আলোচিত শিক্ষার্থী জাকিকে মুক্তির নির্দেশ মিশরের আদালতের
৭ ডিসেম্বর ২০২১
মিশরে ইটালির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী প্রেটিক জাকিকে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে মিশরের আদালত৷ আদালতের নির্দেশে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ইটালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি৷
বিজ্ঞাপন
মিশরীয় নাগরিক জাকি ইটালির বোলোনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থী৷ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মিশরে আসার পর তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ মিশরীয় খ্রিস্টানদের নিয়ে একটি লেখায় ভুল তথ্য দেয়ার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়৷ এই ঘটনায় ইটালির সরকার সরব হয়ে ওঠে৷ এর আগে ২০১৬ সালে মিশরে ইটালির আরেক শিক্ষার্থীকে হত্যার পর দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছিল৷
জাকির মামলাটি সাময়িক স্থগিত করে তাকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷ তবে ১ ফেব্রুয়ারি মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের কথা রয়েছে৷
জাকিকে মুক্তি দেয়ার নির্দেশে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ইটালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি৷ ইটালির সরকার বিষয়টিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলেও তিনি বিবৃতিতে উল্লেখ করেন৷ জাকি পড়াশোনার পাশাপাশি মিশরের ইআইপিআর নামের একটি মানবাধিকার সংগঠনের গবেষক হিসেবে কাজ করেন৷ গ্রেপ্তারের পর তাকে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি৷ তবে তা অস্বীকার করে আসছে কর্তৃপক্ষ৷
এফএস/এসিবি (রয়টার্স)
মিশরের বিপ্লবের নেতারা কে, কোথায়?
২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি মিশরে বিপ্লব শুরু হয়েছিল৷ ১৭ দিন পর ১১ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারকের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে বিপ্লব শেষ হয়৷ বিপ্লব আয়োজনের নেতারা কে, কোথায় আছেন- তা জানাতে এই ছবিঘর৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ওয়ায়েল গোনিম
পুলিশের নির্যাতনে ব্লগার খালেদ সায়িদের মৃত্যুর প্রতিবাদে ফেসবুকে ‘আমরা সবাই খালেদ সায়িদ’ নামে একটি পাতা খুলেছিলেন তিনি৷ তখন দুবাইয়ে থাকতেন গোনিম৷ সায়িদকে চিনতেন তিনি৷ গোনিমের খোলা ফেসবুক পাতা মিশরে ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি শুরু হওয়া বিপ্লব আয়োজনে ভূমিকা রেখেছিল৷ ৪০ বছর বয়সি গোনিম এখন যুক্তরাষ্ট্রের থাকেন৷ মিশরের বর্তমান অবস্থা নিয়ে অনলাইনে তার লেখা পড়ে এখন তাকে হতাশ ও স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে বলে মনে হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Elfiqi
মহিনুর এল-মাসরি
মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা আইনজীবী এল-মাসরি ব্লগার সায়িদের মৃত্যুতে প্রতিবাদ শুরু করা ব্যক্তিদের মধ্যে একজন৷ ৩৫ বছর বয়সি এল-মাসরি বেশ কয়েকবার জেল খেটেছেন৷ ২০১৯ সালে বন্দিদের রক্ষা করতে সরকারি কৌঁসুলির কার্যালয়ে গেলে তাকে আবার গ্রেপ্তার করা হয়৷ এখনো তিনি জেলে আছেন৷ তার মামলার শুনানি হচ্ছে না৷
ছবি: picture alliance/AA/M. Mahmoud
আলা আবদেল-ফাত্তাহ
বিপ্লবের শুরু থেকেই সক্রিয় ছিলেন তিনি৷ এ কারণে বেশ কয়েকবার জেল খাটতে হয়েছে তাকে৷ পাঁচ বছর কারাগারে থাকার পর ২০১৯ সালের মার্চে মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি৷ তবে এর ছয়মাস পর আবারো তাকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ এখনো তিনি জেলে আছেন৷
ছবি: CC BY-SA 2.5/Common Good
আহমেদ মাহের
২০০৮ সালের ৬ এপ্রিল মিশরের এল-মহাল্লা এল-কুবরা শিল্পনগরীর শ্রমিকরা একটি প্রতিবাদের ডাক দিয়েছিলেন৷ তাদের সমর্থনে ফেসবুকে প্রতিবাদ আয়োজন করেছিলেন মাহেরসহ কয়েকজন৷ এই আন্দোলন ২০১১ সালের আন্দোলন আয়োজনে সহায়তা করেছিল৷ বেশ কয়েকবার জেল খাটা ৪০ বছর বয়সি মাহের ২০১৭ সালে মুক্তি পান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এসরা আবদেল-ফাত্তাহ
বিপ্লব চলাকালীন সরাসরি সম্প্রচার করার কারণে তিনি ‘ফেসবুক গার্ল’ নামে পরিচিতি পেয়েছিলেন৷ ২০১১ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্যও তিনি মনোনীত হয়েছিলেন৷ তাকে বেশ কয়েকবার আটক করা হয়েছে৷ সবশেষ ২০১৯ সালের অক্টোবরে তাকে আটক করা হয়৷ এখনও তিনি কারাগারে আছেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/K. Desouki
আহমেদ দুমা
মিশরের প্রতিটি সরকারের আমলে তিনি আটক হয়েছেন৷ ২০১১ বিপ্লবের শুরুর প্রতিবাদকারীদের মধ্যে দুমা একজন৷ সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগ করার দায়ে ২০১৯ সালে তাকে ১৫ বছরের জেল দেয়া হয়৷ এছাড়া দুই কোটি ৮৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে৷ ৩২ বছর বয়সি দুমা এখনও কারাগারে আছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আসমা মাহফুজ
২৫ জানুয়ারির প্রতিবাদের সপ্তাহখানেক আদে সবাইকে বিক্ষোভে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন তিনি৷ তার এই ভিডিও অনেককে প্রতিবাদে অংশ নিয়ে উৎসাহ দেয়৷ মাহফুজকে কখনও গ্রেপ্তার করা না হলেও মিশরের বাইরে ভ্রমণ করার বিষয়ে তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা আছে৷ ৩৫ বছর বয়সি এই একক মা এখন তার দুই সন্তান লালনপালন নিয়ে ব্যস্ত আছেন৷ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে আছেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মোহাম্মদ আল বারাদেই
৭৮ বছর বয়সি এই কূটনীতিক পেশাজীবনের বেশিরভাগ সময়ই দেশের বাইরে কাটিয়েছেন৷ তবে ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি বিপ্লব শুরুর দুইদিন পর তিনি দেশে ফিরেছিলেন৷ ২০১৩ সালে তিনি অন্তর্বতী ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পেয়েছিলেন৷ তবে একমাস পর ৫০০-র বেশি মুরসি সমর্থককে হত্যার ঘটনায় পদত্যাগ করেন৷ এরপর তিনি অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় চলে যান৷ এখন তিনি সেখানেই আছেন৷