তাঁদের দ্বারা যে কোনো কিছু করা সম্ভব৷ এগুলো পাঠানোর জন্য কখনো কখনো তাঁরা চোরের সাহায্য নিয়ে থাকেন৷
ছবি: picture-alliance/Zuma/S. Il Ryu
বেলুন ওড়ানোও বিপজ্জনক
বেলুন ওড়ানোটা একটা খেলা মনে হতে পারে, কিন্তু এ ধরনের ড্রাইভ ও অন্যান্য জিনিস সমৃদ্ধ বেলুনকে উত্তর কোরিয়া মোটেও খেলনা হিসেবে দেখবে না৷ উত্তর কোরিয়ার সরকার এ ধরনের কাজের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রেখেছে৷
ছবি: picture-alliance/AP/A. Young-joon
উত্তর কোরিয়ার বেলুন
উত্তর কোরিয়া যদিও অন্যদের এ ধরনএর বেলুন ওড়ানোয় নাখোশ হতে পারে, কিন্তু নিজেরা এমন লিফলেট বিতরণে ওস্তাদ৷ প্রতি বছর উত্তর কোরিয়া থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় হাজার হাজার লিফলেট ছোড়া হয়৷
ছবি: picture-alliance/AP/A. Young-joon
বেলুনের মাধ্যমে দ্বন্দ্ব
আগে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারও বেলুন এবং লিফলেট নিজের দেশের ভেতরে ছড়াতো৷ কিন্তু বর্তমানে তারা এটা বন্ধ করে দিয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP/L. Jin-man
বেলুনের ফলে কী প্রভাব পড়ে?
বিশ্লেষকরা মনে করেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের ওপর এসবের কোনো প্রভাবই পড়ে না৷ উত্তর কোরিয়ায় গ্রামবাসীরা এই বেলুনগুলো পেলে সেগুলো নিরাপত্তাবাহিনীর কাছে পৌঁছে দেয়৷
ছবি: Picture alliance/dpa/Uncredited/KRT/AP
দক্ষিণ কোরিয়ার আশা
উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে নানা তর্জন-গর্জন সত্ত্বেও দক্ষিণ কোরিয়া আশা ছাড়েনি৷ নতুন রাষ্ট্রপতি মুন জে-ইনকে উদার হিসেবে পরিচিত৷ তাঁর আশা, আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব৷
ছবি: Reuters/Jung Yeon-Je
10 ছবি1 | 10
‘‘কোরীয়ান উপদ্বীপের পারমাণবিক সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়া উচিত'' বলেন ওয়াং৷ একইসাথে যোগ করেন,‘‘এখনকার এই বিপদজনক চক্র ভাঙা খুব জরুরি হয়ে পড়েছে৷'' জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শান্তি আলোচনা পুনর্বহাল করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের ওপরও জোর দেন তিনি৷
এছাড়া, রাশিয়ার মুখপাত্র বলেছেন, এ বিষয়ে রাশিয়ার অবস্থানও ‘পুরোপুরি একরকম'৷ অন্যদিকে, হোয়াইট হাউস আগেই জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ফোন করে বলেছিলেন, দুই নেতা ‘জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তের জোরালো প্রয়োগের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ার উপর সর্বোচ্চ চাপ তৈরি করবেন৷ তবে ট্রাম্প সামরিক অভিযানের সম্ভাবনাও নাকচ করেননি৷